আবার ঘোরাঘুরি নিয়ে আলোচনা করতে আসলাম এবং ঢাকার আশেপাশে ঘুরার মতো আরও তিনটি জায়গা নিয়ে। চলুন জেনে নিই এই জায়গাগুলো সম্পর্কে-
বেলাই বিল
গাজিপুরের বেলাইবিল মনোরম একটি জায়গা। চেলাই নদীর সাথেই বেলাই বিল।এখানে ইঞ্জিনচালিত আর ডিঙ্গি নৌকা দুটোই পাওয়া যায়।যেটাতে ভালো লাগে উঠে পড়ুন। সারাদিনের জন্য ভাড়া করে নিতে পারেন এবং ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিলে নিজেরাই চালিয়ে ঘুরতে পারেন।
বিকেলে এই বিলের চারপাশে অপূর্ব দৃশ্য তৈরি হয়, সাথেশাপলার ছড়াছড়ি। শুধু চারিদিক তাকিয়ে থাকবেন। আবার কিছুক্ষণ পরপরই বাতাসের ঝাপটা লাগবে গায়ে। বেশি সময় নিয়ে গেলে অবশ্যই খাবার নিয়ে যাবেন। যাওয়ার সময়নদীরপাড় দিয়ে হাঁটতে থাকি,রওনাদেই আমাদের গন্তব্যে।
যেভাবে যাবেন
গাজিপুর সদর পর্যন্ত যাওয়ার পর, সেখান নেমে টেম্পুতে কানাইয়া বাজার যাবেন। ভাড়া নিবে ১০ টাকা করে। রিকশাতেও যেতে পারেন।কানাইয়া বাজারে নেমেই সামনে ব্রিজ আছে,ব্রিজ পার হয়েই নদীতে বাধা নৌকা ঠিক করে উঠে পড়ুন।
এছাড়াও নদীর পাশে‘ভাওয়ালপরগণা’ (শ্মশান ঘাটবা শ্মশান বাড়ি) আছে। চাইলে নদীর পাশেই এই শ্মশান বাড়িটি দেখে আসতে পারেন।
নুহাশপল্লী
হুমায়ূন আহমেদ-কে সবাই চেনেন, তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৪০ বিঘা জায়গা নিয়ে তৈরি করেছেন ‘নুহাশ পল্লী’।নুহাশপল্লী গাজীপুরে অবস্থিত একটি বাগানবাড়ী, নুহাশ চলচিত্রের শুটিংস্পট ও পারিবারিক বিনোদন কেন্দ্র।নুহাশপল্লীতে ঢুকে মাঠ দিয়ে একটু সামনে এগিয়ে গেলে হাতের বামপাশে শেফালি গাছের ছায়ায় নামাজের ঘর।এরপাশেই পুরনো লিচু বাগানের উত্তর পাশে জাম বাগান আর দক্ষিণে আম বাগান। ওই লিচু বাগানের ছায়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন হুমায়ূন আহমেদ।
নুহাশ পল্লীর পুরো জায়গাটি সবুজ গাছপালা দিয়ে আবৃত। দেখলেই মন জুরিয়ে যাবে। এখানে অনেক প্রজাতির এবং অনেক রকমের গাছ রয়েছে।গাছের গায়ে সেটে দেয়া পরিচিতিফলক রয়েছে। আরও রয়েছে সুইমিংপুল আর ছোট্ট পুকুর। মাঠের মাঝখানে একটি গাছের উপর ঘর তৈরি করা আছে, যা আবাক করবে আপনাকে!হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত প্রায় অনেক নাটক সিনেমার অন্যতম শুটিংস্পট এটি।
তাই যারা হুমায়ূন আহমেদ স্যারের ভক্ত আছেন তারা অবশ্যই এই জায়গায় ঘুরে আসুন।
যেভাবে যাবেন
প্রথমে গুলিস্তান থেকে প্রভাতী-বনশ্রী বাসে হোতা পাড়াবাজারে নেমে সেখান থেকে ছোট টেম্পুতে করে পৌঁছে যাবেন নুহাশ পল্লী। এছাড়া নিজস্ব গাড়ি বা মাইক্রো ভাড়া করে যেতে পারেন। এপ্রিল থেকে নভেম্বর নুহাশপল্লী দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।
১২ বছরের উপরে জন প্রতি টিকেট লাগবে ২০০ টাকা।
শালবন বৌদ্ধ বিহার, কুমিল্লা
শালবন বৌদ্ধবিহার বাংলাদেশের প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম এবং কুমিল্লা জেলার লালমাই-ময়নামতির অসংখ্য এবং চমৎকার সব প্রাচীনস্থাপনাগুলোর একটি।
দেববংশের চতুর্থ রাজা শ্রীভবদেব এ বৌদ্ধ বিহারটি নির্মাণ করেন।
যেভাবে যাবেন
প্রথমে কুমিল্লা শহরে যাবেন। কুমিল্লা শহর থেকে ৮ কি. মি. দূরে কোট বাড়িতে শালবন বিহার অবস্থিত ।
ঢাকা থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত বাসে যেতে ২-৩ ঘণ্টা লাগবে।কুমিল্লা এসে চলে যান টমটম ব্রীজ সিএনজি স্ট্যান্ডে। সেখানে সিএনজি করে কোটবাড়িতে এবং সেখান থেকে অটোরিকশা বা রিকশায় করে যেতে হবে শালবন বিহার।
একটু সময় বের করে বন্ধুদের অথবা পরিবার নিয়ে ঘুরে আসুন এসব জায়গায়।
একদিনে ঢাকার আশেপাশেই ঘুরে আসার মতো মনোরম জায়গা (পর্ব ১)
লিখেছেন- সোহানা মোরশেদ
ছবি – অফরোডবাংলাদেশ.কম, আওয়ারকুমিল্লা.কম, আর্কাইভ.প্রথমআলো.কম