ইন্টারনেটের এই যুগে আমরা স্মার্টফোনের গেইম খেলতে খেলতে সত্যিকারের খেলা প্রায় ভুলতেই বসেছি! কিন্তু খেলাধুলা করা দেহের জন্য যেমন দরকারি তেমনি মনের সুস্থতায়ও উপকারী। আর হ্যাঁ, খেলাধুলা শুধু ছোট বাচ্চাদের জন্য না, বড়দের জন্যও খেলাধুলা অনেক দরকারি।
তাই ছোট বাচ্চাদের খেলার উপকারিতা শেখাতে গিয়ে নিজের ব্যপারটাও ভুলে যাবেন না। ঘর ও কাজের মাঝে প্রতিদিন ৩০ মিনিট সময় বের করুন খেলার জন্য, পরিবারের সবাইকে উদ্বুদ্ধ করুন এই ব্যাপারে। আর অবশ্যই একে বাধ্যবাধকতা না মনে করে খেলাকে শখ হিসেবে গ্রহন করুন, পরিবারের সাথে খেললে পারিবারিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে সাথে সময়টাও কাটবে আনন্দে। বিভিন্ন রকম খেলা খেলতে পারেন যেমন, সাইক্লিং, সুইমিং, রানিং ইত্যাদি। এছাড়া শুধুমাত্র হাঁটার মাধ্যমেও এই প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারেন, তবে তা করা উচিত দলগতভাবে কারণ একা করে এর প্রকৃত আনন্দ পাওয়া সম্ভব না। তাই অনেক দেশে খেলাধুলাকে কিছুকিছু রোগের চিকিৎসা হিসেবে গ্রহন করা হয়।
খেলাধুলার উপকারিতা বলে শেষ করা যাবেনা। এটি মানুষের জীবনিশক্তি বাড়িয়ে দেয়। কিছু উপকারিতা এখানে বর্ণনা করা হল-
হৃৎপিণ্ডের সুস্থতা দান
আমাদের হৃৎপিণ্ডেরও প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে কাজ করা প্রয়োজন, খেলার সময় এটিকে বেশি পরিমাণে রক্ত পাম্প করতে হয়। তাই এটি প্রয়োজন মত কাজ করার সুযোগ পায় আর সুস্থ থাকে।
ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণ
ডায়বেটিস রোগীদের একটি ওষুধ হিসেবে দেয়া হয় নিয়মিত খেলা করাকে। এর ফলে ইনসুলিন সঠিকভাবে কাজ করে। অতিরিক্ত ক্যালরি নিঃশেষ করে খেলার মাধ্যমে ওজনও ঠিক থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ কমানো
উচ্চ রক্তচাপ স্ট্রোক ও হৃৎপিণ্ডের সমস্যার কারণ হতে পারে। খেলাধুলা নিয়মিত করলে হৃৎপিণ্ড ও রক্ত গহ্বর ভাল থাকে এবং উচ্চ রক্তচাপের কারণগুলো স্তিমিত থাকে।
কোলেস্টেরল লেভেল
খেলাধুলা ও নিয়মিত ব্যায়াম করলে দেহের কোলেস্টেরল লেভেল ঠিক থাকে।
রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখা
রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে দেহের সব অঙ্গে পুস্টি পৌছায়। খেলার সময় রক্ত সঞ্চালন বেশি হয় তুলনামূলক, তাই দেহের সব অংশে পুস্টি উপাদান পৌঁছাতে সাহায্য করে এবং এতে করে দেহে রক্তের পরিমাণ ও হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো
খেলাধুলার সময় শ্বেত রক্ত কণিকার সংখ্যা বৃদ্ধি পায়, তাই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া এসময় যে ঘাম হয় তার সাথে অনেক বিষাক্ত উপাদান ও টক্সিন বের হয়ে যায়।
মাংসপেশি ও হাড় গঠনে
খেলার সময় দেহের পেশিসমূহ সবচেয়ে বেশি অংশ নেয়। তাই পেশি শক্তিশালী হয়ে ওঠে এবং হাড়ের ঘনত্বও বৃদ্ধি পায়।
নিজেকে ও অন্যকে শ্রদ্ধা করতে শেখা
খেলা আপনার মন ভালো রাখবে, জীবনকে আরও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করবে এবং নিজেকে ও অন্যকে শ্রদ্ধা করতে উদ্ধুদ্ধ করবে।
নিয়মানুবর্তিতা, দলগত কাজ ও লক্ষ্য নির্ধারণ
নিয়মিত খেলাধুলা দৈনন্দিন জীবনের সব কাজে শৃংখলা নিয়ে আসে।
পরিশেষে, খেলাধুলার কিছু নিয়ম থাকে যা অবশ্যই মেনে চলতে হবে,না জেনে উল্টাপাল্টাভাবে খেললে উপকারের চাইতে অপকার হবার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ছবি – স্ন্যাপড.এফএনএস.ইউএসডিএ.গভ
লিখেছেন – সারাহ