বর্তমানে খুবই জনপ্রিয় স্কিন কেয়ার ইনগ্রেডিয়েন্টগুলোর মধ্যে রেটিনল একটি। বলা হয়ে থাকে, রেটিনল হলো অ্যান্টি এজিং স্কিন কেয়ারের হিরো। তাই যারা এজিং সাইনস নিয়ন্ত্রণ করতে স্কিন কেয়ার শুরু করেছেন, তারা হয়তো অনেকেই স্কিন কেয়ার রুটিনে এটি অ্যাড করেছেন। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, রেটিনল ব্যবহার করার পরেও সেভাবে বেনিফিট পাওয়া যাচ্ছে না, বরং মনে হচ্ছে ত্বকের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আপনার সাথেও যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে আজকের ফিচারটি আপনার জন্য। কারণ আজকে জানাবো এত কার্যকরী হওয়া সত্ত্বেও রেটিনল কেন আপনার ত্বকে কাজ করতে পারেনা সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
ত্বকের যত্নে রেটিনল
রেটিনল হচ্ছে ভিটামিন এ এর ডেরিভেটিভস। সকল রেটিনল ও রেটিনয়েডসই ভিটামিন এ থেকে পাওয়া যায়। এটি খুবই পরিচিত একটি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট। ত্বকের সেল টার্ন ওভার বৃদ্ধি, ত্বকের সেল রিনিউ করে ত্বকের ফাইন লাইনস, রিংকেল ইত্যাদি দূর করতে রেটিনল কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এর পাশাপাশি এটি ত্বকের একনে কমাতে সাহায্য করে, ব্রণের দাগ হালকা করে, এমনকি সান বার্ন ও মেছতার দাগও হালকা করে।
রেটিনল ব্যবহার করে কেন উপকার হচ্ছে না?
ত্বকের যত্নে রেটিনল ব্যবহার করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেকেই এখন এটি স্কিন কেয়ার রুটিনে এটি যুক্ত করছেন। কিন্তু কিছু ভুলের জন্য রেটিনল আপনার ত্বকে সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে। আসুন এবার জেনে নেই সেই ভুলগুলো সম্পর্কে।
বয়স ও ত্বকের সমস্যা বিবেচনা না করা
রেটিনলযুক্ত প্রোডাক্ট ত্বকে মানানসই হবে কিনা এবং সঠিকভাবে কাজ করবে কিনা তার অনেকটাই নির্ভর করে বয়স ও ত্বকের সমস্যার উপর। রেটিনল যেহেতু বয়সের ছাপ দূর করতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে, তাই টিনএইজে রেটিনল ব্যবহার করলে তা ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বরং যাদের ত্বকে এজিং সাইন রয়েছেন, একনে কিংবা হাইপারপিগমেন্টেশন এর সমস্যা আছে, তারা রেটিনল ব্যবহার করে ভালো ফলাফল পেতে পারেন। যদি এগুলো বাদে ত্বকের অন্য কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে রেটিনল আপনার ক্ষেত্রে কাজ নাও করতে পারে।
ধারাবাহিকতার অভাব
ধারাবাহিকতা বা কনসিসটেন্সিকে বলা হয়ে থাকে যেকোনো ত্বকের পরিচর্যার অন্যতম চাবিকাঠি। যেকোনো স্কিন কেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে এবং ফলাফলের জন্য ধৈর্য রাখতে হবে। রেটিনল ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেমন এক রাতের মধ্যে ত্বকের আমূল পরিবর্তন আশা করলেও হবেনা, তেমনি নিয়ম মেনে সময়মতো ব্যবহার না করলেও কোনো লাভ হবে না।
অতিরিক্ত সান এক্সপোজার
ত্বকের যত্নে সানস্ক্রিনের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি দিনের বেলা সানস্ক্রিন ব্যবহার না করা হয়, অন্য কোনো প্রোডাক্টই সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনা। যেহেতু রেটিনল একটি শক্তিশালী অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট, তাই এটি স্কিনকে সান সেনসিটিভ করে তোলে। যদি আপনারা স্কিন কেয়ার রুটিনে রেটিনল অ্যাড করে সানস্ক্রিন ইউজ না করেন, তাহলে রেটিনলের বেনিফিট তো পাবেন ই না, উল্টো ত্বক আরো ইরিটেটেড হয়ে যাবে। তাই সঠিক পরিমাণে সানস্ক্রিন ব্যবহার ও রিঅ্যাপ্লাইয়ে সচেতন হোন। ডে টাইমে নূন্যতম ৩০ এসপিএফ যুক্ত সান্সক্রিন ব্যবহার করুন এবং পুরো ফেইসে দুই আংগুল পরিমাণ ইউজ করুন। সেই সাথে ৩ ঘণ্টা পরপর সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই করতে ভুলবেন না।
সংবেদনশীল ত্বকে রেটিনল ব্যবহার করা
ত্বকের বর্তমান অবস্থা বুঝে তারপরই রেটিনল রুটিনে যুক্ত করতে হবে। যাদের ত্বক অত্যন্ত সেনসিটিভ কিংবা ত্বকে একজিমা, সোরিয়াসিস, Rosacea (রোজেশিয়া) ইত্যাদি সমস্যা রয়েছে, তাদেরকে রেটিনল ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ সংবেদনশীল ত্বকে রেটিনল ব্যবহার ত্বকের অবস্থা আরো বিপজ্জনক করে তুলতে পারে। তাই আগে নিজের ত্বকের অবস্থা বুঝুন, তারপরই রেটিনল যুক্ত করুন। একজন ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন এবং সে অনুযায়ী রেটিনল বা এর ডেরিভেটিভসগুলো স্কিন কেয়ার রুটিনে অ্যাড করুন।
রেটিনলের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার
প্রতিটি জিনিস ব্যবহারেরই একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করলে রেটিনল ত্বকে খুব ভালো কাজ করে। কিন্তু অনেকেই আছেন যারা রেটিনল অতিমাত্রায় ব্যবহার করে ফেলেন। এতে ত্বকে সেনসিটিভিটি, ইরিটেশন, এলার্জি ইত্যাদি আরো অনেক রকম সমস্যা দেখা দেয়। তাই রেটিনলের কার্যকারিতা পেতে চাইলে অতিমাত্রায় ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো না করা
ত্বক ভালো রাখতে রেটিনল খুব ভাল কাজ করে ঠিকই, কিন্তু তার মানে এই নয় যে স্কিন কেয়ারের বেসিক রুটিন ফলো করার কোনো প্রয়োজন নেই। অবশ্যই একটি ভালো মানের ক্লেনজার, ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন ইউজ করবেন। তাহলেই রেটিনল ব্যবহারের আসল বেনিফিট পাবেন।
আশা করছি এখন বুঝতে পারছেন কোন ভুলগুলোর কারণে রেটিনল বা এর ডেরিভেটিভসগুলো এত কার্যকরী হওয়া সত্ত্বেও ত্বকে ভালো ফলাফল দিতে পারে না। এই ভুলগুলো এড়িয়ে চললেই দেখবেন রেটিনল ব্যবহার করে হেলদি লুকিং স্কিন পেতে পারবেন। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।
ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক
The post রেটিনল ব্যবহার করেও কেন সুফল পাচ্ছি না? appeared first on Shajgoj.