আমরা আমাদের নিজেদের স্ট্যাটাস বজায় রাখবার জন্য বসার ঘরের সাজসজ্জার পেছনে যে টাকা খরচ করি, শোবার ঘরের বেলায় কিন্তু তারচেয়ে অনেক গুণ কম খরচ করি। কিন্তু এর কারণ কী? কারণটা হচ্ছে, সেটা বাইরের মানুষ দেখতে পাচ্ছে না। অথচ হওয়া উচিৎ ছিল তার উল্টোটা। কারণ, দিন শেষে শোবার জায়গাটিই আমাদের স্বস্তি দেয়। এ ব্যাপারটি যে শুধু আমাদের আসবাবের ক্ষেত্রেই হচ্ছে এমনটা নয়। আমাদের পোশাকের ক্ষেত্রেও এমনটাই দেখা যায়। আমরা নামিদামি ব্র্যান্ড কিংবা ফ্যাশন হাউজের জামা হাজার টাকা খরচ করে বিনা দ্বিধায় কিনে ফেলছি। কারণ, তা আমাদের সোশাল স্ট্যাটাসে প্রভাব ফেলে। কিন্তু অপরদিকে, ব্রা কিংবা অন্তর্বাস যেটা আমাদের জন্য বেশি প্রয়োজন সেটার পেছনে অর্থ খরচ করতে আমরা নারাজ। কারণ এটা তো কেউ দেখছে না! একটা ব্রা আমরা অনেকগুলো আউটফিটের সাথে পরি এবং ঘুমানোর সময় ছাড়া সারাদিনই পরে থাকি। তাই এ জিনিসটা আরামদায়ক হওয়া আমাদের জন্য বেশি জরুরী। অথচ নিত্যদিনের ব্যবহার্য অন্তর্বাস কিংবা ব্রা টি কমফোর্টেবল না হলে আপনার সুন্দর ড্রেসের ফিটিংও ভালো দেখাবে না, আর আপনি সারাদিন উসখুস করতে থাকবেন ডিসকমফোর্টে।
এখন শেয়ার করছি আমার একটি বাস্তব এক্সপেরিয়েন্স, যে অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় প্রায় সব মেয়েদেরই।
আমার বয়স এখন ৩২।
যখন বয়স ১১, তখন আম্মা প্রথমবার ব্রা কিনে এনে দিয়েছিলেন, সেটা গেঞ্জি কাপড়ের এক লেয়ারের ব্রা ছিলো। যার দাম ছিল ১০০ টাকা! আর বলাই বাহুল্য, ঐ জিনিস পরার পর দেখলাম আমার কামিজের ওপর দিয়ে আমার ব্রেস্টের শেইপ, খুব ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছিল। সেই ছোট বয়সে বেশ অস্বস্তি বোধ করছিলাম তখন। সেই ১১ বছরের ছোট্ট আমাকে সমাধান হিসেবে আম্মা বললেন, ওড়না পরতে! তাহলে আর কিছু বোঝা যাবে না!
এরপর একটু বড় হলাম। গেঞ্জি কাপড় থেকে পেলাম চিকেন কাপড়ের ব্রা, দাম ২৫০ টাকা। সেটাও যথারীতি এক লেয়ারের একটা কাপড়। চিকন স্ট্র্যাপ টাইট হয়ে কাঁধের ওপর দাগ ফেলে দিত, আর আম্মার নির্দেশ অনুযায়ী ৩ নম্বর হুকে টাইট করে পরতাম। কিন্তু এখানেও আগের সমস্যাই। ব্রেস্ট শেইপ বোঝা যাওয়া, আন্ডারআর্মের কাছে ব্রেস্টের বালজিং সহ সব সমাধান একটাই- ওড়না পরে ঢেকে রাখা।
এরপর হলাম আরেকটু বড়, পারচেজ পাওয়ার বাড়লো। ভাবলাম প্যাডেড ব্রা কিনি, তাহলে হয়তো ভালো কাভারেজ পাওয়া যাবে। কিনেও ফেললাম প্যাডেড ব্রা, যা কিনা বাংলাদেশে সবাই ফোমের ব্রা হিসেবেই চেনে। এবার দেখি প্যাডেড ব্রা এর নামে আসলে কিনেছি অনেক ফোমের পুশ আপ ব্রা! যাতে ওয়্যারও আছে, এবং সেটা দেখতে এবং পড়তে সবভাবেই আনকমফোর্টেবল।
এরপর মুখোমুখি হলাম আরেকটি অভিজ্ঞতার। কিনলাম লেইসের ব্রা এবং পড়লাম জর্জেটের জামার সাথে। দেখলাম লেইসের প্রতিটা ভাজ এবং খাঁজ জামার ওপর দিয়ে বোঝা যাচ্ছে, এমনকি ব্রা এর ওপর ট্যাংক টপ পরলেও, যথারীতি ওড়না দিয়ে সামনের অংশ ঢাকলাম, কিন্তু পেছনের ফিটিং জামার ওপর দিয়েই বোঝা যেতে লাগলো।
এভাবেই স্কুল, কলেজ এবং ভার্সিটি জীবন পার করে জীবনের নতুন অধ্যায় আসলো। নতুন মা হবো, বাচ্চা পেটে আসার পর ব্রেস্টের শেইপ চেইঞ্জ হলো, ওজন বাড়লো। বড় বোন আমাকে একটু বড় ব্রা কিনে দিল। যা ছিল চিকন ফিতার এক প্রকার ঢলঢলে ব্রা। প্রেগন্যান্সি এবং ব্রেস্টফীডিং পিরিয়ডে এমনি তখন ব্রেস্ট কিছুটা ঝুলে যায়, তার উপর এই সাপোর্ট বিহীন ব্রা! অথচ সেগুলো ভালো একটি দোকান থেকে অ্যারাউন্ড ৭০০ টাকা করে কিনেছিলেন।
এই গল্পগুলোর সাথে অনেকেই রিলেট করতে পারবেন আমি জানি। এসব অভিজ্ঞারতার পাশাপাশি সঠিক মেজারমেন্টের ব্যাপারে না বোঝা কিংবা কিনতে যেয়ে দোকানীর বাঁকা চাহুনি তো আছেই। এসব কিছু মিলেই আমাদের দেশে মেয়েদের ব্রা পরা কিংবা কেনার অভিজ্ঞতা।
এত শত অভিজ্ঞতার পর আমার এই উপলব্ধি এসেছে যে, আমার কমফোর্টের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিছু নেই! এবং আমার ব্রা টা আমার ড্রেসের চেয়ে অনেক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এখন ২০০ টাকার চারটা ভিন্ন কালার এবং ডিজাইনের ব্রা না কিনে আমি ৮০০ টাকা দিয়ে একটা বেসিক কমফোর্টেবল টিশার্ট ব্রা শুধুমাত্র এই কারণেই কিনি।
কী করবেন তাহলে ভাবছেন?
এসব দিক বিবেচনা করে সাজগোজ নিয়ে এসেছে রেগ্যুলার ইউজের সুপ্রিম কোয়ালিটির ব্রা। সাথে আছে কিছু ফ্যান্সি আইটেম আছে, সেগুলোতেও কমফোর্ট এবং কোয়ালিটিকে সর্বোচ্চ প্রায়োরিটি দেওয়া হয়েছে। ব্রা কেনা নিয়ে যত প্রশ্ন আছে যেমন- কী রকম ব্রা পরবেন, কী সাইজের পরবেন, কী ফ্যাব্রিকের পরবেন, ব্রা কীভাবে ধুবেন, কোন বয়সে কীরকম শারীরিক গঠনে কেমন ব্রা পরবেন, এ সব ধরনের উত্তর নিয়েই সাজগোজ আছে আপনাদের সাথে। স্কিন ও হেয়ার কেয়ারের পাশাপাশি আপনার জন্য সঠিক লঞ্জেরি আইটেমটি কিনতে ভিজিট করতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সুন্দর থাকবেন।
ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক
The post অন্তর্বাস কিংবা ব্রা নিয়ে আপনার অভিজ্ঞতাটি কেমন? appeared first on Shajgoj.