কফি বিশ্বব্যাপী খুবই জনপ্রিয় একটি পানীয়। বর্তমানে, জনপ্রিয়তার দিক থেকে চায়ের পরেই এর অবস্থান। আমার মত যারা কফি প্রেমী আছেন তাদের জন্য আজকের এই লেখা। যাই হোক, কফি কিন্তু শুধু পানীয় হিসেবেই ব্যবহৃত হয় না এর আরো অনেক ব্যবহার রয়েছে। ত্বকের যত্নেও কফির রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। কফি উজ্জ্বল ত্বক পেতে সাহায্য করে। মুখের জন্য তৈরি কফি মাস্ক ত্বকের পরিষ্কারক হিসেবে কাজ করে, এর পাশাপাশি এটি বিশেষভাবে স্কিন টাইটেনিং-এরও কাজ করে। আজ আপনাদের দেখাবো কিভাবে মাত্র ৪ টি স্টেপ ফলো করে কফি মাস্ক তৈরি করতে হবে এবং এই মাস্কটি ব্যবহার করে কিভাবে আপনার ত্বক আগের চেয়ে উজ্জ্বল ও কোমল হবে। আমার নিজের কাছে এই মাস্ক-টি খুবই ভালো লেগেছে, এবার আপনারাও ইউজ করে দেখতে পারেন। আশা করি আশানুরূপ ফল পাবেন।
কফি মাস্ক তৈরির প্রয়োজনীয় পণ্য
- কফি গুঁড়া ১ টেবিল চামচ
- বিশুদ্ধ মধু প্রয়োজনমত
- পরিষ্কার পাত্র
কফি মাস্ক তৈরির পদ্ধতি
ধাপ ১: আপনি অনেককেই কফি স্ক্রাব ব্যবহার করতে দেখে থাকবেন। কিন্তু সেটা সবসময় কার্যকর হয় না। তাই সব রকম ত্বকের জন্য এই মাস্ক-টি ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এটা আসলেই খুব কার্যকর। যাই হোক, সবার প্রথমে ১ টেবিল চামচ কফি ব্লেন্ডার-এ গুঁড়া করে নিন। এবার এটি একটি পরিষ্কার শুকনো পাত্রে ঢেলে নিন।
ধাপ ২: এবারে পাত্রে রাখা কফি পাউডারের উপর খাঁটি মধু ঢালুন। দেখতে খুব মজাদার লাগছে তাই না? আমি তো এর সাথে দুধ মেশাতে গিয়ে মেশাই নি, মনে হচ্ছিলো এক কাপ খেয়েই ফেলি!! কিন্ত লোভটা আপাতত সংবরণ করলাম! যাই হোক! মধুটা এমনভাবে নিতে হবে যেন খুব সুন্দর এবং মসৃন একটা পেস্ট তৈরি হয়।
ধাপ ৩: আপনার পছন্দ মত একটি চামচ নিন এবং খুব আলতোভাবে কফি পাউডার এবং মধু মেশাতে থাকুন। মেশাতে থাকুন ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না খুব মসৃণ একটি পেস্ট তৈরি হয়। ভালোভাবে মেশানো হয়ে গেলে আপনার মুখের উপর এটি প্রয়োগ করুন। পুরো মুখে এবং গলায় মাস্ক-টি আলতো হাতে লাগিয়ে নিন। এটি খুব সহজে ছড়িয়ে যাবে না তাই কয়েকটি স্তরে মাস্ক-টি মুখে ও গলায় লাগিয়ে নিন। মাস্ক-টি আপনার ত্বকে খুব দ্রুত বসে যাবে এবং আপনার স্কিন-এ টাইট ফিল হবে তাই কথাবার্তা না বলে শান্ত থাকুন। ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
ধাপ ৪: ১৫-২০ মিনিট পর মাস্ক-টি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি দিয়ে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন। তারপর একটি নরম তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে মুখ মুছে নিন এবং ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম লাগিয়ে নিন।
স্কিনের জন্য কফি মাস্কের উপকারিতা
- কফি ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধিকারক হিসেবে পরিচিত এবং আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী। এই সাধারণ একটি মাস্ক থেকে যদি রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় তাহলে অনেক টাকা খরচ করে ব্লাড সার্কুলেশন বৃদ্ধিকারক তেল বা লোশন কিনতে যাওয়ার কোন মানেই হয় না।
- কফিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস যা ত্বকের সব ধরনের উপকার সাধন করে থাকে।
- নিয়মিত ব্যবহারে এই মাস্ক-এ থাকা মধু স্কিন টাইট করে এবং ত্বকে গ্লো এনে দেয়। আপনার অবশ্যই এটা ট্রাই করা উচিত।
- প্যাক-টি ব্যবহার করার পর আপনি আপনার ত্বকে স্মুথনেস ফিল করতে পারবেন।
- কফি এবং মধুর সুন্দর সুগন্ধ আপনার মস্তিষ্কে একধরনের প্রশান্তি এনে দিবে।
- প্যাক-টি সপ্তাহে একবার ব্যবহারে আপনার ত্বক আগের চেয়ে টাইট, উজ্জ্বল, কোমল এবং মসৃণ হবে।
- ডার্ক সার্কেল দূর হয়।
- স্কিন-এর ইনফ্লেমেশন থেকে মুক্তি দেয়।
- মরা চামড়াগুলোকে দূর করে নরম সুন্দর ত্বক নিশ্চিত করে।
দেখলেন তো, সাধারণ এই কফি মাস্ক-এর কত অসাধারণ গুণ! তাই আর দেড়ি না করে কফির মগ-টা দূরে রেখে কিছুটা কফি নিয়ে মাস্ক-টি তৈরি করে ফেলুন। স্কিন টাইটেনিং- এর এই কফি মাস্ক আসলেই যে অসাধারণ এটা আপনি প্রথম বার ব্যবহারের পরেই অনুভব করবেন।
লিখেছেন- নাইমা আক্তার
ছবি- ইউটিউব.কম