অফিসের কম্পিউটারে একটানা তাকিয়ে থাকতে থাকতে মাথা ধরে গেছে? চোখ সরালেই এক টুকরা সবুজ। মনিটরের পাশেই রাখা ছোট্ট একটা গাছ। তবে শুধু অফিস কেন আমরা যারা কলেজ কিংবা ভার্সিটিতে তে পড়ি তারাও সারাক্ষন ল্যাপটপ নিয়ে পরে থাকি। কিন্তু একবার কি এর সাইড ইফেক্ট এর কথা চিন্তা করি? এবার চিন্তা করেও লাভ কি? বিভিন্ন কারনে আমাদের এর সাথে থাকতেই হয় সাইড ইফেক্ট আছে বলে কি কম্পিউটার ব্যবহার বাদ দিব? না বাদ দিব না বরং একটু সচেতন তো হতেই পারি।
কম্পিউটার ব্যবহারের ফলে আমাদের চোখের যে সমস্যা গুলো হয় তা হল ,
- মাথা ব্যাথা- অনেক সময় ধরে কম্পিউটার এ কাজ করার পর মাথা ব্যাথা অনুভূত হয় এ জন্য অনেক সময় আমাদের ঘুম আসে না। কেমন যেন একটা অসস্থি মনে হয়। আমরা যখন ল্যাপটপ বা কম্পিউটার এ কাজ করি তখন খুব কাছ থেকে মনিটর দেখি। যার ফলে কম্পিউটার থেকে যে ক্ষতিকর রশ্মি নির্গত হয় তা আমাদের চোখের উপর খুব বাজে প্রভাব ফেলে। ফলে আমাদের মাথা ব্যাথা অনুভুত হয়।
- ড্রাই আই- আমরা সাধারণত কিছুক্ষন পরপর আমাদের চোখের পাতা ফেলি। প্রায় কয়েক সেকেন্ড পরপর। কিন্তু আমরা যখন কম্পিউটার এ কাজ করি তখন অনেক সময় পর চোখের পাতা ফেলি। এর ফলে আমাদের চোখের ভেতর যে ন্যাচারাল পানি থাকে তা শুকিয়ে যায়। এর ফলে চোখ জ্বালা করা বা চুলকান এ ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।
- দৃষ্টি শক্তি ধিরে ধিরে কমে যাওয়া- আমরা বেশির ভাগ সময় কম্পিউটার এর ব্রাইটনেস অনেক বেশি দিয়ে কাজ করি। আর সাদা আলো চোখের জন্য খুব একটা ভাল না। অনেক সময় আমরা রাতে লাইট অফ করে কম্পিউটার এ বসে কাজ করি যা আমাদের চোখের জন্য খুবি ক্ষতিকর।
চলুন এবার এসব সমস্যা মাথায় রেখে কিভাবে কম্পিউটার টেবিল টি সাজাব তা জেনে নিই।
• কেমন হবে যদি মনিটরের পাশেই রাখি ছোট একটা গাছ। এটি আপনার চোখে প্রশান্তি এনে দিতে পারে। কাজের ফাকে অথবা চোখে ক্লান্তি এলে গাছটির দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকুন ফ্রেশ লাগবে। সবুজ রঙ চোখের দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখে। এবার দেখি কি ধরনের গাছ কম্পিউটার টেবিলে রাখা যায়।
• যেকোনো গাছই অফিসে বা বাসায় রাখা যায় না। এর যত্নআত্তিও কিছুটা ভিন্ন। বেশির ভাগ অফিস বা বাসা শীতাতপনিয়ন্ত্রিত থাকে। প্রাকৃতিক আলো-হাওয়াও প্রবেশ করে না তেমন। এ রকম পরিবেশে আকারে ছোট, কিছুটা লতানো আর দেখতে বাহারি—এ রকম গাছগুলোই সাধারণত অফিসে বা বাসায় রাখা হয়। এ ধরনের কিছু গাছ হলো হার্টলিফ , ফিলোডেনড্রন, পিস লিলি, লাকি ব্যাম্বু, অ্যারেকা পাম, পেপেরোমিয়া, অ্যান্থুরিয়াম ইত্যাদি। এ ছাড়া নানা রকম ক্যাকটাসও রাখা হয়। বনসাইও এখন বেশ জনপ্রিয়।
• হার্ট লিফ- মানি প্লান্ট জাতীয় এটি এক ধরনের লতানো উদ্ভিদ। আকারে ছোট বলে টেবিলের কোনায় এটি বেশ মানানসই।
• পিস লিলি
গ্রীষ্মের শুরুতে ফুল ফোটে এবং এক সপ্তাহ থাকে। ফুল বিবর্ণ হয়ে এলে বৃন্তসহ ফুল কেটে ফেলতে হয়। যদি ফুল না ফোটে, তবে কিছুটা উজ্জ্বল আলোতে নেওয়া যেতে পারে, কিন্তু সরাসরি সূর্যালোকে নয়। পাতা চকচকে উজ্জ্বল সবুজ। গাছটি কিছুটা বিষাক্ত, তাই ফুল বা পাতা ছাঁটাইয়ের পর ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।
• লাকি ব্যাম্বু
অনেকের ধারণা, লাকি ব্যাম্বু সৌভাগ্য আনে, তাই এমন নাম। এর জন্য মাটি খোঁজার প্রয়োজন নেই। পানিভর্তি পাত্র বা বোতল হলেই হলো। এবার পাত্রে বা বোতলে গাছটা দাঁড় করিয়ে রাখতে পানিতে নুড়িপাথর ঢালুন। নুড়িপাথর পাবেন অ্যাকুরিয়াম বিক্রির দোকানে, কেজিপ্রতি ২০ টাকা। নতুন চারা দরকার? মাতৃ গাছের বাড়তি কাণ্ড কেটে পানিতে রাখুন। সপ্তাহ না যেতেই শিকড় গজাবে তাতে।
• অ্যারেকা পাম-
ডেস্ক, টেবিল, স্তম্ভের পাশে ও সিঁড়ির গোড়ায় দারুণ মানায় অ্যারেকা পাম। আকারে প্রায় সাত ফুট লম্বা হয়, তবে গাছের আকার ছোট রাখতে চাইলে শুধু টবের আকারটা ছোট হলেই চলবে। সপ্তাহে একবার পানি দিলেই যথেষ্ট।
• পেপেরোমিয়া-
পেপেরোমিয়ার পাতা বেশ উজ্জ্বল। পাতার বেগুনি, সবুজ, লাল রঙের কিনারা, তরমুজের মতো ডোরাকাটা দাগ আর ঢেউখেলানো আকার দেখতে ভালো লাগে।
• অ্যান্থুরিয়াম-
সাদা, লাল, কমলা, গোলাপি বা বেগুনি রঙের ফুল উপহার দেবে অ্যান্থুরিয়াম। অতি শুষ্ক বা অতি আর্দ্র কোনোটাই এর পছন্দ নয়—চাই এ দুয়ের মাঝামাঝি।
• ক্যাকটাস-
ক্যাকটাসে খুব বেশি পানি দিলে এর গোড়া পচে যায়। সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন সামান্য পরিমাণ পানি গাছের গোড়ায় দিয়ে দিন। লক্ষ্য রাখুন পানি জমে না থাকে।
• বন্সাই-
টেবিলের কোনে এরকম একটি বনসাই হলে কিন্তু খুব সুন্দর হয়। এমব হাজার রকমের বনসাই বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।
লিখেছেন – পাপিয়া সুলতানা।