শীতের হিমেল হাওয়া ধীরে ধীরে শহরেও হানা দিচ্ছে। এবারও শীতের পোশাকে আসছে বৈচিত্র্যতা। নতুন আর পাশ্চাত্য ফ্যাশনের মিশ্রণে জমে উঠেছে শীতের পোশাকের বাজার। প্রতিবছরই কিছু নতুনত্ব আনা হয় শীতের পোশাকে। এ বছর শীতের ফ্যাশনে কিছুটা ফিউশন পছন্দ করছেন ক্রেতারা। চলুন জেনে নিই, এবারের শীতের নতুন ফ্যাশন কেমন হবে? কোথায় পাওয়া যাবে? এবং এদের দরদাম সম্পর্কে।
মেয়েদের জন্য
মেয়েদের পোশাকে কিছুটা পরিবর্তন প্রতি বছর সব সময়ই আনা হয়। শাল, জ্যাকেট এবং সোয়েটারের পাশাপাশি জিপারসহ হুডি জ্যাকেট, লং-জ্যাকেট, হাতকাটা হুডি সোয়েটার, হাইনেক-সোয়েটার, কালারফুল লং-সোয়েটার এবং বিভিন্ন রকম মাফলার আর স্কার্ফ।
সাথে থাকছে বিভিন্ন স্টাইলের এবং রঙের টুপি! বিশেষ করে গলাবন্ধ মাফলার ও স্কার্ফগুলো বেশ ফ্যাশনেবল করে তৈরি করছেন কারিগররা।
জ্যাকেট আর সোয়েটারের কাটিং-এ আনা হচ্ছে নতুন ডিজাইন। এসব তরুণদের সহজেই পছন্দ হয়ে যাচ্ছে।
শীতের ফ্যাশনে গত কয়েক বছর ধরে মেয়েদের পছন্দর তালিকায় রয়েছে চুড়িদার পাজামার মতো জেগিংস আর জিন্স। শীতের সময় বিভিন্ন স্টাইলের সাথে জিন্সই বেশি মানিয়ে যায়। তবে যারা জিন্স কিংবা জেগিংস পরতে স্বাচ্ছন্দ্য পান না, তারা মোটা গেঞ্জি কাপড়ের এক কালার বা প্রিন্টেড পাজামা ব্যবহার করতে পারেন।
আবার কিছু পোশাকের সাথে চাদরও মানিয়ে যায়। বিভিন্ন রঙের সুতার হাতের কাজ করা সাল পরে থাকেন অনেকেই।
ছেলেদের জন্য
ছেলেদের শীতের পোশাকে নতুনত্ব আনতে হাতকাটা সোয়েটার, হুডি-জ্যাকেট, মোটা জিপারের জ্যাকেট, টুপি আর চাদরও ব্যবহার করা হচ্ছে। স্কার্ফ ছেলেরাও এখন পছন্দ করে থাকে, তবে সবাই না। তাই স্কার্ফের জায়গায় এক কালার বা একটু ক্লাসি কালারের মাফলার ব্যবহার করা হচ্ছে।
ব্লেজারের মতো জ্যাকেটগুলো এখন ছেলেদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে আছে। গ্যাবাডিন কাপড়ের জ্যাকেটগুলো এক মধ্যে অন্যতম।
ছেলেরা বেছে নিচ্ছেন বিভিন্ন ধরনের এক রঙা শাল, আবার সে সবে জীবনানন্দ কিংবা নজরুলের কবিতার ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে।
দরদাম
নিউ মার্কেট,নুরজাহান মার্কেট, ঢাকা কলেজ-সবচেয়ে ব্যস্ততম মার্কেট। এসব মার্কেটে এবং এলাকার আশেপাশে সব ধরনের ক্রেতার উপযোগী পোশাক পাওয়া যায়। গুলিস্তান, বঙ্গবাজারেও ভালো মানের শীতের পোশাক পাবেন।
জ্যাকেট, হুডি প্রতিটি ৩০০-৭০০ টাকা। হাটা কাটা সোয়েটার ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, ফুলহাতা সোয়েটার ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা। ছেলেমেয়েদের শাল প্রতিটি ৩০০ টাকার মধ্যে পাবেন। মাফলারের দাম ১০০ থেকে ২৫০ টাকা। স্কার্ফ ১৫০-২৫০ টাকা। টুপি প্রতিটির মূল্য ৮০ থেকে ২০০ টাকা। মেয়েদের পাজামা ও জেগিংস ১৫০-২৫০ টাকা।
আরও ভালো ডিজাইনের ছেলে ও মেয়েদের চাদর ১২০ থেকে ৪ হাজার টাকা। স্কার্ফ ১৫০-৪০০ টাকা। মাফলার ১৫০ থেকে ৪০০ টাকা। মেয়েদের জেগিংস ২০০ থেকে ৪০০ টাকা।
কবিতা কিংবা বিপ্লবীদের ছবির ছাপসহ বিভিন্ন শাল বা চাদরের জন্য ঢাকার শাহবাগ এবং আজিজ সুপার মার্কেট সব থেকে ভালো। এখানে বিভিন্ন বাঙালী ধাঁচের শাল বা চাদরের মূল্য ৪০০-২০০০ টাকা।
বসুন্ধরা শপিংমল এবং যমুনা ফিউচার পার্কে শীতের পোশাকের কিছুটা মূল্য বেশি। তবে এখানকার পোশাক অন্যান্য পোশাকের ডিজাইনের তুলনায় আলাদা। তাই একটু বেশি দাম দিয়ে কিনতে হয়। সোয়েটারে মূল্য ৭০০ থেকে ৩০০০ টাকা। ছেলেদের জ্যাকেট ২০০০ থেকে ১৫০০০ টাকা। ছেলে ও মেয়েদের শাল বা চাদরের মূল্য ১৫০০ থেকে ২০০০০ টাকা। স্কার্ফের দাম ৪৫০ থেকে ১৫০০ টাকা।
এসব মার্কেট থেকে কাপড় কেনা বেশি সাশ্রয়ী হলেও, এছাড়া আরও অনেক শপিং মলে বিভিন্ন দামে শীতের গরম পোশাক পাওয়া যাচ্ছে। যেমন- উত্তরার শপিং সেন্টারগুলো, আড়ং, টেক্সট মার্ট, এস্টেসি ইত্যাদি।
ছবি – লেটেস্টফ্যাশনহাউজ ডট কম, পিন্টারেস্ট ডট কম, দিহান্ট ডট কম
লিখেছেন – সোহানা মোরশেদ