ইংরেজিতে একটি কথা আছে “Beauty lies in the eyes of the beholder”। শুনতে ভালো লাগলেও নিখুঁত সুন্দর চেহারা যদি আপনার ভেতরকার কনফিডেন্ট বাড়িয়ে তোলে তবে এক্সট্রা এফোর্ট তো দেয়াই যায় কি বলুন? নিজেকে বাড়তি সৌন্দর্যের ছোঁয়া দিতে মেকাপের সাহায্য নিচ্ছেন ভালো কথা। তবে সেটা হওয়া চাই গতানুগতিক। মেকাপের দুনিয়ায় প্রতিদিন নতুন কিছু না কিছু রুলস যোগ হচ্ছে। এই নতুনত্বের ছোঁয়া থেকে আপনি বা কেন পিছিয়ে থাকবেন। আজকের লেখনিতে মেকাপ দুনিয়ায় গত হওয়া মেকাপ রুলস নিয়ে কথা হবে। চলুন দেরি না করে দেখে নেয়া যাক, সেই ৭ টি রুলস যা মেকাপ দুনিয়াতে আউটডেটেড।
(১) চোখ টেনে আইলাইনার অ্যাপ্লাই
আই লাইনার দেয়ার সময় আমরা বেশির ভাগ সময় চোখের পাতা পিছন দিকে টেনে থাকি। যা একেবারেই উচিত নয়। এতে করে যেমনি আপনার চোখের প্রকৃত শেপ নষ্ট হয় ঠিক তেমনি চোখের ঐ অংশের ইলাস্টিসিটি হ্রাস পায়। এভাবে টেনে নয় বরং চোখের সাধারণ শেপ ঠিক রেখে আই লাইনার অ্যাপ্লাই করুন।
(২) আই ব্রো লাইন করে আঁকা
ভ্রুকে ঘন এবং পারফেক্ট শেপে আনার জন্য হেভি লাইন ড্র করা মটেই বুদ্ধিমানের মতো কাজ নয়। মেকাপমূলত প্রকৃত সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলার জন্যই তো করা হয়। তাই নয় কি? কিন্তু এখনো বিভিন্ন মেকাপ টিউটোরিয়ালে আই ব্রোকে শেপে আনার জন্য সোজা লাইন বা ভি শেপে লাইন আঁকতে দেখানো হয়। আঁকতে হবে ছোট ছোট স্ট্রোকে। আরেকটি বেকডেটেড মেকাপ রুলস হল চুলের রঙয়ের সাথে মিলিয়ে আই ব্রো কালার সিলেক্ট করা। এসব বেকডেটেড রুলস ফলো করলে আপনাকে আন ন্যাচারাল এবং হাস্যকর লাগতে পারে।
(৩) পুরো গালে ব্লাশ অন লাগানো
গোলাপি গাল কার না ভালো লাগে। তবে তা জেনে-শুনে করলেই মঙ্গল। গালকে গোলাপি করতে চাচ্ছেন খুব ভালো কথা কিন্তু এই ব্লাশ অন অ্যাপ্লাইয়ে রয়েছে এমন কিছু এরিয়া যেখানে হাতে লাগাম আনা আবশ্যক। আজকাল অনেকেই পুরো গাল জুড়ে ব্লাশ লাগান এই কাজটির পুনরাবৃত্তি আর করা যাবে না কেননা অনেক আগে থেকেই মেকাপ দুনিয়ায় এই পদ্ধতি গত হয়েগেছে। কাজেই গালের নিচের দিকের অংশটুকু ব্লাশ বিহীন থাকবে।
(৪) কপি-ক্যাট কন্ট্যুরিং
সবার চেহারার গঠন এক রকম নয়। আমেরিকান রিয়েলিটি টেলিভিশন পারসোনালিটি কিম কারদাশিয়ানের কথাই ধরুন, তাকে পারফেক্ট মেকাপ কুইন হিসেবে ধরা হয়। তার মেকাপ ট্রেন্ড কি এখনও ফলো করা হচ্ছে? তার মেকাপ ধরণকে আদর্শ হিসেবে ধরে নিজের চেহারায় ঠিক তার মতো পারফেক্ট কন্ট্যুরিং করতে চাইলে কি হবে! একেবারেই নয়। কন্ট্যুরিং করার সময় পারফেক্ট শেপ নিয়ে আসতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আয়নার সামনে ডিফারেন্ট প্রোডাক্ট দিয়ে কন্ট্যুরিং হয়ত আপনাকে তার মতো লুক এনে দিবে কিন্তু মটেই ভালো কোন উপায় না। একসাথে বিভিন্ন প্রোডাক্ট ব্যবহারের ফলে মুখে কমলা রঙের প্যাচেজ দেখা দিবে। যার ফলে মেকাপ লুকটি কিমের কাছাকাছি গেলেও আপনার নিজস্ব অভিব্যাক্তি ফুতে উঠবে না। কাজেই নিজের চেহারার শেপ আগে ভালো করে লক্ষ্য করুন এবং সেই মোতাবেক কন্ট্যুর করুন।
(৫) খালি ঠোঁটে লিপস্টিক লাগানো
মুখে মেকাপ অ্যাপ্লাই করার সময় প্রাইমার ব্যবহার করা হলেও ঠোঁটে সরাসরি লিপস্টিক লাগিয়ে ফেলা হয়। তবে এই অভ্যাসটিও পরিবর্তন করা উচিত প্রথমে ঠোঁটে বাম অথবা লিপস প্রাইমার লাগিয়ে নিয়ে তারপর লিপস্টিক বুলিয়ে নিন। লংলাস্টিং লিপ কালারগুলো এক্সট্রা ড্রাই হবার কারণে ডিরেক্ট আপ্লাইয়ের ফলে ঠোঁটের প্রাকৃতিক নমনীয়তা কমতে থাকে। কাজেই ঠোঁটে লিপস্টিক ব্যবহারের আগে অবশ্যই লিপ বাম এবং লিপ প্রাইমার ব্যবহার করা উচিত।
(৬) আঙ্গুলের সাহায্যে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই
আঙ্গুল দিয়ে চেপে চেপে ফান্ডেশন অ্যাপ্লাইয়ের দিন শেষ। কোনরকম টুলস ব্যবহার না করে যদি কেবল আঙ্গুলের সাহায্যে মেকাপ অ্যাপ্লাই করেন তবে ফাউন্ডেশন কোথাও বেশি কোথাও কম হবে। ফাউন্ডেশন ফিনিশিং ভালো হবে না।
(৭) ভুল স্থানে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করে শেড নির্বাচন
আচ্ছা ফাউন্ডেশনের সঠিক শেড কীভাবে নির্বাচন করে থাকেন? হাতে লাগিয়ে ম্যাচ করে থাকেন যদি তবে মেকাপ জগতের অতীতেই পরে আছেন আপনি। হাতে বা গলায় নয় জ লাইনে ফাউন্ডেশন অ্যাপ্লাই করে শেড নির্বাচন করুন।
যাই হোক আজকের লেখাটিতে মেকাপের সাধারণ কিছু ভুলের কথাই উল্লেখ করা হয়েছে। মেকাপ রেভুলেশনের সময়ে এধরনের ছোটখাটো ভুলগুলোই আপনাকে বেকডেটেড করে তুলবে। কাজেই আজ থেকে এর আর পুনরাবৃত্তি নয়।
ভালো থাকুন সুন্দর থাকুন।
ছবি – ফার্স্ট ডট কম, বিউটিহ্যাক ডট কম, স্টাইলক্রেজ ডট কম
লিখেছেন – নীলা