অনেকের হয়তো মাঝে মাঝে পিরিয়ড এর তারিখ পেরিয়ে গেলেও পিরিয়ড হতে সবসময় দেরি হয়। সাধারনত অনেক বেশি স্ট্রেস, পরিশ্রম, দুর্বলতা, জীবনযাত্রায় বড় কোনও পরিবর্তন এসব কারণে অনিয়মিত পিরিয়ড হতে পারে। অনেক সময় ঘরোয়া কিছু উপায়ে এসব সমস্যা সমাধান হয়ে যায়। কিন্তু তাতে কাজ না হলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। নিচে রইল এমনি কিছু সমাধান-
(১) আদা
আদা অনিয়মিত পিরিয়ড ঠিক করার পাশাপাশি পিরিয়ড চলাকালীন পেটের ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। আধা চাচামচ আদা কুঁচি এক কাপ পানিতে ফুটিয়ে নিন ৬ থেকে ৭ মিনিট। তারপরে এতে মেশান সামান্য চিনি বা মধু। এরপরে মিশ্রণটি ছেঁকে নিন। দিনে তিনবার খাওয়ার পরে এই মিশ্রণটি এক মাস খেতে হবে।
(২) হলুদ
হালকা গরম দুধের সাথে মেশান ১/৪ চাচামচ হলুদ গুঁড়ো। হালকা গরম থাকতেই খেয়ে নিন। প্রতিদিন খেলে অবশ্যই পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।
(৩) ধনে
দুকাপ পানিতে এক চা চামচ আস্ত ধনে দিয়ে অল্প আঁচে পানিটা ফুটিয়ে নিতে থাকুন, যতক্ষণ না সেটা অর্ধেক হচ্ছে। পিরিয়ডের ডেট আসার আগের সপ্তাহ থেকে দিনে তিনবার এই পানি খান।
(৪) তুলসি পাতা
এক চামচ তুলসি পাতার রস আর এক চামচ মধু মিশিয়ে নিন, সাথে সামান্য গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে দিনে দু’বার খেতে পারেন।
(৫) তিল ও গুড়
এক মুঠো তিল টেলে নিয়ে এক চামচ গুড় এর সাথে মিশিয়ে বাটতে হবে। এই মিশ্রণ প্রতিদিন খালি পেটে খেতে হবে।
(৬) দারুচিনি
দারুচিনি অনিয়মিত পিরিয়ডের পাশাপাশি পিরিয়ড চলাকালীন পেটের ব্যথাও কমাতে সাহায্য করে। আধা চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া দুধের সাথে মিলিয়ে খেতে পারেন। অথবা নিয়মিত চায়ের সাথে দারচিনি দিতে পারেন।
(৭) গাঁজর
গাঁজর আয়রনের একটি ভালো উৎস, যা শরীরের হরমোন ফাংশনকে সঠিকভাবে চলতে সাহায্য করে। অনিয়মিত পিরিয়ড এর ক্ষেত্রে এক গ্লাস গাঁজরের রস প্রতিদিন খেতে হবে তিনমাস পর্যন্ত ।
(৮) মৌরি
দুই টেবিল চামচ মৌরি এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে সারারাত। পরদিন সকালে পানিটা ছেঁকে নিয়ে খেতে হবে। কার্যকর ফলাফল পেতে এক মাস নিয়মিত খেতে হবে মৌরি ভেজানো এই পানি।
(৯) কুঁচি ধনেপাতা (Parsley)
ধনেপাতার রস পিরিয়ড সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে খুব উপকারী। ধনেপাতার রস খেতে না পারলে, ধনেপাতা বাটা খেতে পারেন ভাতের সাথে।
(১০) করলার রস
পিরিয়ডের সমস্যা সমাধানে করলার রস ও বেশ কার্যকরী। দিনে একবার বা সম্ভব হলে দুবার করলার রস খানে টানা কয়েক সপ্তাহ। এছাড়াও করলার রস ডায়াবেটিস এর ক্ষেত্রেও বেশ উপকারী।
(১১) ভিটামিন সি
অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যায় ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খুব জরুরি। পিরিয়ডের আগের সপ্তাহ থেকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি যুক্ত খাবার রাখুন ডায়েটে।
(১২) পুদিনা পাতা
একচামচ মধুর সাথে পুদিনা পাতার রস মিশিয়ে দিনে তিনবার খেতে হবে একটানা কয়েক সপ্তাহ।
এগুলোর পাশাপাশি জেসব বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত যেমনঃ
- শরীরের ওজন ঠিক রাখা, নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করা
- স্বাস্থকর খাবার খাওয়া
- ধূমপান বা অন্য কোন এলকহলিক পানীয় না খাওয়া ইত্যাদি।
তবে উপরে যেসব সমাধানের কথা বলা হয়েছে, সেগুলো নিতান্তই ঘরোয়া সমাধান। বড় কোন শারীরিক সমস্যা না থাকলে হয়তো দুতিন মাসেই এর ফলাফল পাওয়া যাবে। কিন্তু দীর্ঘসময় ধরে যদি আপনার অনিয়মিত ভাবে পিরিয়ড হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। ভালো থাকুন।
ছবি – স্টেপটুহেলথ ডট কম
লিখেছেন – মাহবুবা বীথি