দীর্ঘ সময় যাবৎ ঘরদোরের সেই একই চেহারা। নিজেরা নিত্যদিন কতো ভিন্ন রূপে সাজি, সাজপোশাকে বদল আনি। অথচ সাধের ঘরখানা পুরনো হয়ে থেকে যায়। এবার বদলে নিতে চাচ্ছেন ঘরের সাজসজ্জা? আবার দমে যাচ্ছেন এটা ভেবে যে, বিরাট খরচের কাজ এটা। এতো বেশি খরচ করতে পারবেন না ঘর সাজানোর জন্য।
বিরাট খরচের ধাক্কা একবারে আসবে, তা কেনো ভাবছেন? ভেবেচিন্তে কৌশলে কাজের পরিকল্পনা করুন, তারপর অল্প অল্প করে এগিয়ে নিন আপনার পরিকল্পনা। খরচটা একবারে সব হবে না, কিছু কিছু করে হবে। তাতেই তো সমস্যা অনেকটা কমে যাচ্ছে, তাই নয় কি?
কিছুটা সময় নেবে ঠিক, কিন্তু অন্দরমহলের রূপবদলের আপনার ইচ্ছেটা পুরণ হয়ে যাবে অনায়াসে।
মাথায় রাখুন, চটজলদি কিছু করে ফেলার কাজ শুরু করেননি। আস্ত ঘরখানার পুরনো চেহারা পালটে নতুন চেহারা আনতে চলেছেন, এই কাজে কয়েক মাস সময় তো বরাদ্দ করাই লাগবে। মাসে মাসে কিছু টাকা রাখুন এই সংক্রান্ত খরচের জন্য। নতুন যা সব কেনা লাগবে, কিনবেন বলে ভাবছেন, তালিকা করে নিন। কোন মাসে কোন জিনিষগুলি কেনা হবে তাও ঠিক করে রাখুন। এটা করা খুব জরুরী না হলেও এতে কাজের সামান্য সুবিধা হবে।
শুরুতেই বদলে নিতে পারেন ঘরের ছোটখাটো জিনিষপত্র। যেমন ধরুন, দেয়ালে সাজিয়ে রাখার কয়টা নতুন জিনিষ কিনলেন। আগে থেকে দেয়ালে কিছু রাখা না থাকলে তো আরো ভালো, এখন ঝুলিয়ে দিন কিছু ফুলের ঝাড়, বা ফ্রেমে আটকানো নিজেদের কয়েকটি ছবি। হালকা উপাদানে তৈরি দারুণ সব ফটোফ্রেম পাওয়া যায় বাজারে, কাঠ, বাঁশ বা কাগজের সেসব ফ্রেমে প্রিয় মুহূর্তগুলি যখন দেয়ালে আটকে দেবেন, ঘরখানা এমনিই হাসিখুশি দেখাবে। আবার হুট করে এই বদলটা বেশ চোখেও পড়বে। পালটে নিতে পারেন বহু আগের দেয়ালঘড়িটাও, নতুন ঘড়ি আসুক দেয়ালে।
বড়সড় চমক আনতে ঘরে লাগাতে পারেন ওয়াল স্টিকার। পছন্দ মতন নকশার ওয়াল স্টিকারে ঘর নতুন রূপে সাজবে নিমিষেই!
অন্তত কিছু গাছ রাখুন ঘরে। বারান্দায় নয়, ছাদে নয়, ঘরের ভেতর আপনার কাছে। অন্দরসজ্জায় সবুজ ছোঁয়ার বিকল্প আর কিছুতেই পাবেন না কিন্তু।
ভাড়া বাসায় থেকে দেয়ালে রঙ নিজেদের ইচ্ছে মতন করা যায় না, এই এক মুশকিল। কিন্তু দেয়ালটা অন্য অনুষঙ্গে সাজাতে তো মানা নেই তাইনা? কাগুজে প্রজাপতি, ফুল, চাঁদ বা তারা যা খুশি সেঁটে দিন দেয়ালে। নিজের হাতে বানিয়ে নিতে পারেন এসব। পছন্দ মতন জিনিষ কিনতেও পারেন বাজার থেকে। এসবে ঘরের মনমরা ভাবটাও কেটে যাবে দেখবেন।
পর্দা হলো আরেক জিনিষ যা অন্দরমহলের চেহারায় বড় ভূমিকা রাখে। সম্পূর্ণ ঘরের পর্দা বদলে নেয়া বড় খরচের ধাক্কা, কাজেই একবারে করা সম্ভব নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে এই কাজও অল্প অল্প করেই করুন। অবাক হবার কিছু নেই, একেক ঘরের জন্য পর্দা কিনুন একবারে। পুরো ঘরের পর্দা এক হলে তাতেও কিন্তু একঘেয়েমি তৈরি হয়। শোবার ঘরে থাকুক এক রঙের পর্দা, তো বসার ঘরে ভিন্ন রঙের ভিন্ন ধাঁচের পর্দা হোক। ঘরের সাজে বৈচিত্র আসবে এতে। তো এই মাসে কোন এক ঘরের পর্দা বদলে নেয়ার কথা ভাবুন বরং?
এমনি করে ধীরে ধীরে আস্ত ঘরটাই সাজবে নতুন রূপে। নবরূপে ঝলমলিয়ে উঠবে আপনার সাধের অন্দরমহল।
ছবি – গার্ডেনিস্তা, ওয়ালপেপারজোন, ফ্রেশহোম ডট কম
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব