টানা টানা সুন্দর চোখ কে না চায়। আর চোখ দুটিকে টানা টানা আর সুন্দর করে তুলতে আইলাইনারের জুড়ি নেই।সবসময় মেকাপ নিয়ে বাইরে যাওয়ার সময়টুকু ম্যানেজ করতে না পারলে চোখে একটু লাইনার বুলিয়ে নিলেই কিন্তু যথেষ্ট । বাজারে তো হরেক রকমেরই আইলাইনার পাওয়া যায়। দিন যত গড়াচ্ছে আইলাইনারের ব্যবহার এবং ধরনেও আসছে ভিন্নতা। চলুন জেনে নেয়া যাক, আইলাইনারের রকমভেদ, তাদের ব্যবহার।
- লিকুইড আইলাইনার
লিকুইড আইলাইনার সবার কাছেই অনেক পরিচিত। এই আইলাইনারগুলো তরল ধরনের হয়ে থাকে। ছোট টিউব বা বোতলে পাওয়া যায়। এর সাথে দেয়া থাকে একটি ব্রাশ। যার সাহায্যে আইলাইনার চোখের পাতায় ব্যবহার করা হয়। লিকুইড আইলাইনার বিভিন্ন শেড এ পাওয়া যায়। কিছু লিকুইড আই লাইনারের নাম – রেভলন কালার স্টে স্কিনি লিকুইড লাইনার, জ্যাকলিন লিকুইড আইলাইনার, ব্ল্যাক রিমেল গ্ল্যাম আইস লিকুইড আইলাইনার, গোল্ডেন রোজ লিকুইড আইলাইনার।
- পেন আইলাইনার
পেন আইলাইনারগুলো দেখতে পেন/কলমের মতই। এই ধরনের আইলাইনারগুলো ব্যবহার করা খুবই সহজ। অনেকেই আছে যারা ঠিকমতো আইলাইনার দিতে পারে না, আইলাইনার দিতে গেলে হাত কাপে, আইলাইনারে একদম নতুন। তাদের জন্য পেন লাইনার সবথেকে সহজ উপায়। এই লাইনারগুলোও লিকুইড টাইপ হয়। কিছু পেন আই লাইনারের নাম – রেডিয়েন্স ফাইন লাইন লিকুইড লাইনার পেন , ফ্লোরমার পেন আইলাইনার, Lasplash আর্ট কি টিক লাইনার, কালেকশন পেন আইলাইনার।
- পেন্সিল আইলাইনার
এ ধরনের আই লাইনার দেখতে পেন্সিলের মত হয়ে থাকে। বিভিন্ন শেড এ পাওয়া যায় এগুলো। পেন্সিল লাইনার সাধারণত চোখের উপরের পাতায় এবং নিচে ব্যবহার করা যায়। পেন্সিল লাইনার সহজেই স্মাজ করা যায়। তাই স্মোকি আই মেকাপেও এটি ব্যবহার করা হয়।। এগুলো মোটামুটি ধরনের ক্রিমি হয়ে থাকে।এগুলোও ব্যবহার করা খুব সহজ।পেন্সিল লাইনার প্রত্যেক বার ব্যবহারের আগে শার্প করে নিতে হয়। যাতে সুন্দর ভাবে চোখে ব্যবহার করা যায়। কিছু পেন্সিল আই লাইনারের নাম — আরবান ডি কে 24/7 গ্লাইড অন আই পেন্সিল, মেকাপ ফর এভার এক্সট্রা লং লাস্টিং আই পেন্সিল।
- জেল আইলাইনার
বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো জেল আইলাইনার। এ আইলাইনার গুলো ছোট পট এ পাওয়া যায়। এগুলো ব্যবহার করার জন্য আলাদা লাইনার ব্রাশ দরকার হয়। এগুলো খুবই ক্রিমি এবং থিক ধরনের হয়ে থাকে। জেল লাইনার খুবই লং লাস্টিং হয়। আইলাইনার ব্রাশের সাহায্যে জেল লাইনার খুবই সহজ ও সুন্দরভাবে চোখে ব্যবহার করা যায়। কিছু জেল লাইনারের নাম – মেইবিলিন জেল লাইনার, কালেকশন জেল লাইনার, ই.এল.এফ. ক্রিম লাইনার, ইনলট জেল লাইনার।
- গ্লিটার আইলাইনার
গর্জিয়াস আই মেকাপে গ্লিটার আই লাইনারের জুড়ি নেই। এ লাইনার গুলো গ্লিটারি হয়ে থাকে এবং বিভিন্ন শেড এ পাওয়া যায়। চোখের বিভিন্ন স্থানে এই গ্লিটার আইলাইনার ব্যবহার করে চোখের মেকাপকে আরো আকর্ষনীয় করে তোলা যায়। কিছু গ্লিটার আইলাইনারের নাম — Laspash গ্লিটার আইলাইনার, আরবান ডি কে গ্লিটার আইলাইনার।
আইলাইনার এর খুঁটিনাটি কিছু টিপস
(১) যারা আইলাইনারে একদম নতুন তারা ব্যবহার করুন পেন আইলাইনার। এতে আপনার আইলাইনার দেয়া অনেক সহজ হয়ে যাবে।
(২) লিকুইড আইলাইনার দিতে গিয়ে যাদের হাত কাপার অভ্যাস আছে, তারা প্রথমে পেন্সিল লাইনার দিয়ে চোখে লাইন একে নিন। এরপর তার উপরে ব্যবহার করুন লিকুইড আইলাইনার।
(৩) যারা দিনের বেলা ন্যাচারাল আই লুক চান, তারা ব্যবহার করুন ব্রাউন কালার আইলাইনার। এছাড়া ব্লাক আইলাইনার পেন্সিল এবং একটু ব্লাক আইশ্যাডো দিয়ে স্মাজ করেও নিতে পারেন।এতে দেখতে অনেক ন্যাচারাল লাগবে।
(৪) অনেক সময় জেল আই লাইনার তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। জেল আইলাইনার আগের মতো ক্রিমি করে তুলতে, জেল আইলাইনারের পটের মুখ খুলে এটি হেয়ার ড্রাইয়ারের গরম বাতাসের সামনে ধরুন কিছুক্ষন। দেখবেন, জেল আইলাইনার আগের মতো হয়ে গেছে।
(৫) আই লাইনার দিতে গিয়ে অনেক সময় ছড়িয়ে যায়। এটি ঠিক করতে একটি ছোট ব্রাশে কনসিলার নিন। যেখানে আইলাইনার ছড়িয়ে গেছে সেখানে কনসিলার লাগিয়ে ঠিক করে নিন।
(৬) অনেকে আই মেকাপে চোখের পাতায় লুজ গ্লিটার ব্যবহার করে। কিন্তু লুজ গ্লিটার ব্যবহার করা একটু ঝামেলার বটে। তাই এক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন গ্লিটার আইলাইনার। পুরো চোখের পাতায় ব্যবহার করতে পারবেন।এতে লুজ গ্লিটারের মতই ইফেক্ট পাবেন এবং ঝামেলাও পোহাতে হলো না।
(৭) জেল আইলাইনার খুবই লং লাস্টিং।এগুলো তুলে ফেলা একটু কঠিন। তাই জেল আইলাইনার তুলে ফেলার জন্য ব্যবহার করুন আই মেকাপ রিমুভার।
এই তো জেনে নিলেন আইলাইনার এর রকমভেদ। আশা করছি এবারে আপনারা আপনাদের প্রয়োজন ও পছন্দমত কিনে নিতে পারবেন আইলাইনার। আর আপনার চোখ জোড়া করে তুলতে পারবেন আরো সুন্দর ও মোহনীয়।
ছবি- স্টাইলক্রেজ.কম
লিখেছেন – জান্নাতুল মৌ