এখন প্রায় দিনই ভোরবেলায় আর বিকেলের দিকে বেশ মিষ্টি একটা ঠাণ্ডা বাতাসের ছোঁয়া পাওয়া যায়।ওয়ারড্রব থেকে গরম কাপড়ও নামিয়ে গায়ে জড়ানোর সময়। শীতকাল আর ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টাতে অনেকের কাছেই অনাকাঙ্ক্ষিত অতিথি হিসেবে হাজির হয় জ্বর, সর্দি-কাশির মত সমস্যা। গুরুতর আকারে সমস্যা দেখা দিলে হয়তো ওষুধ খাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকেনা আমাদের কাছে। একটু খেয়াল করে চললেই কিন্তু এসব থেকে দূরে থাকা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন ভেতর থেকে সুস্থ থাকা। আমাদের প্রতিদিনের খাবারে একটুখানি এদিক ওদিক করলেই কিন্তু তা সম্ভব। চলুন তাহলে জেনে নিই, কোন খাবারগুলো আমাদের শীতের এসব অসুখ থেকে দূরে থাকতে সাহায্য করবে।
১) আদা – ঠাণ্ডা লাগলে আদা দিয়ে চা আমরা সবাই খাই। আদা মিউকাস ভেঙে শ্বাসতন্ত্রকে পরিষ্কার রাখে। এছাড়াও আদায় রয়েছে ফাইটোকেমিক্যালস যা ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডার মোকাবেলা করে। তাই এখন থেকে বিকেলের নাস্তায় রাখতে পারেন এক কাপ আদা চা। যা আপনাকে রাখবে ভেতর থেকে সুস্থ।
২) রসুন – রসুনের রয়েছে অ্যানটিভাইরাল ও অ্যানটিব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টি, যা ঠাণ্ডা, কাশি ও সাইনুসাইটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে। সাধারণত প্রতিদিন ২/১ টি কাঁচা কোয়াই ঠাণ্ডা প্রতিরোধের জন্য যথেষ্ট।
৩) মাশরুম – মাশরুম আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে সাপোর্ট করে। এতে আছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ডি যা ইমিউন ফাংশন ভালো রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন ইনফেকশন প্রতিরোধ করে।
৪) জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার – জিঙ্ক হোয়াইট ব্লাড সেল বৃদ্ধিতে সহায়তা করে যা আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে ভালো রাখে। তাই ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে বাঁচতে জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার যেমন – গরুর মাংস, বাদাম, ডিম,দই, দুধ, ডার্ক চকলেট ও বিভিন্ন রকম ডাল এগুলো বেশি করে খান ।
৫) শীতের সবজি- শীতে বাজার ভরা থাকে নানা ধরণের সবজি দিয়ে। বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের সবজিতে থাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ , সি ও ই।
৬) ভিটামিন সি- প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার আমাদেরকে ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে কেননা এতে রয়েছে অ্যানটিঅক্সিডেনট প্রপার্টি। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দিনে ৬০- ৯০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি এর দরকার হয়, যা আপনি খুব সহজেই একটি কমলা থেকে পেতে পারেন। তাই এসময় প্রচুর পরিমানে লেবু, কমলা, আঙুর, ব্রকলি, টমেটো ও ক্যাপসিকাম খান।
৭) গাজর – গাজরে আছে প্রচুর বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পর ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। এটি আমাদের থ্রোট ফাংশনকে ভালো রাখে।
৮) মাছ- বিভিন্ন তৈলাক্ত মাছ যেমন রুই, বোয়াল, টুনা এগুলোতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে অমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। যা ইমিউন সিস্টেমকে ভালো রাখে।
৯) চিকেন সুপ – সুপ জিনিষটা আমারা সকলেই খেতে পছন্দ করি। আর অসুস্থ হলে তো কথাই নেই। কিন্তু অসুখ- বিসুখ হবার আগেই এই খাবারটি নিয়মিত খেলে আপনি ঠাণ্ডাজনিত যেকোনো সমস্যা থেকেই দূরে থাকতে পারবেন। আর ওপরে যেসব জিনিসের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোর ব্যবহারও আপনি একসাথেই করতে পারবেন। তাই বেশি করে আদা-রসুন, গাজর-ব্রকলি, ডিম আর অনেকটা লেবুর রস মিশিয়ে তৈরি করুন চিকেন সুপ। উষ্ণ এই তরল খাবারটি হালকা ঠাণ্ডায় খেতে যেমন ভালো লাগবে তেমনি আপনাকেও রাখবে ভেতর থেকে একদম ফিট।
লিখেছেন – মাহাবুবা বীথি
ছবি - অ্যামেরিকানপ্রেগ্নেন্সি.অর্গ, ওয়ালকু.নেট