Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া সমস্যা? জেনে নিন দ্রুত ঘুমানোর দারুণ কিছু কৌশল!

$
0
0

বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করতে করতে পুরো রাত পাড়! কিন্তু তাও ঘুমের দেখা নাই। অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া সমস্যা তে যারা ভুগছেন, তারা জানেন এটি কতটা কষ্টদায়ক! একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানোর প্রয়োজন। একদিন রাতে ঠিকমতো না ঘুমালে পরেরদিন ক্লান্ত লাগে, প্রোডাক্টিভিটি কমে যায়! ভালো ঘুম পরের দিন কাজের শক্তি যোগায়। পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের শরীরকে ন্যাচারালি হিলিং ও রিপেয়ার করে। সাধারণত ঘুমের সময় নিউরোট্রান্সমিটার ও হরমোন নিঃসৃত হয়, যা সারা দিনের জন্য শরীরকে সতেজ রাখে।

কিন্তু অনেকে আছেন, যাদের রাতে ঘুম হয় না। একটু ঘুমানোর জন্য তারা ভরসা করেন ঘুমের ওষুধের উপর। ঘুমের ওষুধ শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তা আমাদের সবারই জানা। একটানা বেশিদিন ওষুধ খেলে অনেকসময় সেই ওষুধ আর কাজও করে না। রাতে ঘুম না আসলে কিংবা বারবার ঘুম ভেঙ্গে যাওয়াকে বলা হয় ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা রোগ। যার ফলে দিনের বেলা ঘুমোনো, সারাদিন ঝিমুনি ভাব, কাজে মনোযোগ না দিতে পারা, সারাদিন মেজাজ খিটখিটে ও বিষণ্ণ হয়ে থাকার মত সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু কেন হয় এই অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া সমস্যা?

কারণ

  • স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তা
  • ডিপ্রেশন
  • বিভিন্ন আওয়াজ
  • আনকমফোর্টেবল বেড
  • মদ্যপানের অভ্যাস
  • অতিরিক্ত ক্যাফেইন
  • শিফট ওয়ার্ক

অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া সমস্যা

কিছু কাজের মাধ্যমে এই ইনসমনিয়া দূর করা সম্ভব। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেই উপায়গুলো।

অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া সমস্যা দূর করার উপায়

১) মাইন্ডফুলনেস মেডিটেশন

মেডিটেশন শরীর ও মনের অনেক উপকার করে থাকে, তার মধ্যে অনিদ্রা দূর করা অন্যতম। এটি আপনার স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে, মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বুস্ট করে। ২০১১ সালে স্টাডি ট্রাসটেড সোর্স এক গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত মেডিটেশন ইনসমনিয়া দূর করতে এবং ঘুমের প্যার্টানে পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় ১৫ মিনিট করে মেডিটেশন করার প্র্যাকটিস করুন। কিছুদিনের মধ্যে পরিবর্তন দেখতে পাবেন।

২) ল্যাভেন্ডার অয়েল থেরাপি

অনেক বছর ধরেই অ্যারোমাথেরাপি বেশ জনপ্রিয়। ল্যাভেন্ডার অয়েল মুড ইম্প্রুভ করতে, মাথা ব্যথা কমাতে এবং ভালো ঘুমের সহায়ক হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বালিশে ল্যাভেন্ডার অয়েল স্প্রে করে রাখতে পারেন। সামান্য অ্যাসেনশিয়াল অয়েল নিয়ে ঘাড়ে, পিঠে ম্যাসাজ করে নিতে পারেন।

৩) ঘুমের নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করা

আমাদের শরীরে সার্কেডিয়ান রিদম নামক একটি নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা আছে। একে দেহঘড়িও বলা হয়। এটি শরীরকে দিনের বেলা সক্রিয় রাখে এবং রাতের বেলা ঘুম ঘুম ভাব নিয়ে আসে। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘুম থেকে উঠে এবং নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার ফলে দেহঘড়িতে একটি রুটিন তৈরি হয়। এই রুটিনে অভ্যস্ত হয়ে গেলে ঘুমের সমস্যা অনেকটা দূর হবে।

৪) ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত খাবার

ম্যাগনেসিয়াম মূলত এক ধরনের খনিজ পদার্থ। এটি পেশীকে শিথিল করে এবং স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে। এটি ভালো ঘুমের সহায়ক। ডার্ক চকোলেট, বাদাম, অ্যাভোকাডো এগুলোতে ম্যাগনেসিয়াম আছে। ম্যাগনেসিয়াম সাপ্লিমেন্টের পরিবর্তে এই খাবারগুলো খেতে পারেন। সফট ড্রিংকস, ক্যাফেইন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

৫) মেলাটোনিনযুক্ত খাবার

আমাদের স্লিপ সাইকেল বা ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে এমন একটি হরমোন যার নাম ‘মেলাটোনিন’। ঘুমের একটি নির্দিষ্ট রুটিন মেনে চলার মাধ্যমে মেলাটোনিন প্রাকৃতিক উপায়ে বৃদ্ধি করা যায়। ডিম, দুধ, মাছ, কলা, বাদাম, মাশরুম, আখরোট এগুলো মেলাটোনিন বৃদ্ধি করতে হেল্প করে। দুশ্চিন্তা না করা, স্ক্রিন টাইম লিমিটেড রাখা- এগুলোও আপনাকে সাহায্য করবে ঘুমের বায়োলজিক্যাল সিস্টেম ঠিক রাখতে।

৬) ব্যায়াম করা

ব্যায়াম শুধু যে শরীর ঠিক রাখে তা নয়, নিয়মিত শরীরচর্চা আপনাকে প্রশান্তির ঘুমও দিবে। ২০১৫ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, ইনসমনিয়া সমস্যাগ্রস্ত কিছু মানুষকে নিয়মিত ব্যায়াম করানো হয়। এসময় তাদের অনিদ্রাজনিত সমস্যা অনেকাংশে কমে যায়। প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ মিনিট ব্যায়াম করুন। তবে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার ৩ ঘন্টা আগে ব্যায়াম পরিহার করুন।

৭) ৪-৭-৮ পদ্ধতি

ইনসমোনিয়া দূর করতে দারুণ একটি পদ্ধতি হলো ৪-৭-৮। এটি যোগব্যায়াম থেকে অনুপ্রাণিত এক ধরনের শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি। এই ব্যায়াম স্নায়ুতন্ত্রকে আরামদায়ক অবস্থায় নিয়ে যায় এবং দুশ্চিন্তামুক্ত রাখে। প্রথমেই জিভকে সবচেয়ে সামনের দিকে ওপরের দাঁতের পেছনে নিয়ে যেতে হবে। এরপর ‘হুশ’ শব্দ করে বড় একটি শ্বাস ছাড়তে হবে। ঠোঁট দুটো বন্ধ করে ৪ পর্যন্ত গুনে আবার শ্বাস গ্রহণ করতে হবে। তারপর শ্বাস আটকে রেখে মনে মনে ৭ পর্যন্ত গুনতে হবে এবং এ পদ্ধতির চূড়ান্ত পর্যায়ে আবারও একটি ‘হুশ’ শব্দে বড় একটি শ্বাস ছাড়তে হবে। এ সময় মনে মনে ৮ পর্যন্ত গুনে যেতে হবে। এই পদ্ধতিটি মোট ৩ বার পুনরাবৃত্তি করতে হবে।

এই কাজগুলোর সাথে সাথে ঘুমাতে যাওয়ার আগে এক গ্লাস গরম দুধ পান করতে পারেন। নিয়মিত এই নিয়মগুলো মেনে চললে অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া সমস্যা দূর হয়ে যাবে। তাহলে আজ এই পর্যন্তই, ভালো থাকবেন।

ছবি- সাটারস্টক

লেখা- নিগার বর্ষা

The post অনিদ্রা বা ইনসমনিয়া সমস্যা? জেনে নিন দ্রুত ঘুমানোর দারুণ কিছু কৌশল! appeared first on Shajgoj.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

Trending Articles