Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

হঠাৎ করে জ্বর এলে কী করবেন?

$
0
0

শীত শেষ হয়ে এলো, সামনেই গরমকাল। এই মাঝখানের হালকা ঋতু পরিবর্তনেই অপ্রত্যাশিত জ্বর কাশি হতে দেখা যায় অনেকের মাঝেই। এটা স্বাভাবিক, কারণ আবহাওয়ার পরিবর্তনের সাথে সাথে তাপমাত্রার একটা তারতম্য ঘটে। আমাদের শরীর সেটা হঠাৎ করে মানিয়ে নিতে পারে না বলেই জ্বর কাশি দেখা যায়।

 

জ্বর হবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে জ্বর হলে শুরু থেকেই যদি কিছু ছোট নিয়ম কানুন মেনে চলা যায় তাহলে জ্বরের কারণে কষ্ট কম হবে এবং দ্রুত জ্বর সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে। জ্বর সবারই হয় কিন্তু সবাই এই ছোটখাট টিপস সম্পর্কে অবগত নয়। আজকের লেখায় কয়েকটি ছোট টিপস দিয়ে দেয়া হলো –

 

১. জ্বর হলে সবার আগে আপনি দূর্বল বোধ করবেন। ভেতর থেকে উত্তাপ বোধ হবে। এমতাবস্থায় থার্মোমিটার নিয়ে আপনার শরীরের তাপমাত্রা মেপে ফেলুন। মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। যদি এর বেশি তাপমাত্রা ধরা পড়ে তাহলে বুঝবেন আপনি জ্বরে ভুগছেন।

 

২. জ্বর হলেই একদম ভয়ে দিশেহারা হয়ে যাওয়ার কিছু নেই। যতটুকু সম্ভব শান্ত থাকার চেষ্টা করুন। পরিবারের সদস্যদের যতটা কম বিরক্ত করবেন ততই ভালো। জ্বর যদি খুব বেশি মারাত্মক না হয়ে থাকে তাহলে তাদের কাছে না যাওয়াই উত্তম। বরং তাদের থেকে দূরে থাকুন, কারণ ফ্লু ছোঁয়াছে হয়ে থাকে। ফলে আপনার থেকে আপনার পরিবারের অন্য সদস্যদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও থেকে যায়।

 

৩. জ্বর হলে বাসায় অবস্থান করুন। কারণ জ্বর থাকাকালীন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সুস্থাবস্থার চাইতে হ্রাস পায়। বাইরে গেলে ধুলোবালিতে থাকা জীবানু শরীরে ঢুকে বিভিন্ন রোগের কারণ হয়ে উঠতে পারে। এছাড়াও জ্বর গায়ে শরীর সঞ্চালনে শরীর আরো বেশি দূর্বল হয়ে পড়ে। তাই যতসম্ভব বিশ্রামে থাকার চেষ্টা করুন।

 

৪. ঘুমান। জ্বর হলে যত বেশি সম্ভব ঘুমানোর চেষ্টা করুন। কারণ ঘুমালে আপনার শরীরের আভ্যন্তরীন কাজগুলো দ্রুত হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তার শক্তি ফিরে পায়। এছাড়া ঘুম আপনার শরীর কে জ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত করে তোলে।

 

৫. নিয়মিত থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর পরীক্ষা করুন। কারণ জ্বর পরীক্ষার মাধ্যমেই আপনি বুঝতে পারবেন আপনার শরীর এর তাপমাত্রা বাড়ছে নাকি কমছে। যদি তাপমাত্রা কমতে থাকে তাহলে উঠে হাতমুখ ধুয়ে নিন, এতে ফ্রেশ লাগবে এবং শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে। কিন্তু যদি তাপমাত্রা বাড়তে থাকে তাহলে আগে থেকে সাবধান হয়ে যান। খেয়াল করুন জ্বরের পাশাপাশি শরীরে অন্যান্য উপসর্গ যেমন মাথাব্যাথা, শরীরের ব্যাথা, খাবারে অরুচি ইত্যাদি আছে কি না। থাকলে দ্রুত ডাক্তারের শরনাপণ্ন হোন।

 

৬. হালকা খাবার খান। জ্বরের সময় খুব বেশি ভারী খাবার খেতে হবে এমন কোন কথা নেই। হালকা খাবার খান। এতে খাবার হজম করতে সুবিধা হবে। জ্বরের শরীরে খালি পেটে কষ্ট বেশি হয়। তাই একেবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে খেতে থাকুন। এতে শরীরের শক্তি তে ঘাটতি পড়বে না।

 

৭. যদি তাপমাত্রা না কমে, তাহলে ভেজা কাপড়ের পট্টি দিন। কিছুক্ষণ পর পর কাপড় পরিবর্তন করুন। এতে তাপমাত্রা কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে। যদি খুব বেশি তাপমাত্রা লক্ষ্য করেন তাহলে কাপড় ভিজিয়ে গা হাত পা মুছে ফেলুন। এতে শরীরের প্রশান্তি বোধ হবে।

 

৮. হালকা জ্বরের ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল টাইপের ওষুধ খেলে এমনিতেই জ্বর সেরে যায়। তাই জ্বর এর মাত্রা অনুযায়ী প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে প্যারাসিটামল খেয়ে নিতে পারেন। কিন্তু জ্বর যদি অনেক বেশি হয় তাহলে প্যারাসিটামলের উপর ভরসা না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। অনেকে আবার না বুঝে এন্টিবায়োটিক খেয়ে ফেলেন, এটা উচিত নয়। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া জ্বরের ওষুধ হিসেবে কোন এন্টিবায়োটিক খাবেন না।

 

৯.  জ্বরের সাথে অন্যান্য উপসর্গ আছে কি না খেয়াল রাখুন। যদি এমন কিছু থাকে যেমন বমি বমি ভাব, মাথা ব্যাথা, চোখে ঝাপসা দেখা, বমি হওয়া, খিঁচুনী কিংবা মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার অবস্থা হয় তাহলে দ্রুত হাসপাতালে চলে যান।

 

এই জিনিসগুলো করা খুবই সহজ এবং মনে রাখার মতই। তাই সুস্থতা বজায় রাখতে চাইলে জ্বর আসার সাথে সাথে এই নিয়মগুলো মেনে চললে সহজেই জ্বর থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব।

 

লিখেছেন – ফরহাদ রাকিব

ছবি – মেডিকফটো.কম

 


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

Trending Articles