নারকেল তেলের গুণাগুণ তো অনেক শুনে থাকবেন। কিন্তু এই নারকেলের আরেকটি উপাদান আছে যা আমাদের রূপচর্চায় আরেক ধাপ বেশি কার্যকরী। আর তা হলো নারকেল দুধ। শুষ্ক ও সংবেদনশীল ত্বক ও চুলের যত্নে এটি জাদুকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। এতে রয়েছে এন্টি এজিং প্রপার্টিজ যা ত্বকের বলিরেখা কমিয়ে ত্বককে করে তোলে প্রাণবন্ত। আজ তাই প্রকৃতির এই চমৎকার উপাদানের রূপচর্চায় বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে আপনাদের জানাব।
শুষ্ক ত্বকের যত্নে
নারকেল দুধে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও ফ্যাটি এসিড যা আমাদের ত্বকের বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়া ত্বককে মসৃণ করে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। রোদে পোড়া দাগ দূর করতেও এর জুড়ি নেই। তাই শুধুমাত্র নারকেল দুধ দিয়ে ক্লিনজারের মতো মুখ পরিষ্কার করতে পারেন কিংবা অন্য কোন প্রাকৃতিক উপাদান যেমন- অ্যালোভেরা, মধু বা শসা যা আপনার ত্বকের সাথে মানানসই, তার সাথে মিশিয়ে পছন্দের ফেসপ্যাক বানিয়ে লাগিয়ে ফেলুন। লাগানোর পর ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এই প্যাকটি সপ্তাহে ২ বার করতে পারেন। নিয়মিত ব্যবহারে নারকেল দুধের জাদুকরী প্রভাব অবশ্যই দেখতে পাবেন।
মেকাপে তোলার ক্ষেত্রে
মুখের ও চোখের মেকআপ তোলার ক্ষেত্রে নারকেল দুধের জুড়ি মেলা ভার। মেকআপ রিমুভারে থাকা ক্ষতিকর উপাদান আপনার ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে পারে। নারকেল দুধ ত্বককে শুস্কতার হাত থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রেখে সম্পূর্ণ মেকআপ তুলে ফেলতে সাহায্য করে। এছাড়া চোখের নমনীয়ভাব বজায় রেখে চোখের ক্লান্তভাব ও চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে।
সমপরিমান নারকেল দুধ ও নারকেল তেল ভালোভাবে মিশিয়ে ২টি তুলার প্যাডের সাহায্যে সারা মুখে আলতোভাবে লাগিয়ে নিন। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন যাতে তা মেকআপের সাথে ভালোভাবে মিশে যায়। এ সময় তুলার প্যাড ২টি চোখের উপর রাখতে পারেন। এতে চোখের ফোলাভাব থাকলে তা কমে যাবে এবং মেকআপের ফলে চোখের যে কমনীয়তা হারিয়ে যায় তা ফিরে আসবে। এরপর স্বাভাবিক ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মেকাপ তো পুরো পরিষ্কার হবেই বোনাস হিসেবে ত্বক হয়ে উঠবে কোমল ও দীপ্তিময়।
চুলের যত্নে
নারকেল দুধে থাকা ফ্যাটি এসিড চুলে ডিপ কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। এটি চুলের পর্যাপ্ত আর্দ্রতা বজায় রাখে। এছাড়া চুলে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের যোগান দিয়ে চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করে তোলে। চুলকে করে তোলে ঝলমলে ও প্রাণবন্ত।
এক কাপ নারকেল দুধের সাথে ২ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা অথবা অ্যাভোকাডো পেস্ট ভালোভাবে মিশিয়ে চুলে লাগিয়ে ফেলুন। যেকোন ভালো সুপারশপে অ্যাভোকাডো কিনতে পাওয়া যায়। ২০-৩০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু করে ফেলুন। তবে শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার লাগাতে ভুলে যাবেন না যেন। প্যাকটি সপ্তাহে ১ বার ব্যবহার করতে পারেন। এই প্যাকটি মাঝারি দৈর্ঘ্যের চুলের পরিমাণে আছে। চুলের দৈর্ঘ্য ও ঘনত্ব অনুযায়ী পরিমাণ কম বেশি করে নিতে পারেন। আর চুল ধোয়ার পর পার্থ্যক্য নিজেই বুঝতে পারবেন। তাই আর দেরি না করে আজই নারকেল দুধ আপনার রূপচর্চার রুটিনে যোগ করে দিন।
ছবি – হেলথপ্লাস.ভিএন
লিখেছেন – মুশরাত জাহান দোলা