চুল আমাদের শরীরের অন্যতম প্রধান অংশ, যা অন্যান্য অংশের তুলনায় অপেক্ষাকৃত বেশি খোলা অবস্থায় থাকে এবং পরিবেশের সাথে প্রতিনিয়ত খাপ খাওয়ানোর প্রয়াসে থাকে। কিন্তু এই খাপ খাওয়ানোর প্রক্রিয়ায় চুলে নানা প্রকার ক্ষয় সবসময় হতেই থাকে। এছাড়া চুলে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন হেয়ার-স্টাইল করে থাকি। এই স্টাইল করতে গিয়েও চুলের ক্ষয় হতে পারে।
চুলকে বাইরে থেকে দেখতে সুন্দর রাখার পাশাপাশি এর ভিতরের সুস্থতার কথাও আমাদের ভাবা উচিত। আমাদের প্রায় সবারই কমবেশি চুলের সমস্যা রয়েছে যেমন চুল পড়ে যাওয়া, রুক্ষ হয়ে যাওয়া, আগা ফাটা, চুল বড় না হওয়া ইত্যাদি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যা আরও বেশি বেড়ে যায়। এইসব সমস্যা অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব একটি সুশৃঙ্খল ডায়েট চার্টের সাহায্যে যেখানে রাখতে হবে চুলের প্রয়োজন মত খাদ্য।
চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় যেসব উপাদান বিশেষ ভূমিকা পালন করে তাদের মধ্যে অন্যতম হলো জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, আয়রন বায়োটিন, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। তাই খাদ্য তালিকায় এইসব উপাদানসমৃদ্ধ খাদ্য রাখতে হবে। বাজারে হাজারো খাদ্য আছে যাতে এই উপাদানগুলো বিদ্যমান। এখানে এইসব উপাদানে সবচেয়ে বেশি উপাদেয় ৫টি খাদ্য তালিকা দেয়া হলো-
ডিম
ডিমে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন যা চুলের সবচেয়ে বড় উপাদান। এছাড়াও এতে রয়েছে সালফার, আয়রন, সেলেনিয়াম ও জিঙ্ক। আয়রন মাথার স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, জিঙ্ক চুল মজবুত করে। প্রোটিনের ভাল উৎস হিসেবে মুরগির মাংসও বেশ ভালো, এতে ভালো মানের প্রোটিনের পাশাপাশি ভিটামিন বি থাকে।
ডাল
ডিমের মতই ডাল প্রোটিনের একটি ভাল উৎস। আমাদের চুল কঠিন ক্যারাটিন নামক প্রোটিনে তৈরি। তাই চুলের স্বাস্থ্যের জন্য প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য আমাদের তালিকায় রাখতেই হবে। ডাল খুবই সহজলভ্য খাবার তাই এটি অনায়াসেই আমাদের ডায়েট চার্টে রাখতে পারি। প্রোটিনের পাশাপাশি এতে থাকে আয়রন। এটি মেটাবলিজম, সারকুলেশন বাড়ায় এবং কোষে অক্সিজেনের যোগান দেয় তাই চুলের ফলিকলগুলো সুস্থ থাকে।
সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি
বিভিন্ন ধরণের সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি যেমন পালং শাক, বাঁধাকপি ইত্যাদিতে থাকে আয়রন, ভিটামিন সি এবং বেটা ক্যারোটিন যা চুলের বৃদ্ধিতে ও আর্দ্রতা রক্ষায় সাহায্য করে। এছাড়া এটি সারকুলেসন বাড়ায় এবং চুলের রঙ ঠিক রেখে চুলকে উজ্জ্বল করে তুলে।
দই
চুলের ফলিকলের স্বাস্থ্যের জন্য ভিটামিন বি প্রয়োজন। দইতে থাকে বেশ ভালো পরিমাণ ভিটামিন বি ও ভিটামিন ডি, তাই প্রতিদিনের খাদ্যের তালিকায় কিছু পরিমাণ দই রাখলে ভাল।
আয়োডিনযুক্ত খাদ্য
অনেক চুলের সমস্যা থাইরয়েড গ্ল্যান্ড ঠিকমত কাজ না করার কারণে হয়ে থাকে। যেমন, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, বৃদ্ধি কমে যাওয়া, বিবর্ণ হয়ে যাওয়া, রুক্ষ হয়ে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দেয় এটির কারণে। থাইরয়েড গ্ল্যান্ডকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে আয়োডিন। তাই আয়োডিনযুক্ত খাবার (সামুদ্রিক মাছ ও সমুদ্র উপকূলের শাকসবজি) সম্ভব হলে নিয়মিত গ্রহন করতে হবে।
চুল রক্ষার্থে চুলের অভ্যন্তরীণ পুষ্টির চাহিদা সবার আগে ঠিক রাখতে হয়। তাই আমাদের খাদ্য নির্বাচনে সজাগ হতে হবে।
ছবি – নিউবিউটি.কম
লিখেছেন – সারাহ