ঈদ তো প্রায় চলেই এলো তাইনা? সব প্রস্তুতির মাঝে নিজেকে সারাটা দিন উৎসবের সাজে গুছিয়ে রাখার প্রস্তুতিও থাকা চাই। ঈদের দিনটায় কেমন হতে পারে আপনার সকাল থেকে রাত্র অবধি সাজসজ্জা, দেখে নেয়া যাক তবে।
সকাল সকাল ভারী সাজসজ্জায় আপনাকে একেবারেই বেমানান দেখাবে! ঘুম ভেঙ্গে উঠে টুকটাক কাজকর্ম সেরে নিয়ে তো গোসল করে আসবেন, তখন চোখেমুখে যে স্বাভাবিক স্নিগ্ধভাব খেলা করবে সেটাই থাকতে দিন। বাসায় থাকলে নিত্যদিনের প্রসাধনী যা ব্যবহার করা হয় তাই লাগাতে পারেন মুখে। আধা ভেজা ত্বকে ময়েশ্চারাইজার দিন, শুকিয়ে গেলে পরে হালকা পাউডার বুলিয়ে নিন। কেবল পাউডার লাগালেও চলে। ফেস পাউডার ব্যবহার করবেন না লুজ পাউডার তা সম্পূর্ণ আপনার ইচ্ছা, আপনার নিয়ম মতোই হবে। এই বেলায় কেবল চোখের কোলে কাজল বুলিয়ে নিন। চাইলে সাথে ন্যাচারাল কালারের যেকোন শেডে লিপকালার কিংবা গ্লস চলবে ঠোঁটে। এর চেয়ে বেশি কিছু সাজগোজে না আনাই ভালো।
সকালে চুলে দারুণ একটা ওয়েট হেয়ারস্টাইল করে নিতে পারেন। এলোমেলো করে ছেড়ে রাখুন ভেজা চুল। তবে সকালেই বের হবার থাকলে চুল শুকিয়ে বেঁধে রাখুন। সময়টা গরমের যেহেতু, সারাদিন খোলা চুলে কাটানো অস্বস্তিকর হতে পারে। তাই খোঁপা, বেণী, ঝুঁটি যাই পছন্দ আপনার তাতে আটকে ফেলুন চুলগুলোকে। তখন সাজেও আসবে কিছু বাড়তি জিনিষ। নিজের অভ্যাস অনুযায়ী খানিকটা ভারী সাজ নিতে পারেন তখন। চোখের পাতায় হালকা রঙের শ্যাডো যোগ করা যায়, আর গালে ব্লাশঅনের আভা। বেশি সময়ের জন্য বের হলে সাজসজ্জার উপকরণ ব্যাগে ভরে সাথে নেবেন। লিপকালার, কাজল, ফেস পাউডার এসব ছোট ব্যাগে ভরে ভ্যানিটি ব্যাগে রাখা যায়। দুপুরের পর চেহারার সতেজতা ম্লান হয়ে এলে তখন সাজসজ্জায় আবার একটু প্রলেপ দিয়ে নেবেন আগের মতোই। দিনভর মেকআপ ঠিকঠাক রাখা সম্ভব হবে তাইলে।
বাসায় থাকা হলে সকালের সাজটাই দুপুর অবধি ধরে রাখতে পারেন। কাজেকর্মে ব্যস্ত থাকলে দুপুরের সময়টায় একটু ক্লান্তি আসতেই পারে। তাছাড়া গরমেও অস্বস্তি লাগতে পারে। তখন বসে আরেক প্রস্থ সাজগোজ করার মানে হয় না। সকালে যে লিপস্টিক ব্যবহার করছেন তা মুছে ভিন্ন একটা রঙ বেছে নেয়া যায়। কাজল মুছে ফেলা যায়। চাইলে আই লাইনার দিতে পারেন দুপুরের সাজে। এরকম ছোটখাটো বদল করেই দুপুরের সাজে ভিন্নতা আনুন। পোশাক পাল্টে অন্যকিছু পরলে তার সাথে রঙ মিলিয়ে লিপকালারের রঙ ঠিক করুন। আইশ্যাডো দেয়া থাকলে তা মুছে নতুন করে আবার দেয়ার চেয়ে সেটা রেখেই নতুন কিছু যোগ করার কথা ভাবুন। ঝামেলা কম হবে। বাসায় অতিথিরাও দুপুরে আসতে পারে। তাদের আপ্যায়নে সময় দিতে হলে নিজেকে আগেই সেভাবে গুছিয়ে তৈরি করুন। চুল বেঁধে রাখাই ভালো এই সময়ে। খোঁপা করলে তাতে তাজা ফুল গুঁজে দিন, ভালো দেখাবে।
যারা দুপুর পার করে বিকেলে পাড়া বেড়াতে বের হবেন, তারা বেশ শান্তি মতন সাজগোজ করতে পারবেন। রোদের তেজ কমে আসবে বলে স্বস্তি থাকবে অনেকটাই। এসময় উজ্জ্বল কিন্তু মিষ্টি রঙগুলির ব্যবহার চলতে পারে ইচ্ছেমতো। মুখ ধুয়ে সম্পূর্ণ নতুন সাজ নিয়ে নেবেন এই বেলা। সকালের হালকা সাজ ভুলে যেতে পারেন, রঙে ভরপুর সাজ হোক ঈদের বিকেলে। চোখের পাতায় শ্যাডোতে, ঠোঁটের লিপকালারে রঙের বৈচিত্র্য ফুটিয়ে তুলতে পারেন। টকটকে গোলাপি লিপকালার হলে পার্পল শেডে আইশ্যাডো হতে পারে। চুল ছেড়ে রাখুন ইচ্ছে হলে। একপাশে বেণী, এলোখোঁপা বা কোঁকড়া চুলের ঢেউ খেলানো স্টাইলও দারুণ হবে। চুলে নানা রকম ফ্লোরাল হেয়ারব্যান্ড ব্যবহার করে রঙিন সাজের আমেজটা সুন্দর মতন ফুটিয়ে তোলা যায়।
জমকালো হবে ঈদের রাতের সাজ। দাওয়াত থাকুক, বা নিজের বাসায় আয়োজন হোক, সেজেগুজে থাকতে চাইলে নিশ্চিন্তে বেছে নিন গাঢ় সব রঙ। বিকেলের সাজগোজে টাচআপ করে তাই রেখে দিতে পারেন, বা সময় থাকলে মুখ পরিষ্কার করে নতুনভাবে সাজতে পারেন। তবে চোখের সাজ এবং ঠোঁটে রঙের পরশ, সবটাই হবে গাঢ়। চোখের স্মোকি সাজ সবচেয়ে ভালো রাতেই লাগে। তাই এটা বেছে নিতে পারেন রাতের মেকআপে চোখ সাজাতে। ঠোঁটে বুলিয়ে নিন লাল লিপকালারের গাঢ় শেড, বা মেরুন রঙ, অথবা একেবারেই ন্যুড কোন কালার শেড যার সাথে চোখের সাজ হবে জমকালো। গ্লিটারের ছোঁয়াও দিতে পারেন চোখে, রাতের অনুষ্ঠানে এমন ঝলমলে সাজগোজ মানিয়ে যায় বেশ। চুলে পাথরের অনুষঙ্গ ব্যবহার করা যায়। ভারী সাজসজ্জার সাথে কেশবিন্যাসে পাথরের উপস্থিতি চমৎকার দেখাবে।
মডেল – রিথিকা হক
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব