ব্রেস্ট ইনফেকশন আজকাল সব মায়েদের কমন একটি সমস্যা। এটি হচ্ছে স্তনের টিস্যুতে একটি সংক্রমণ যা সাধারণত বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানো মহিলাদের হয়ে থাকে। এটি সাধারণত সন্তান প্রসবের পরে প্রথম ৩ মাসের মধ্যে হতে পারে এবং বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর যেকোনো সময় এই সংক্রমণটির আক্রমণ হতে পারে। এটি একটি কিংবা উভয় স্তনেই হয়ে থাকে। ইনফেকশন হলে প্রাথমিকভাবে ব্যথা, ফোলাভাব, লালভাব, চুলকানির মতো সমস্যা দেখা দেয়। বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হতে পারে। আবার ঘরোয়া কিছু পদ্ধতিতে এর সমাধানও সম্ভব। যদিও স্তন সংক্রমণ সাধারন অবস্থা তবে সংক্রমনের সময় হালকা আরাম দেয়ার জন্য ঘরোয়া কিছু কার্যকরী উপায় আছে। আজকে আমরা আপনাদের জানাবো কিভাবে ঘরোয়া উপায়ে দূর করবেন ব্রেস্ট ইনফেকশন।
ব্রেস্ট ইনফেকশন দূর করার ঘরোয়া উপায়
(১) বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যান
সংক্রমিত স্তন থেকে বাচ্চাকে দুধ খাওয়ালে খারাপ ব্যাকটেরিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এটি কোনভাবে বাচ্চার ক্ষতি করবে না কারণ বাচ্চাদের হজম করার একটি রস থাকে যা ব্যাকটেরিয়াগুলো ধ্বংস করে দেয়। এক্ষেত্রে দুধের প্রবাহ বাড়ানোর জন্য এবং অস্বস্তি দূর করার জন্য বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর আগে ১৫ মিনিটের জন্য আক্রান্ত স্তনের উপর একটি গরম ভেজা কাপড় রাখুন। এতে করে দুধের প্রবাহ বেড়ে যাবে এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।
(২) আক্রান্ত স্তনকে ম্যাসাজ করুন
আক্রান্ত স্তনকে ম্যাসাজ করতে হবে। এটি স্তনের নালীগুলিকে অবরোধ মুক্ত করতে এবং ব্যথা এবং ফোলাভাব দূর করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ক্যাস্টর অয়েল বা জলপাইয়ের তেল দিয়ে আঙ্গুলের সাহায্যে আক্রান্ত স্থানে এবং এর আশেপাশে ম্যাসাজ করুন। তারপর স্তনকে কাপড় দিয়ে মুছে নিবেন এবং বাচ্চাকে খাওয়ানোর আগে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
(৩) অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেলে ব্যথা উপশমকারী বৈশিষ্ট্যগুলি ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ ত্বক মেরামত করা এবং স্ফীত বা শুষ্ক ত্বক নিরাময় করার বৈশিষ্ট্য রয়েছে। অ্যালোভেরা জেল সরাসরি আক্রান্ত স্তনে লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্রক্রিয়াটি কয়েকবার পুনরাবৃত্তি করতে পারেন। এতে করে আপনার ক্ষত সেরে যাবে।
(৪) বাঁধাকপি পাতা
বাঁধাকপি পাতার সাহায্যে ব্রেস্ট ইনফেকশন অনেকাংশে দূর করা সম্ভব। এই পাতায় রয়েছে সালফার যা আক্রান্ত স্থানের ফোলাভাব এবং জ্বালা দূর করে। কয়েকটি বাঁধাকপি পাতা নিয়ে তা ফ্রিজে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন। ৩০ মিনিট পর ফ্রিজ থেকে বের করে আক্রান্ত স্তনে রাখুন। পাতার তাপমাত্রা নরমাল হয়ে গেলে এটি সরিয়ে নিয়ে আরেকটি ঠাণ্ডা পাতা আক্রান্ত স্থানে রাখুন। এটি আপনি যতবার ইচ্ছা ব্যবহার করতে পারেন।
(৫) গাঁদাফুল
গাঁদাফুলে রয়েছে অ্যান্টিব্যাকটিরিয়াল (Antibacterial) বৈশিষ্ট্য যা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এটি ব্রেস্টের ফোলাভাব এবং ব্যথাও দূর করে। কয়েকটি গাঁদাফুল এবং ৭-১০ ফোঁটা কমফ্রে তেল দিয়ে একসাথে মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে। এবার এই পেস্টটি গরম করুন এবং ১৫-২০ মিনিট আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে রাখুন। ১৫-২০ মিনিট পর একটি গরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন এবং গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
ব্রেস্ট ইনফেকশন হলে ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। খুব সহজেই ঘরোয়া উপায়ে এর সমাধান সম্ভব। কিন্তু অতিরিক্ত সমস্যা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
ছবি- সংগৃহীত: হিন্দুস্থানটাইমস.কম
The post ব্রেস্ট ইনফেকশন | ৫টি ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন সমস্যাটি appeared first on Shajgoj.