নিয়মিত ত্বকের যত্ন নিতে কত কিছুই না করে থাকেন। ক্লিনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং আরো কত কি। কিন্তু দেহের সবচেয়ে সংবেদনশীল ত্বক ঠোটের যত্নের কথা আলাদা করে ভেবেছেন কি? মুখের ত্বকের চেয়ে ঠোটের ত্বক অনেক বেশি পাতলা হয়। তাই মুখের ত্বকের যেমন নিয়মিত পরিচর্যার প্রয়োজন তেমনি ঠোটের জন্যেও চাই বিশেষ যত্ন। আজ আপনাদেরকে এমন কিছু টিপস জানাবো যা আপনাদের ঠোটকে করে আরো নরম, সুন্দর ও প্রাণবন্ত করে তুলতে সাহায্য করবে।
১।রোদ থেকে ত্বককে রক্ষা করার জন্য বাইরে বের হবার আগে সানস্ক্রিন লাগালেও অনেকে ঠোটের কথা বেমালুম ভুলে যান। রোদের ক্ষতিকর রশ্মি ঠোটের ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক করে তুলে মারাত্বক ক্ষতি সাধন করতে পারে।তাই বাইরে বের হবার আগে SPF যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরী।এটি ঠোটের স্বাভাবিক আর্দ্রতা বজায় রেখে ঠোটকে করে তোলে সজীব ও প্রাণোচ্ছল।
২।সপ্তাহে একবার অবশ্যই ঠোট স্ক্রাব করা উচিত। এতে ঠোটের উপর জমে থাকা ডেড সেল দূর হয়ে যায় এবং ঠোটের নির্জীবভাব একদম দূর করে দেয়।বাজারে ঠোটের সংবেদনশীল তার কথা মাথায় রেখে ঠোটের জন্য বিশেষ উপযোগী করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লিপ স্ক্রাব কিনতে পাওয়া যায়।তবে অনেকেই বাজারের কেনা লিপস্ক্রাব ব্যবহার করা পছন্দ করেন না আবার অনেকের ক্ষেত্রে ত্বকের সাথে মানানসইও হয় না। তাই আপনাদের সুবিধার্থে ঘরে তৈরি একটি লিপস্ক্রাবের রেসিপি দিচ্ছি যা ডেড সেল দূর করার সাথে সাথে ঠোটের কমণীয়তা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
উপাদান
- ব্রাউন সুগার
- মধু
- অলিভ অয়েল
প্রস্তুত প্রণালী
সবগুলো উপাদান সমপরিমাণে মিশিয়ে নিয়ে হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে হালকাভাবে ঠোটে ২ মিনিট ম্যাসাজ করুন। জোরে ঘষতে যাবেন না। ঠোটের ত্বক অনেক বেশি পাতলা ও নমনীয় হয়ে থাকে। জোরে ঘষাঘষি করলে ঠোটের ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। ম্যাসাজের পর ভেজা পাতলা কাপড় দিয়ে ঠোট মুছে ফেলুন আর হয়ে উঠুন তুলতুলে নরম ঠোটের অধিকারী।
৩। স্ক্রাবিং এর সাথে সাথে ঠোটের ময়েসচারাইজেশনও অনেক বেশি জরুরী বিশেষ করে যাদের ঠোট কিছুটা শুষ্ক প্রকৃতির। ঠোটের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য বাজারে বিভিন্ন নামি দামি ব্র্যান্ডের লিপবাম পাওয়া যায় ।যেমন Maybellin, EOS, The Body Shop ব্র্যান্ডের লিপবাম ইত্যাদি। এছাড়া বাসায় অলিভ অয়েল তো থাকেই। সবসময় লিপবাম ব্যবহার করতে না চাইলে একটু অলিভ অয়েল নিয়ে ঠোটে লাগিয়ে রাখুন। প্রতিদিন নিয়মিত ব্যবহারে আপনার ঠোটকে নরম ও সজীব।
৪। পানি আমাদের দেহ ও ত্বকের অনেক বেশি উপকারী। এটি ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে করে তোলে সজীব ও প্রানবন্ত। তাই ঠোটের ত্বকের সজীবতা বজায় রাখার জন্য প্রচুর পানি পান করুন।
৫। আমাদের প্রতিদিনকার কিছু অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমেও আপনারা দীপ্তিময় ঠোটের অধিকারী হতে পারেন।
- ঠোট কামড়ানোর অভ্যাস থাকলে এখনি বাদ দিন। নইলে ঠোটে দীর্ঘস্থায়ী দাগ পড়ে যেতে পারে।
- যাদের ঠোটের ধরণ শুষ্ক তারা ম্যাট ধরণের লিপস্টিক ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এতে ঠোট তার স্বাভাবিক আর্দ্রতা হারিয়ে আরো বেশি শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। ফলে ঠোট ফাটা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- যারা ইতোমধ্যে শুষ্ক ঠোটের অধিকারী তারা হালকা শেডের লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। ডার্ক শেডের লিপস্টিক শুষ্ক ঠোটের ফাইন লাইনগুলোকে আরো বেশি ফুটিয়ে তোলে।
লিখেছেন – মুসরাত জাহান দোলা