শিক্ষক-শিক্ষিকার পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীর প্রতি বাবা-মাও একটু খেয়াল ও সতর্ক দৃষ্টি রাখলে বাচ্চারা ভালো ফলাফল অবশ্যই করবে। নিয়মের সাথে কিছু কৌশল অবলম্বন শিশুকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। বাবার থেকে মা শিশুর সব থেকে কাছের বন্ধু। তাই মা-দের বেশি ধৈর্য নিয়ে শিশুদের পড়ালেখার পেছনে সময় দিতে হবে।
- শিশুদের সব থেকে প্রয়োজনীয় জিনিস হলো সঠিক পরিমাণে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা। কারণ খাদ্য শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য একান্ত দরকার। তাই নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস শিশুদের করাতে হবে। অভ্যাস না হলে তারা ঠিক মতো খেতে চাবে না। খেলার ছলে বা গল্প বলতে বলতে সব রকমের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর অভ্যাস করানো উচিৎ।
- প্রতিদিন ঠিক মতো ঘুম শিশুদের প্রয়োজন। দেখা যায় যে বাচ্চারা সারাদিন খেলা ধুলায় মেতে থাকে। সঠিক পরিমাণ বিশ্রাম না হলে দিন শেষে পড়ায় মনোযোগ আসে না। তাই তাদের ঠিক মতো ঘুমান উচিৎ। একটানা অনেকক্ষণ না পড়িয়ে সারা দিন অল্প অল্প করে পড়ান। এতে তারা খেলার ফাঁকে ফাঁকে পড়তে উৎসাহ পাবে। তাছাড়া খাওয়া-দাওয়ার পাশাপাশি ঘুম অনেক প্রয়োজনীয়। ঘুম না হলে সারা দিনের ক্লান্তি থেকে যাবে।
- বাচ্চাদের সারাক্ষণ পড়ার চাপে না রেখে নিয়মিত খেলাধুলা করতে দিন। খেলা ধুলা বাচ্চাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য অত্যাবশ্যক।
- তাদের মনে আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলুন। সেটা গল্প বলে হোক আর উপদেশ দিয়ে হোক। এতে তারা আরো আনন্দের সাথে পড়ালেখা করতে পারবে।
- বকা বা মারধোর না করে সুন্দর করে বুঝানোর চেষ্টা করুন। মনে রাখবেন বাচ্চারা ভালোবাসা, আদর-স্নেহ সহজে গ্রহণ করে নেয় কিন্তু কারো খারাপ আচরণ সহজে ভুলতে পারে না। তাই তাদের সাথে সুন্দর ব্যবহার করুন।
- বাচ্চাদের সাহস দিন। সাহস ছাড়া তারা কখনো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারবেনা। পরীক্ষা নিয়ে তাদের বেশি ভয় দেখাবেন না।তাদের বোঝান যে আপনি তার পাশে ভালো বা খারাপ,সবসময় আছেন।
- বাচ্চারা যেরকমই হোক তাদের প্রশংসা করুন। এতে তাদের আত্মবিশ্বাস দৃঢ় হবে। প্রতিটা শিশুই আলাদা। কিন্তু সব শিশুর মধ্যে বিশেষ দিক থাকে যা শুধু তাদের বাবা-মাই জানেন। সে সব দিক তুলে ধরে তাদের প্রশংসা করুন।
- পড়াশুনার পাশাপাশি গান বা নাচ শেখাতে পারেন। সব সময় একঘেয়েমি রুটিন ফলো না করে সপ্তাহে এক-দুই দিন গান বা নাচ শিখলে তাদের মন ভালো থাকবে।
- বিভিন্ন কৌশলে পড়ান। যেমন গল্প বলে বলে পড়া বুঝানো কিংবা খেলাধুলার মধ্যেই পড়ানো। আবার সারা দিনে একটু পরপর পড়া বিষয়ক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করুন। এতে তারা পড়া বেশি সময় ধরে মনে রাখতে পারবে।
- কখনই অন্যদের সাথে আপনার বাচ্চার তুলনা করবেন না। এতে তারা কষ্ট পায়। আবার পড়া বিষয়ক লেকচার দেয়া শুরু করলে সেটা তাদের কাছে বিরক্তিকর লাগবে। তাই এসব বুঝাতে চাইলে বিভিন্ন উপদেশমূলক গল্প দিয়ে বুঝান।
- নিজে থেকে বারবার পড়া মনে রাখার চেষ্টা করতে বলুন। এমন আগ্রহ নিয়ে পড়ান যেন তারা নিজ থেকেই প্রশ্ন করে করে পড়া বুঝার চেষ্টা করে।
- নিয়মিত খবর রাখুন স্কুলে তার পড়ার পাশাপাশি স্বভাব কেমন। খুব বেশি সময় ধরে না পড়িয়ে দিনে ২-৩ বার পড়ানোর রুটিন ঠিক করে নিয়ে পড়ান।
এছাড়া বাচ্চাদের একনাগাড়ে মুখস্ত না করিয়ে বুঝে বুঝে পড়ান। এতে তারা মনোযোগ সহকারে পড়তে পারবে।
ছবি – এবিসিলার্নিংসেন্টারএফএল.কম
লিখেছেন – সোহানা মোরশেদ