আমাদের অনেকেই হয়তো মেকআপ করছি, কিন্তু সুন্দর করে সেটা ব্লেন্ড হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে অনেক সময় বুঝে উঠতে পারছি না কোন ব্রাশটা চোখের কোন কর্নারে ব্যবহার করবো। আবার দাম দিয়ে ব্রাশ কিনে ব্যবহার করার পরেও কেনার পরেও কম্ফোর্ট ফিল করছি না। মেকআপ করতে গিয়ে প্রথমদিকে আমিও এমন অনেক সমস্যা ফেইস করেছি। গত কয়েক মাস ধরে আমি একটি ভালোমানের ব্রাশ সেট ব্যবহার করা শুরু করেছি এবং ১টি ব্রাশ সেটেই পরিপূর্ণ মেকআপ সাঁজ পেয়ে স্যাটিসফাই হয়েছি। সেই ব্রাশ সেটটি হচ্ছে গ্রুমি প্রফেশনাল রোজ গোল্ড ১০পিস মেকআপ ব্রাশ সেট উইথ ব্যাগ। ব্যবহার করার পর মনে হলো, ব্রাশ সেটটা নিয়ে একটা রিভিউ লিখে ফেলি। তাহলে যারা একেবারে নতুন তাদেরও বুঝতে সুবিধা হবে যে, কোনটা কখন ব্যবহার করতে হবে।
গ্রুমি প্রফেশনাল রোজ গোল্ড ১০ পিস মেকআপ ব্রাশ সেটের পরিচিতি
গ্রুমি প্রফেশনাল রোজ গোল্ড মেকআপ ব্রাশ সেটটিতে ১০ পিস ব্রাশ আছে। ফেইসে ব্যবহার করার জন্য ৫টি এবং চোখে ব্যবহার করার জন্য ৫টি ব্রাশ রয়েছে। ব্রাশগুলো খুব সুন্দর একটি গোলাপি রঙের ব্যাগের মধ্যে থাকে। ব্রাশের বডিতে হাই-এন্ড প্লাস্টিকের হ্যান্ডেল দেয়া। নরম সিনথেটিক হেয়ার দিয়ে ব্রাশটির ব্রিসেল অংশটি তৈরী করা হয়েছে।
ফেইসে ব্যবহার করার জন্য ব্রাশ
ফাউন্ডেশন ব্রাশ – ফাউন্ডেশন সঠিকভাবে অ্যাপ্লাই করতে হলে ভালো মানের একটি ফাউন্ডেশন ব্রাশের জুড়ি নেই। লিকুইড ফাউন্ডেশন ব্যবহার করার জন্য মোটা এক ধরনের ব্রাশ ব্যবহৃত হয়। এই সেটে ওভাল সেপের ব্রাশটি হচ্ছে ফাউনডেশন ব্রাশ। একে কাবুকি ফ্ল্যাট ফাউন্ডেশন ব্রাশও বলে। পুরো ফেইস জুড়ে এই ব্রাশের কারসাজি চলে। আপনি চাইলে এ ব্রাশটি দিয়ে খুব সহজেই কনট্যুরও করতে পারবেন।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
পাউডার ব্রাশ – এই ব্রাশটি দিয়ে ফেইস পাউডার দেয়া হয়। এছাড়া চোখের নিচে লুজ পাউডারও এই ব্রাশ দিয়ে দেয়া যায়। অনেক সময় আই-মেকআপ করার পর চোখের নিচে ডাস্ট পরে। অর্থাৎ আই-শেড গুড়ি গুড়ি পরে বেইজ মেকআপ নষ্ট হয়ে যায়। তখন এই গুড়াগুলো ক্লিন করার জন্যও এই ব্রাশ ব্যবহার করা হয়।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
ব্লাশ ব্রাশ – ফুল ফেইস মেকআপ ছাড়াও কিন্তু আমরা অনেকেই ব্লাশ অ্যাপ্লাই করতে পছন্দ করি। মুখের একটি বিশেষ অংশে ব্যবহার হয় বিধায় ব্রাশটি পাউডার ব্রাশ থেকে একটু ছোট।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
কনসিলার ব্লাশ – কনসিলারের কাজ খুবই সূক্ষ্ম হয়। তাই কনসিলার ব্যবহারের ব্রাশটিও সূক্ষ্ম হতে হবে। সেটটিতে কনসিলার ব্রাশটি একটু এঙ্গেল করা। যাতে গালে ঠিক মতো কনসিলার লাগানো যায়, একটু অ্যাঙ্গেল করে।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
হাইলাইটার ব্রাশ – মেকআপ করার সময় হাইলাইটার দিতে পছন্দ করে না এমন মানুষ কমই আছে। এই ব্রাশটি অনেক ফ্লাফি এবং নরম। পাউডার ব্রাশের মত দেখতে কিন্তু এই ব্রাশটি আঁকারে একটু ছোট। খুব সহজে এবং সুন্দর করে এই ব্রাশটি দিয়ে হাইলাইটার দেয়া যায়।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
চোখের সাঁজে ব্যবহার করার জন্য ব্রাশ
কনসিলার ব্রাশ – আইলিডে এবং আন্ডার আই এরিয়াতে ডার্ক-সার্কেল হাইড করার জন্য এবং আইব্রো ডিফাইনের জন্য কনসিলার অ্যাপ্লাই করা হয় এই ব্রাশটি দিয়ে। এছাড়া মুখে ব্রণের দাগ ঢেকে দেয়ার জন্যও এই ব্রাশটি অনেক কার্যকরী। আর আই-লাইনার বা লিপস্টিক ছড়িয়ে গেলে এই আই-কনসিলার ব্রাশটি দিয়ে তা ঠিক করা যায়।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
আইশেড ব্রাশ – ব্রাশটি আই-মেকাআপের বেসিক একটি টুল। আই-লিডে এই ব্রাশটি দিয়ে বেসিক মেকআপ থেকে পার্টি মেকআপ সহ সব ধরনের মেকআপের ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা যায়।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
ছোট আইশেড ব্রাশ – চোখের আইলিডে এই ব্রাশটি দিয়ে সূক্ষ্ম কাজগুলো করতে অনেক সহজ হয়। এই ব্রাশটি দিয়ে ঝটপট কাজ সেরে ফেলা যায়।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
হাইলাইটার ব্রাশ – চোখের ইনার কর্নারে এবং আইব্রো বোন- এ হাইলাইট করার জন্য এই ব্রাশটি অনেক কার্যকরী। এছাড়া নাকের ওপর হাই-লাইট করার জন্যও এই ব্রাশটি ব্যবহার করা যায়।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
আই-ব্লেন্ডার ব্রাশ – চোখে আইশেড যত ব্লেন্ড করা হয়, শেড ততো বেশি সুন্দর করে বসে। ব্লেন্ডিং এর ওপরে চোখের সাঁজ নির্ভর করে। শুধু অ্যাপ্লাই করলেই হয় না, ব্লেন্ড করেও চোখের কালার একটির সাথে আরেকটি সুন্দর করে মিশিয়ে চোখ ফুটিয়ে তোলা যায়।
Image may be NSFW.
Clik here to view.
ব্যবহারের পর আমার অভিজ্ঞতা
লোকাল ব্রাশ থেকে এর পার্থক্য হলো এর নরম তুলির মত অংশটি। আমাদের মুখের ত্বক অনেক নরম হয়। তাই ব্রাশ কেনার সময় তুলির অংশটির দিকে খেয়াল করে কেনা উচিত। আমার যেসব দিক ভালো লেগেছে এই ব্রাশ সেটের তা হলো-
১। ব্রাশের ব্রিসেলসের ঘনত্ব অনেক বেশি।
২। ব্রিসেলসগুলো অনেক ঝরঝরে।
৩। রেগুলার ব্যবহার করার জন্য ভালো একটি সেট।
৪। প্রোডাক্ট সব সুন্দর করে ব্লেন্ড হয়।
৫। অনেক সময় দেখা যায়, ব্রাশের মধ্যে প্রোডাক্ট লেগে থাকে। যার ফলে প্রোডাক্ট বেশি নষ্ট হয়। এই ব্রাশগুলো ব্যবহার করার পর বুঝলাম, এ ব্রাশগুলো ব্যবহারে প্রোডাক্ট নষ্ট হয় না।
৬। রেগুলার ক্লিন করে যত্ন সহকারে ব্যবহার করলে ব্রাশ সেটটি অনেক দিন ব্যবহার করা যাবে।
এই ব্রাশ সেটটি ব্যবহার করার পাশাপাশি এর প্যাকেজিংও অনেক ভালো লেগেছে। আর ব্রাশটির দামটাও কিন্তু অনেক রিসেনেবেল লেগেছে, মাত্র ৯৯০টাকা। আমি অনলাইন বেসিসে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনেছি। তাছাড়া সাজগোজের দুইটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে, যা যামুনা ফিউচার পার্কে ও সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। চাইলে শপে গিয়ে দেখে কিনে নিতে পারেন। আর অথেনটিক প্রডাক্টের জন্য সাজগোজ আমার ভরসা।
The post ১টি ব্রাশ সেটেই পরিপূর্ণ মেকআপ সাঁজ appeared first on Shajgoj.