Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

লো প্রেশার |কারণ, লক্ষন ও প্রতিকার সম্পর্কে জানেন কি?

$
0
0

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে আমরা অনেক সচেতন তবে নিম্ন রক্তচাপ নিয়ে তেমন গুরত্ব দেই না। এই গরমে অনেকেরই রক্তচাপ লো হয়ে যায়। ঘেমে শরীরে যে পানিশূন্যতা তৈরি হচ্ছে তা থেকেই  মানবদেহে রক্তচাপের একটা স্বাভাবিক মাত্রা আছে। সাধারণত একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ হওয়া উচিত ১২০/৮০। এর উপর ভিত্তি করেই উচ্চ রক্তচাপ আর নিম্ন রক্তচাপ পরিমাপ করা হয়। প্রেশার বৃদ্ধি বা হ্রাস দুটোই স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ এর আশেপাশে থাকে তা হলে একে লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপ বলা হয়। অনেকই লো প্রেশার নিয়ে খুব দুশ্চিন্তায় থাকেন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই লো প্রেশার তেমন ক্ষতির কারণ হয় না। তবে লো প্রেশার যদি দীর্ঘমেয়াদি হয় তবে এটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হয়ে উঠে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক লো প্রেশারের কারণ, লক্ষণ ও এর প্রতিকার সম্পর্কে!

লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের কারণ

নির্দিষ্ট একটি কারণে লো প্রেশার হয় না। নানা কারণে প্রেশার লো হতে পারে। তাহলে এবার সবার আগে কারণগুলো জানা যাক!

১) শরীরে পানিশূণ্যতা

অতিরিক্ত ঘামে লো প্রেশার - shajgoj.com

এই গরমে ঘেমে শরীরে পানিশূণ্যতা দেখা দেয়। এ থেকে অনেকেই লো প্রেশারে আক্রান্ত হয়।

২) সঠিক খাবার না খাওয়া

আমাদের শরীরে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার চাহিদা আছে। সময়মতো আর সঠিকভাবে সেই খাবার না খেলে প্রেসার লো হতে পারে।

৩) অতিরিক্ত পরিশ্রম

পরিশ্রম সবসময় শরীরের সাথে সহনীয় মাত্রায় হতে হবে। আর তা মাত্রা ছাড়ালে প্রেশার লো হতে পারে।

৪) দুশ্চিন্তা

দুশ্চিন্তা থেকে লো প্রেসার - shajgoj.com

মানসিক অস্থিরতা, দুশ্চিন্তা, ভয় ইত্যাদি কারণেও প্রেশার লো হতে পারে। কারণ মনের সাথে শরীরের যোগাযোগ অতি নিবিড়।

৫) অপুষ্টি

শরীরে পুষ্টিজনিত সমস্যা থাকলেও প্রেশার লো হয়।

৬) অপর্যাপ্ত ঘুম

অপর্যাপ্ত ঘুমের জন্যও প্রেশার লো হয়ে যায়। একজন মানুষকে সুস্থ থাকতে হলে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন।

৭) ডায়রিয়া

ডায়রিয়া হলে কিংবা কিংবা ডায়রিয়ার সময় অত্যাধিক বমি হলে প্রেশার লো হয়।

৮) বদহজম

হজমের ব্যাঘাত ঘটলেও প্রেশার লো হতে পারে।

৯)  রক্তপাত

অতিরিক্ত রক্তপাতে লো প্রেশার - shajgoj.com

কোথাও কেটে গিয়ে বা অন্য কোন কারণে অতিরিক্ত রক্তপাত ঘটলেও প্রেশার লো হয়ে যায়।

১০) রক্তশূণ্যতা

শরীরে রক্তশূণ্যতা দেখা দিলে প্রেশার লো হয়।

১১) হরমোনের ভারসাম্যহীনতা 

অনেকের শরীরে হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা থাকে। এ কারণেও প্রেশার লো হয়।

১২) গর্ভাবস্থায়

গর্ভাবস্থায় লো প্রেশার - shajgoj.com

গর্ভবতী মায়েদের প্রথম ৬ মাসে হরমোনের প্রভাবে লো প্রেশার হয়ে থাকে। পরবর্তী সময় এটি ঠিক হয়ে যায়।

১৩) অন্যান্য

এছাড়াও হার্টের সমস্যা, অ্যাড্রিনাল গ্রন্থির সমস্যা, শরীরে তাপমাত্রার তারতম্য, গ্যাসট্রিকের সমস্যা, কোন দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত থাকা, নার্ভের সমস্যা ইত্যাদি কারণেও প্রেশার লো হয়। বেশ কিছু ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার কারণেও প্রেশার লো হতে পারে।

লো প্রেসারের লক্ষণ

কিছু লক্ষণ থেকে আমরা খুব সহজেই লো প্রেসার আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করতে পারি। সঠিক সময়ে রোগ চিহ্নিত হলে নিরাময় অনেক সহজ হয়। চলুন এবার লক্ষণগুলো জেনে নেই!

১. মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা অনুভূত হওয়া।

২. বসা থেকে উঠে দাঁড়ালে হঠাৎ মাথা ঘুরে যাওয়া বা ভারসাম্যহীন হয়ে যাওয়া।

৩. মাথা ঘুরে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া।

৪. চোখে অন্ধকার বা ঝাপসা দেখা।

৫. বমিভাব হওয়া।

লো প্রেশারের লক্ষণ হিসেবে বমিভাব - shajgoj.com

৬. শারীরিক বা মানসিক অবসাদ।

৭. খুব বেশী তৃষ্ণা অনুভূত হওয়া।

৮. ঘনঘন শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া।

৯. হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।

১০. প্রস্রাব কমে যাওয়া।

দ্রুত হৃদ স্পন্দন লো প্রেশারের লক্ষণ - shajgoj.com

১১. অস্বাভাবিক দ্রুত হৃদ কম্পন হওয়া।

 

প্রতিকার

প্রেশার কমে গেলে দুশ্চিন্তা না করে নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করলে দ্রুত এই সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। চলুন লো প্রেসারে করনীয়গুলো জেনে নেই!

১) খাবার স্যালাইন 

প্রেশার কম হলে প্রথমেই স্যালাইন খেতে হবে। শরীরে পানিশূণ্যতা ও ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে প্রেসার যখন কমে যায় তখন শুধু খাবার স্যালাইন খেলেই প্রেসার বেড়ে যায়। লো প্রেসারে খাবার স্যালাইন সবচেয়ে উপকারী ও তাৎক্ষণিক ফলদায়ক।

২) গ্লুকোজ

নিম্ন রক্তচাপ হলে এসময় গ্লুকোজ খেলেও ভালো উপকার পাওয়া যায়।

৩) লবণ জাতীয় খাবার

লো প্রেশারে লবণ - shajgoj.com

লো ব্লাড প্রেসার দেখা দিলে লবণ এবং লবণ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। সোডিয়াম রক্তচাপ দ্রুত বৃদ্ধি করে। তাই লবণযুক্ত খাবার খেয়ে রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে পারেন। এছাড়া লবণ পানি পান করতে পারেন। এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে প্রতিদিন দুই গ্লাস করে পান করুন। প্রেসার অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

৪) দুধ ও ডিম

দুধ ও ডিমসহ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। মুরগীর চেয়ে হাঁসের ডিম এক্ষেত্রে বেশী কার্যকরী।

৫) কফি

লো প্রেশারে কফি - shajgoj.com

কফি প্রেসার বাড়াতে বেশ কার্যকরী। সকালে নাস্তার পর এক কাপ কফি খেলে প্রেশারটা নরমাল থাকবে। চকোলেট ও ক্যাফেইন জাতীয় খাবার লো প্রেসার নিরাময় করে।

৬) কিশমিশ

কিশমিশ লো প্রেসারের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এক কাপ পানিতে ৩০/৪০টা কিশমিশ সারারাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন খালি পেটে খেতে হবে। কিছুদিন নিয়মিত খেলে লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

৭) মধু ও বাদাম

লো প্রেসার নিয়ন্ত্রণে মধু ও বাদাম বেশ কার্যকর ভুমিকা পালন করে। মধু দুধে মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায় এবং কাঠবাদাম ও চিনাবাদাম খেতে পারেন। এতে প্রেসার বাড়তে পারে।

৮) পুদিনা পাতা

লো প্রেশারে পুদিনা পাতা - shajgoj.com

আশ্চর্য হলেও সত্যি যে, পুদিনা পাতা দ্রুত প্রেশার বাড়ায়। তাই প্রেশার কমে গেলে এই পাতা বেঁটে নিয়ে এর সাথে মধু মিশিয়ে খেতে পারেন।

৯) ব্যায়াম

লো প্রেশার স্বাভাবিক রাখতে ব্যায়াম বেশ কার্যকর। ব্যায়াম হার্টে রক্ত চলাচল নিয়মিত করে। লো প্রেশার দেখা দিলে খাবার খাওয়ার সাথে সাথে শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে।

১০) তাজা শাক-সবজি

নিম্ন রক্তচাপ রোধে শাক-সবজি অনেক উপকারী। কারণ ভিটামিনমিনারেল ঘাটতির জন্য লো প্রেশার হতে পারে। ফলিক এসিড ব্লাড প্রেশার বৃদ্ধি করে। শাক সবজি প্রচুর ফলিক এসিড থাকে।

সবশেষে কিছু টিপস দিচ্ছি- যেসব ওষুধ খেলে রক্তচাপ কমে সেসব ওষুধ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধান হতে হবে। এসময় পর্যাপ্ত পানি পান করুন। তাছাড়া অনেকক্ষণ শুয়ে বা বসে থাকার পর উঠার সময় সাবধানে বা ধীরে ধীরে উঠতে হবে। লো প্রেশারের সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। ঘরে বসেই এই সমস্যা থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। উপসর্গ অনুযায়ী এর চিকিৎসার প্রয়োজন পরে। যাদের দীর্ঘমেয়াদি লো প্রেশার আছে তাদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; ইমেজেসবাজার.কম ; বুমআন্ডডুম.নেট

The post লো প্রেশার | কারণ, লক্ষন ও প্রতিকার সম্পর্কে জানেন কি? appeared first on Shajgoj.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

Trending Articles