পারফেক্টভাবে মেকআপ অ্যাপ্লিকেশনের জন্য সঠিক টুলটি কিন্তু খুবই জরুরি। তা না হলে মেকআপ দেখতে কেকি লাগতে পারে, ভেসে থাকতে পারে। সব থেকে বড় কথা অ্যাপ্লিকেশনটা ফ্ললেস হয় না। আর মেকআপ টুলসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মেকআপ স্পঞ্জ। মেকআপ স্পঞ্জ সঠিকভাবে ব্যবহার করা টাও কিন্তু জরুরি। সঠিক নিয়মে ব্যবহার না করলে যত ভালো মানের স্পঞ্জই হোক না কেন, মেকআপ সুন্দর হবে না।
মার্কেটে বিভিন্ন শেইপের মেকআপ স্পঞ্জ পাওয়া যায়। এগুলোর কাজও বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তাই শেইপ এবং কাজ বুঝে স্পঞ্জ কেনাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। ওহহ হ্যা!! আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ক্লিনিং। মেকআপ টুলস ক্লিন না করার ফলে তার ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আর্টিকেল লেখার পরে অনেকেই জানতে চেয়েছেন কিভাবে মেকআপ স্পঞ্জ ক্লিন করতে হবে।ওকে, তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই, কিভাবে মেকআপ স্পঞ্জ ব্যবহার করবেন এবং পরিষ্কার রাখবেন!
মেকআপ স্পঞ্জের শেইপ, ধরন এবং কাজ
১. বিউটি ব্লেন্ডার
মেকআপের জগতে বিউটি ব্লেন্ডার একটি বেশ পরিচিত নাম। কম বেশী সবাই এটাকে চিনি। এটার বিভিন্ন শেইপ থাকতে পারে। মূলত, বিউটি ব্লেন্ডার দিয়ে ফাউন্ডেশন, কনসিলার বা ক্রিম প্রোডাক্টস ব্লেন্ড করা হয়।
২. ট্রায়েংগেল মেকআপ স্পঞ্জ
এই স্পঞ্জগুলো ট্রায়েংগেল বা ত্রিভুজ শেইপের হয়ে থাকে। এই স্পঞ্জ দিয়ে চোখের নিচে, নাকের পাশে কনসিলার সুন্দরভাবে ব্লেন্ড করা যায়। বিউটি ব্লেন্ডার ফেইসের যে সকল স্মল জায়গাগুলোতে পৌছাতে পারে না, ট্রায়েংগেল স্পঞ্জগুলো সহজেই সেখানে পৌছাতে পারে এর শার্প কর্ণারগুলোর কারণে। এ ছাড়া ট্রায়েংগেল স্পঞ্জ দিয়ে চোখের নিচে বেকিং-এর জন্য পাউডার অ্যাপ্লাই করা খুবই ইজি।
৩. সিলিকন স্পঞ্জ
এই ধরনের সিলিকন স্পঞ্জ মূলত ফাউন্ডেশন বা ক্রিমি প্রোডাক্ট ব্লেন্ড করার কাজে ব্যবহৃত হয়।
৪. মাইক্রো মিনি বিউটি ব্লেন্ডার
এটা বিউটি ব্লেন্ডারের একদম ছোট ভার্সন। এটা ব্যবহার করা হয় ফেইসের ছোট ছোট স্পেসগুলোতে। যেখানে বড় বিউটি ব্লেন্ডার সহজে ভালোমতো ব্লেন্ড করতে পারে না। বিশেষ করে চোখের নিচের কন্সিলার ব্লেন্ড করতে এটি ব্যবহার করা হয়।
৫. পাউডার পাফ
পাউডার পাফতো সবাই চিনেন। নতুন করে বলার কিছু নেই। এটাও এক ধরনের মেকআপ টুল। যেটার সাহায্যে মুখে পাউডার অ্যাপ্লাই করা হয়।
মেকআপ স্পঞ্জের ব্যবহার
১. ক্রিম প্রোডাক্ট ব্যবহার
ক্রিম প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে চাইলে, প্রথমে আপনার মেকআপ স্পঞ্জটি পানিতে ভালোভাবে ভিজিয়ে নিন। বিউটি ব্লেন্ডার হলে পানিতে ভেজানোর পরে এটি ফুলে ডাবল সাইজ হয়ে যাবে। ভালো মানের বিউটি ব্লেন্ডার চেনার এই একটি ট্রিক। এরপর, বিউটি ব্লেন্ডার থেকে ভালোভাবে অতিরিক্ত পানিটুকু চিপে নিন। মনে রাখবেন, ব্লেন্ডারটি যেন ওয়েট না থাকে। এমনভাবে পানি চিপে নিন যেন বিউটি ব্লেন্ডারটি ড্যাম্প থাকে। কারণ, বিউটি ব্লেন্ডারের ভেতরে অতিরিক্ত পানি থাকলে ব্লেন্ডিং ভালো হবে না।
২. ফাউন্ডেশন ব্যবহার
এবার ফেইসে ক্রিম প্রোডাক্ট যেমন, ফাউন্ডেশন ডট ডট করে লাগিয়ে নিন। এবার বিউটি ব্লেন্ডার নিয়ে ড্যাবিং মোশনে ব্লেন্ড করতে থাকুন। কোনো ঘষাঘষি বা ড্রাগ করতে যাবেন না। এতে করে অ্যাপ্লিকেশনটা ভালো হবে না। ফাউন্ডেশন সরে সরে যাবে। তাই জাস্ট চেপে চেপে ব্লেন্ড করতে থাকুন। তবে আরেকটা কথা, ভুলেও খুব বেশী প্রেশার দিয়ে ব্লেন্ড করবেন না। এমন হালকাভাবে প্রেস করবেন যেন, বিউটি ব্লেন্ডারটি আপনার স্কিনে বাউন্স করে। এভাবে ধৈর্য নিয়ে পুরো মুখের ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করে নিন। অন্যান্য ক্রিম প্রোডাক্টস যেমন- কনসিলার, ক্রিম ব্লাশ, ক্রিম কনট্যুর, ক্রিম হাইলাইটার ইত্যাদিও একইভাবেই ব্লেন্ড করবেন।
৩. পাউডার আপ্লিকেশন
মেকআপ লং লাস্টিং করার জন্য আমরা বেকিং করে থাকি। তবে যে ভুলটা করি তা হলো, ভেজা স্পঞ্জ দিয়ে পাউডারটা নিয়ে অ্যাপ্লাই করি। এতে করে হয় কি, পাউডার অ্যাপ্লিকেশন-এর সময় স্পঞ্জ ভেজা থাকার ফলে পাউডারগুলো জমাট বেঁধে যায়। এবং পরবর্তীতে তা স্কিনে সেটা প্যাচি (patchy) দেখা যায়। তাই সবসময় পাউডার আপ্লাই করার বেলায় ড্রাই স্পঞ্জ ব্যবহার করবেন।
মেকআপ স্পঞ্জ পরিষ্কারের পদ্ধতি
১) প্রথমে মেকআপ স্পঞ্জটি পানিতে ভালোভাবে ভিজিয়ে নিন। চাইলে হালকা গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। এবার কয়েক ফোটা ব্রাশ ক্লিনার বা বেবী শ্যাম্পু স্পঞ্জটির উপরে ঢেলে নিন। চাইলে হ্যান্ড ওয়াশও ব্যবহার করতে পারেন।
২) এবার হালকা হাতে ঘষতে থাকুন এবং ফেনা তুলে নিন। এবার পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। আমি ২ বার এভাবে করে থাকি। পুরোপুরিভাবে পরিষ্কার করার জন্য।
৩) অনেক সময় মেকআপ স্পঞ্জের দাগ উঠতেই চায় না। তখন, স্পঞ্জটি ভেজানোর পরে দাগের স্থানে হালকা করে অলিভ অয়েল (olive oil) ম্যাসাজ করে নিয়ে তারপর ব্রাশ ক্লিনার বা বেবী শ্যাম্পু দিয়ে ক্লিন করবেন। এতে করে দাগ উঠে যাবে।
৪) মেকআপ স্পঞ্জ পরিষ্কার করার পরে এটার অতিরিক্ত পানি টাওয়ালের সাহায্যে শুষে নিয়ে, আলোবাতাস পূর্ণ স্থানে এটি টাওয়াল বা টিস্যুর উপরে রেখে শুকিয়ে নিন।
৫) প্রতিবার মেকআপ স্পঞ্জ দিয়ে ক্রিম প্রোডাক্টস ব্লেন্ডিং এর পরে সেটা ক্লিন করে রাখবেন। আর পাউডার প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই করলে সপ্তাহে ২/১ বার ক্লিন করলেই চলবে।
কিভাবে মেকআপ স্পঞ্জ স্টোর করবেন?
ক্লিনিং এর পরে আসে স্টোর করার ব্যাপারটা। ক্লিনিং এর পরে তো আর যেখানে সেখানে ফেলে রাখবেন না। তাই না? মেকআপ স্পঞ্জটি যে প্যাকেটে এসেছে, সেটাতেই স্টোর করে রাখতে পারেন। এছাড়া যে কোনো কাঁচের বয়ামে ভরে বা মেকআপ স্পঞ্জ হোল্ডারেও (makeup sponge holder) স্টোর করতে পারবেন।
এই তো জেনে নিলেন, কিভাবে মেকআপ স্পঞ্জ ব্যবহার করবেন এবং পরিষ্কার রাখবেন। আশা করছি, আপনাদের অনেক বেশী হেল্প হবে।
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; কমিউনিটি.ডিবেনহামস.কম; ইন্দোইন্ডিয়ানস.কম
The post মেকআপ স্পঞ্জ কিভাবে ব্যবহার করবেন এবং পরিষ্কার রাখবেন? appeared first on Shajgoj.