রেগুলার এক্সারসাইজ আপনার দেহকে রাখে টোনড এবং মেদহীন। সাথে সাথে আপনার ঘামের সাথে দেহে জমে থাকা টক্সিন জাতীয় উপাদান গুলোকে বের করে দিয়ে দেহকে দীর্ঘদিন জড়তা, রোগ-ব্যাধি মুক্ত রাখতেও এক্সারসাইজের জুড়ি মেলা ভার। এক্সারসাইজ আর ডায়েটের সম্মেলনে সুস্থ আর সুন্দর দেহ পাওয়া খুব কঠিন কিছু নয় কিন্তু!
আজকাল আমাদের কাজ কর্ম, লেখা পড়া সব কিছুতেই বসে থাকার প্রবণতা বেড়েছে। হাঁটা চলা কম করা আর এক জায়গায় ঠায় বসে বসে কাজ করার ফলে নারী ও পুরুষের দেহের মধ্য ও নিম্নাঙ্গ, মানে পেট, তলপেট আর ঊরুতে মেদ জমার হারও লক্ষণীয়। আমার মতে দোহারা গড়নের সবারই ঊরু আর তলপেটে মেদ, সেলুলাইট জমে নিম্নাঙ্গের শেপ নষ্ট হয়ে যাবার মত সমস্যা আছে। আর তাই আজ বলব এমন চারটি এক্সারসাইজের কথা যা রেগুলার আপনার শিডিউলে ফিট করে ফেলতে পারলে থাইতে জমে থাকা মেদ খুব তাড়াতাড়ি দূর করতে পারবেন। চলুন এক্সারসাইজ গুলোতে চোখ বুলিয়ে নেই।
১। লাঞ্জঃ
মেদবহুল ঊরুকে কব্জা করার সবচেয়ে কার্যকরী উপায় গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে লাঞ্জ। প্রথমে, আপনার পেটের মাসল শক্ত করে দুই পা একটু ফাঁকা করে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার ডান পা ছবির মত করে সামনে বাড়ান। এই সময় যতো কষ্টই হোক উপরের শরীর বাঁকা করবেন না বা কোমর ভাঙবেন না। আপনার হাঁটু ৯০ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেলে নিয়ে আসুন। ১-২ সেকেন্ড অপেক্ষা করে ডান পায়ের উপর ভর দিয়ে আবার শরীর ঠেলে সোজা করে বসা অবস্থা থেকে দাঁড়িয়ে পড়ুন। এবার একই ভাবে অন্য পায়েও এক্সারসাইজ করুন। দুই পায়ে একবার করে করলে ১ সেট পূর্ণ হয়। মিনিমাম ১০ সেট থেকে শুরু করে প্রতিদিন প্র্যাকটিস করে আস্তে আস্তে সেট সংখ্যা বাড়ান।
২। স্কোয়াটঃ
এই এক্সারসাইজটি শুধু থাইয়ের সেলুলাইটই কমায় না…… এটা সাথে সাথে হিপ আর কোমরের পাশে জমে থাকা মেদও দূর করে। বলতে গেলে সকল এক্সারসাইজ বাদ দিয়ে আপনি যদি শুধু এটাও করেন তবুও আপনি ভালো ফল দেখতে পাবেন। প্রথমে, দুই পায়ের মাঝে ১০-১২ ইঞ্চি তফাৎ রেখে দাঁড়ান। দুই হাত সামনে বাড়িয়ে দিন, এতে করে ব্যাল্যান্স থাকবে আর কোনভাবেই এক্সারসাইজের সময় উপরের কোমর ভেঙে বাঁকা হয়ে যাবেন না যেন! এবার আস্তে আস্তে বসুন। আপনার থাই মেঝের সাথে প্যারালাল হয়ে গেলে থেমে যান। ছবিতে দেখুন, এভাবে যেন আপনার হাঁটু পায়ের আঙুল ক্রস না করে সেদিকে খেয়াল রাখুন। ৫ সেকেন্ড এভাবে থেকে আবার আস্তে আস্তে সোজা হয়ে দাঁড়ান। রোজ অন্তত ২০ বার করুণ আর আস্তে আস্তে সংখ্যা বাড়ান। স্কোয়াট আপনার শরীরের শেপ ধরে রাখতে অনেক সাহায্য করে।
৩। জাম্পিং স্কোয়াটঃ
এই এক্সারসাইজটা স্কোয়াটেরই আরেক ভার্সন। যারা অলরেডি ফিজিক্যালি একটু ফিট তারা এটা ট্রাই করলে দ্রুত শরীর শেপে চলে আসা সহ ওজনও কমবে। এর জন্য প্রথমে স্কোয়াটের মত করে বসুন। এবার সোজা হয়ে দাঁড়াবার বদলে দুই পায়ের শক্তি একত্রিত করে লাফ দিন। এতে আপনার পায়ের মাসলে জমে থাকা মেদ ঝড়ে যাবে আর পা টোনড হয়ে উঠবে। মিনিমাম ৮ বার করে প্রতিদিন করতে শুরু করুন।
৪। সিঙ্গল লেগ সার্কেলঃ
আহ! শান্তি……। এবারের এক্সারসাইজটা শুয়ে শুয়ে ট্রাই করতে পারবেন। প্রতি রাতে ঘুমানোর আগে অনায়াসে পায়ের ব্যায়ামটা সেরে নিতে পারবেন। তো প্রথমে আপনাকে সোজা হয়ে বিছানায় বা ম্যাটে শুয়ে পড়তে হবে। দুই হাতের তালু মেঝেতে লাগানো থাকবে। এবার আস্তে আস্তে শ্বাস নিতে নিতে আপনার একটি পা মেঝে থেকে উপরে তুলে ফেলুন। এবার পা দিয়ে বাতাসে একটি সার্কেল আকার চেষ্টা করুণ। দেখবেন, কোমর বা হিপ যেন না নড়ে যায়। ৫ বার ক্লকওয়াইজ আর ৫ বার অ্যান্টি-ক্লকওয়াইজ পা ঘোরান। শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে আস্তে করে পা নামিয়ে সোজা হয়ে যান। আবার অন্য পা দিয়ে একই ভাবে লেগ সার্কেল করুন। এভাবে ১ সেট কমপ্লিট করুণ। ভালো ফল পেতে রোজ আপনাকে মিনিমাম ৫ সেট লেগ সার্কেল করতে হবে।
এই এক্সারসাইজ গুলো খুবই সহজ আর কার্যকরী। অল্প কষ্টে জেদি মেদ ঝড়াতে এদের জুড়ি মেলা ভাড়। তাই রেগুলার প্র্যাকটিসে থাই শেপে না এসে যাবে কোথায়?
লিখেছেনঃ মীম তাবাসসুম
ছবিঃ ইন্ডিয়ান ফিটনেস ব্লগ, পপসুগার.কম