Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

কাজের চাপ?…দূরে থাক!!

$
0
0

কাজের চাপ, সকাল থেকে সন্ধ্যে অব্দি এই একই কথা আপনি নিজেও বলবেন, আপনার চারপাশের মানুষকেও বলতে শুনবেন। শুনলেই কেমন যেন ক্লান্তি লাগে। তবে এর মাঝেও কিছু কিছু মানুষ আছেন, যাদেরকে আপনি কখনই অস্থির হতে দেখবেন না, সেটা পরীক্ষা হোক, কিংবা কাজের ডেডলাইন। তাদের দেখলে কেমন যেন একটা স্বস্তির ভাব হয়। তাহলে তারা এমন কী উপায় জানেন, যে তারা সবসময় এতরকম কাজের চাপ থেকে মুক্ত থাকেন? নিশ্চয়ই কিছু একটা উপায় আছে তাদের! কিন্ত সেগুলো কী? সেই আলোচনাই করবো আজ।

 

প্রথমত, কাজের চাপ থাকবেই, কিন্ত সেটাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে, নইলে আদতে সেটা আপনার প্রোডাক্টিভিটি কমাবে বই বাড়াবে না! উপরন্ত, ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাওয়া বা এংজাইটি-এর মত সমস্যা দেখা দেবে। দ্বিতীয়ত, কাজের চাপকে কখনই বাড়িতে নিয়ে আসা যাবে না বা ব্যক্তিগত জীবনের সাথে মেলানো যাবে না।

দিনের শুরু করুন তাড়াতাড়ি

দিন তখনই তাড়াতাড়ি শেষ হবে যখন আপনি দিন তাড়াতাড়ি শুরু করবেন। এক্ষেত্রে দুই ধরনের মানুষ দেখেছি আমি যারা অফিসে আসেনই দেরি করে। দশটায় অফিস, অথচ আসবেন এগারোটা বাজার দশ মিনিট আগে, আনুষঙ্গিক সব শেষ করে কাজ শুরু করতে এগারোটা। আরেক ধরনের মানুষ আছেন, যারা দশটায় অফিস বলে নয়টা পর্যন্ত ঘুমুবেন, তারপর ছুটতে ছুটতে অফিসে পোঁছাবেন। প্রথম ক্ষেত্রে যেটা হবে, দেরি করে কাজ শুরু করলে আপনার অফিসের কাজ কখনই ঠিক সময়ে শুরু হবে না। আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে যেটা হয়, এই দেরি করে অস্থির হয়ে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছালে এই অস্থিরতা সারাদিন ধরেই আপনাকে ভোগাবে। আর তাছাড়া সকালে একটু তাড়াতাড়ি উঠে বাসা থেকে বের হবার আগেই কাজের তালিকা ঠিক করে নিলে দেখবেন দিনের শুরুটা হবে অনেকটা স্বস্তির সাথে।

কাজ ভাগ করে নিন

ধরুন একটা প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করতে হবে বা বিশাল কোন রিপোর্ট তৈরি করতে হবে। এই ধরনের কাজ দেখলেই মনের ভেতরে অশান্তি শুরু হয়ে যায়। কাজের পরিমান দেখে প্যানিক না করে বরং পুরো কাজটাকে কয়েকটি ছোট ছোট অংশে ভাগ করে নিন এবং প্রত্যেক অংশের জন্যে নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন। পুরো কাজের চাপ মাথায় না নিয়ে বরং কাজের ঐ অংশটুকু ভালভাবে শেষ করার চেষ্টা করুন। এতে করে প্যানিক হওয়া থেকে বাঁচবেন, প্লাস ঐ অংশ শেষ হলে এক ধরনের মানসিক প্রশান্তিও পাবেন।

কাজের মধ্যে ব্রেক নিন

একটানা ৯০ মিনিটের বেশি কাজ করবেন না। এতে শারীরিক  এবং মানসিক স্ট্রেস দুটোই বাড়ে। কাজের প্রতি বিরক্তি আসবে, ব্যাক পেইন হবে, মাথা ধরবে। তাই দেড় ঘণ্টা কাজের পরে মিনিট দশেকের জন্য ব্রেক নিন। একটু হেঁটে আসুন বা চোখ বন্ধ করে রিলাক্স করুন।

লাঞ্চ

কাজের যায়গায় বসে লাঞ্চ করবেন না কখনই। নিজের ডেস্ক ছেড়ে অন্য কোথাও, হয়তো একটা জানালার পাশে বসে, পরিবারের কারো সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে লাঞ্চ সেরে নিন। অনেকটাই রিফ্রেশ লাগবে।

দেয়াল তৈরি করুন

কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে একটি লাইন দাঁড় করান। খুব সহজ কিন্ত। কাজ শেষ করে রিফ্রেশিং বা পছন্দের কোন একটা কাজ যেমন মেডিটেশন, সাঁতার কাটা, হাঁটা, ছোটখাটো কোন এক্সারসাইজ ইত্যাদি। অর্থাৎ এই কাজগুলো করার পরেই আপনি কাজের পরিবেশ থেকে আলাদা হয়ে বাসার পরিবেশে ঢুকবেন বা ব্যক্তিগত কাজ শুরু করবেন। এতে করে অফিসের কাজের চিন্তা মাথা থেকে বের হয়ে যাবে।

ছুটি নিন

ভালোভাবে কাজ করার জন্য ছুটি কাটানো খুব দরকার। লম্বা ছুটি নয়। মাসের একটা বা দুটো দিন পুরোপুরি কাজের পরিবেশ থেকে আলাদা হয়ে যান, যেখানে আপনি কাজের কোন ফোন কল, ইমেল- কোনকিছুরই উত্তর দেবেন না। নিজেকে এইভাবে ডিসকানেক্ট করতে পারলে দেখবেন নতুন করে কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়েছে, কাজটাকেও আর বোঝা বলে মনে হচ্ছে না।

সবশেষে বলবো, কাজের প্রতি সিরিয়াস হওয়ার চেয়ে কাজের প্রতি সিনসিয়ার হওয়া বেশি জরুরী। নিষ্ঠার সাথে কাজ করুন, সময়ের কাজ সময়ের মধ্যেই শেষ করার অভ্যেস করুন, ডেডলাইন-এর আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন না। আর কাজের চাপ থাকবেই, এই নিয়ে প্যানিক না হয়ে ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করুন।

ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।

 

লিখেছেন- মাহবুবা মিমি

ছবি- ইমেজেসবাজার.কম


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

Trending Articles