বাঙালীর প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। তাই এই উৎসবে সবাই একসাথে মেতে উঠার জন্য অনেক আগে থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রস্তুতি। আর এবারও সাজগোজে ভিন্ন কিছু আনতে চাচ্ছেন তরুণীরা !
তবে এই গরমে কেনাকাটার ভিড় ঠেলে উঠা কঠিন হলেও নববর্ষ বলে কথা! তাই রঙবেরঙের শাড়ি ছাড়াও নয়ন ভোলানো সাজগোজ করতে কেনাকাটা করছেন সবাই।
এই দিন ভোরবেলা থেকেই শুরু হয় নানারকম অনুষ্ঠান। তার উপর যদি গরম থাকে তাহলে সারাদিন অস্বস্তিতে ভুগতে হয়। তাই সাজটা খুব ভারী না হয়াই ভালো, ন্যাচারাল সাজেই ভিন্ন রূপ নিয়ে আসলে মন্দ হয় না।
পোশাক
সুতি লাল-সাদা শাড়ি, সালওয়ার-কামিজ বেছে নেয়া ছাড়াও অন্য রঙও পরতে পারেন । তবে এ সময় হালকা রঙের পোশাক আরামদায়ক হবে। শাড়ি খুব আঁটসাঁট ভাবে না পরে হালকা ঢোলাভাবে পরে নিবেন। যেমন বাঙালী স্টাইলে মেয়েরা পরে থাকেন তেমন। এতে হাঁটতেও আরাম হবে এবং গরম বেশি লাগবেনা।
শাড়ির মতো সালওয়ার-কামিজও খুব ফিটিং করে না বানানোই ভালো। এতে সারা দিন ফুরফুরে থাকতে পারবেন। ভিন্ন স্টাইলের সালওয়ার কামিজ পাওয়া যাচ্ছে অনেক জায়গায়। এছাড়াও আরামদায়ক ফতুয়া বেছে নিয়ে পারেন । রঙিন সুতি কাপড়ে হালকা হাতের কাজ করা বা ব্লকের ফতুয়া পাওয়া যাচ্ছে এখন সব জায়গায়।
মেকআপ
গরমে মেকআপ করলে অস্বস্তি লাগবেই। তাও এই দিনে মেকআপ একটু না করলে কি হয়! তাই হালকা মেকআপের জন্য ফাউন্ডেশন ব্যবহার না করে বিবি ক্রিম ব্যবহার করুন। কারণ ফাউন্ডেশন বিবি ক্রিমের থেকে ভারী হয়ে থাকে। আর ভারী মেকআপ বেশিক্ষণ থাকলে অনেকেরই ত্বকে সমস্যা হয়।
মুখ ভালোমতো ধুয়ে ফেসিয়াল করে নিন। এবার মুখে বরফ ঘষে নিন এতে মেকআপে আপনার ত্বকের ক্ষতি হবে না। এরপর ৫ মিনিট অপেক্ষা করে সানস্ক্রিন লাগিয়ে নিন। বিবি ক্রিম ব্যবহার করুন। শেষে প্রেসড-পাউডার ব্যবহার করুন। এতে মুখ উজ্জ্বল থাকবে। এমন হালকা বেজ-মেকআপে সারাদিন স্বাচ্ছন্দ্যে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।
চোখের সাজ
বাঙালী মেয়েদের চোখের সাজের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো কাজল। তাই আইলাইনার দেয়ার পর গাঢ় করে কাজল লাগিয়ে নিন। চাইলে আইস্যাডো ব্যবহার করতে পারেন তবে সেটা হালকা সাজের হলে ভালো হয়। দুপুরে চোখে আইস্যাডো-মেকআপ হালকাই মানায়।
ঠোঁটের সাজ
নিজের ত্বকের রঙের সাথে মিলিয়ে যে কোন গাঢ় রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করুন। তবে এই দিনে সবাইকেই লাল রঙ ভালো মানায়। ঠোঁটে লাল রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করলে মুখের হালকা মেকআপের সাথে দারুণ মানিয়ে যাবে।
চুলের সাজ
গরমে চুল ছেড়ে না রেখে ছোট করে খোঁপা বা বা সাইড খোঁপা করে নিতে পারেন। চাইলে কয়েকটা ফুল খোঁপার আড়ালে লাগিয়ে নিতে পারেন। লাল বা সাদা রঙের ফুল খোঁপায় দারুণ ফুটে উঠবে। আর যদি বেলিফুলের মালা গুজে নিতে পারেন তাহলে তো কথাই নেই! এতে মাথা বেশি ভার লাগবে না। গরমে স্বস্তি আর ফ্যাশন হবে একই সাথে।
সালওয়ার কামিজ বা ফতুয়ার সাথে উচু করে পনিটেইল বা খোঁপা মানিয়ে যায় বেশ।
গহনা
শাড়ির সাথে চুড়ি তো লাগবেই। তবে কানের,গলার, হাতের জিনিস সব একসাথে পড়লেও সাজটা ভারী যায়। তাই নিজের মতো যেকোনো অল্প গহনা বেছে নিন। একগোছা চুড়ি একহাতে পরে নিন, খোঁপার সাথে ছোট ঝুমকা বেশ মানিয়ে যায়। বেশি ভারী গহনা না পরে আরাম পাবেন এমন হালকা গহনা পড়ুন। চিকন মালা পরতে পারেন চুড়ির রঙের সাথে মিলিয়ে। চুড়ি কম পরলেও হাত সাজাতে নেইলপলিশ আর মেহেদী লাগিয়ে নিতে পারেন। এতে হাতের সাজ পরিপূর্ণ দেখাবে।
শুধু কানের দুলের সাথে মিলিয়ে পরতে পারেন রূপার নথ। হালকা সাজে রূপার গহনাও মানানসই। ভিন্ন স্টাইলের সালওয়ার কামিজ বা ফতুয়ার সাথে এতো কিছু না পরে উচু করে পনিটেইল বা খোঁপার সাথে চুড়ি আর কানের ছোট দুল পরে নিন।
টিপ
সাজের শেষ করুন টিপ লাগিয়ে। আর এটা হতে হবে শাড়ির রঙের সাথে মিলিয়েই। বড় টিপ এদিনে বেশ মানিয়ে যায়।
এই দিনে বেশি হাটা হাটি হয় তাই মজবুত অল্প হিলের জুতা বা স্লিপার পরে নেয়া ভালো। এই বৈশাখে গরমে স্বস্তির পাশাপাশি স্নিগ্ধতা নিয়ে আসুন সাজ পোশাকে।
মডেল – ফারহানা তিথি
ছবি – সাজগোজ ফটো অ্যালবাম
লিখেছেন – সোহানা মোর্শেদ