মাথার অন্যতম সৌন্দর্য হলো চুল। কিন্তু সেই চুল নিয়ে তো আমাদের কতো সমস্যা। চুল পড়ে যাচ্ছে, টাক হয়ে যাচ্ছি, এইসব অহরহ শোনা যায় প্রায় সবার মুখেই। অনেকে এই সমস্যা নিয়ে মুষড়ে পড়ছেন। আর চুল পড়া কমাতে তো এটা ওটা ট্রাই করতেই থাকেন। কিন্তু চুল পড়া কমছেই বা কই?? অন্যদিকে, চুল পড়ে গিয়ে মাথা প্রায় খালি হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই সমস্যার সমাধান আছে একটি হেয়ার রেমেডিতেই। এটি চুল পড়া তো কমাবেই। ঝরে যাওয়া চুলও গজাবে।
যা যা লাগবে-
(১) ১ টি পেঁয়াজ
পেঁয়াজে রয়েছে সালফার, যা চুলের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি মাথার ত্বকে ব্লাড সার্কুলেশন বাড়ায়, চুলের গ্রন্থিকোষে পুষ্টি যোগায়। এছাড়াও এতে অ্যান্টি ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান রয়েছে, যা মাথার ত্বকের ইনফেকশন এবং ফাংগাস দূর করে। পেঁয়াজ চুলের গ্রোথ বাড়াতে এবং নতুন চুল গজাতে খুবই সাহায্য করে। এটি আমি নিজেই প্রমান পেয়েছি।
(২) ৪ টি কালো গোলমরিচ
গোলমরিচে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ, সি এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। তবে গোলমরিচ খুব কম পরিমানেই ব্যবহার করা উচিত।
(৩) ১ টি বড় সাইজের গোলাপ ফুল
যে গোলাপগুলো দিয়ে গোলাপজল বানানো যায় সেই ধরনের লাল গোলাপ ব্যবহার করতে হবে। যাতে হালকা মিষ্টি সুগন্ধ রয়েছে। গোলাপ ফুল পেঁয়াজের রসের গন্ধ ঢাকতে সাহায্য করবে। এছাড়াও গোলাপের পাপড়ি হেয়ার গ্রোথ বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।
যেভাবে তৈরি করবেন -
প্রথমে ৪ টি কালো গোলমরিচের দানা নিয়ে ১ টেবিল চামচ পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে পেঁয়াজটিকে ছোট ছোট ভাগে কেটে নিতে হবে। এবার একটি ব্লেন্ডারে কাটা পেঁয়াজ , কালো গোলমরিচ (পানিসহ), গোলাপের পাপড়ি একসাথে নিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে একটি মসৃন পেস্ট তৈরি হবে। আপনি চাইলে এই পেস্ট সরাসরি মাথায় লাগাতে পারেন। তবে ধোয়ার সময় ঝামেলা এড়াতে চাইলে, একটি ছাকনীতে পেস্টটুকু নিয়ে এর জুসটা ছেঁকে বের করে নিন।
ব্যবহার বিধি
- চুলগুলো ভালোভাবে ব্রাশ করে নিন। এবার সেই জুসে একটি কটন বল ডুবিয়ে নিন এবং অতিরিক্ত জুসটুকু চেপে বের করে নিন। মাথায় সিথি কেটে কেটে কটন বলের সাহায্যে মাথার স্কাল্পে জুসটা লাগান। পুরো মাথার ত্বকে ব্যবহার করবেন এভাবে।
- পুরো স্কাল্পে জুসটা ব্যবহার করা হয়ে গেলে, হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে আস্তে আস্তে মাথার স্কাল্প ম্যাসাজ করুন অন্তত ৫ মিনিট।
- এরপর ১ ঘন্টা রেখে দিন। ১ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। শ্যাম্পুর ক্ষেত্রে একটি অবশ্যই মাইল্ড শ্যাম্পু (সালফেট বিহীন শ্যাম্পু) ব্যবহার করবেন। সালফেটযুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করলে চুল পড়া কখনই কমবে না।
- সপ্তাহে অন্তত ২ দিন এই জুসটি ব্যবহার করতে হবে কয়েক মাস ধরে।
অবশ্যই ধৈর্য ধরতে হবে। ২-৩ দিন ব্যবহার করে দেখলেন চুল উঠছে না, তো ব্যবহার বন্ধ করে দিলেন। তাহলে হবে না। ন্যাচারাল রেমেডিগুলো একটু সময় নেয় কাজ করতে। তাই ধৈর্য রাখতে হবে এবং ব্যবহার করে যেতে হবে। ১ -২ মাসেই দেখবেন মাথায় নতুন চুল উঁকিঝুঁকি মারছে।
এই তো জেনে নিলেন চুল পড়া এবং নতুন চুল গজানোর উপায়। আশা করি ধৈর্য ধরে ব্যবহার করবেন এবং অবশ্যই ফল পাবেন। এটা আমার ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করেছে। দেড় মাসেই আমি নতুন চুলের মুখ দেখতে পেয়েছি। আশা করছি আপনাদের অনেক সাহায্য হবে।
ছবি – অলরেমেডিজ ডট কম
লিখেছেন – জান্নাতুল মৌ