দারুন সফট আর নরম তুলতুলে স্পঞ্জি। স্পঞ্জ রসগোল্লা। আমরা এই মিষ্টিকে স্পঞ্জ মিষ্টিও বলে থাকি। শক্ত হবে না আর ভেঙ্গেও যাবে না, একদম পারফেক্ট হবে। দেখে নেয়া যাক পারফেক্ট স্পঞ্জ রসগোল্লা তৈরির পুরো প্রণালী।
উপকরণ
- দুধ ১ লিটার
- লেবুর রস বা ভিনেগার ১-২ টেবিল চামচ
- চিনি ১ কাপ
- সাদা এলাচ ২ টি
- গোলাপ জল আধা চা চামচ
- পানি ৪ কাপ
প্রণালী
( ১ ) প্রথমে একটি পাত্রে দুধ নিয়ে চুলায় ফুটতে দিতে হবে । দুধ প্রথমবার ফুটে বা উতলে ওঠা মাত্র চুলা বন্ধ করে দিতে হবে। তারপর দুধের মধ্যে অল্প করে লেবুর রস বা ভিনেগার দিতে হবে আর চামচের সাহায্যে নেড়ে মেশাতে হবে । এভাবে করতে করতে যখন হালকা সবুজ পানি বের হয়ে ছানা আর পানি আলাদা হয়ে যাবে, তখন লেবুর রস দেয়া বন্ধ করতে হবে ।
( ২ ) এরপর সাথে সাথে একটা পাতলা কাপড়ের সাহায্যে ছানা থেকে গরম পানি ছেকে ফেলে দিয়ে ট্যাপের নিচে নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে যেন ছানাতে লেবুর রস বা ভিনেগারের গন্ধ না থাকে। এবার কাপড়ের পুটলিকে হাত দিয়ে চেপে চেপে পানি যতটুকু বের করা যায় করতে হবে। তারপর ছানার বাকি পানি ঝরার জন্য কয়েক ভাঁজ করে রাখা শুকনা সুতি কাপড়ের উপর ছড়িয়ে দিয়ে হাত দিয়ে আলতোভাবে ডলে নিতে হবে ।
( ৩ ) এভাবে ৫ মিনিট করলে ছানার পানি শুকনা কাপড় শুষে নিবে । বেশি জোরে ডলে বেশি শুকিয়ে ফেলবেন না, ছানা নরম থাকবে যেন ছানা দিয়ে বল বানানো যায়। তারপর ছানা স্পঞ্জ রসগোল্লা তৈরীর জন্য রেডি।
রসগোল্লার জন্য সিরা তৈরী
চুলায় একটি ছড়ানো পাত্রে ৪ কাপ পানি, ১ কাপ চিনি ও ২ টা সাদা এলাচ দিয়ে জ্বালিয়ে চিনি আর পানি ভালোভাবে মিশে গেলেই চুলার আঁচ কমিয়ে অল্প করে রেখে দিতে হবে ।
রসগোল্লা প্রস্তুত প্রনালী
( ১ ) স্পঞ্জ রসগোল্লা তৈরিতে ছানার সাথে কিছুই মেশানোর প্রয়োজন নেই , শুধু ছানা ১০ মিনিট ধরে ভালোভাবে হাত দিয়ে ডলে মথে নিতে হবে । এতো ভালোভাবে মসৃন করে মথে নিতে হবে যেন ছানার মধ্যে কোনো দলা দলা না থাকে এবং বল বানালে খুব মসৃন বল হয় ।
( ২ ) এরপর মথে নেওয়া ছানা দিয়ে একটু বড় করে বল বানাতে হবে, কারণ স্পঞ্জ মিষ্টি নরমাল রসগোল্লার চেয়ে সাইজে একটু বড় হয় । বল মসৃন না হয়ে ফেটে গেলে আবার ভালো করে মথে নিয়ে তারপর বল বানাতে হবে ।
( ৩ ) সবগুলো বল বানানো হয়ে গেলে সিরার আঁচ বাড়িয়ে মাঝারি করে দিতে হবে এবং গোলাপজল দিতে হবে । সিরা ফুটতে শুরু করলে বলগুলো একসাথে সিরাতে ছেড়ে দিতে হবে এবং ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ৫ মিনিট ফুটাতে হবে । এ অবস্থায় মিষ্টি নাড়াচড়া করা যাবে না ৫ মিনিট পর চুলার আঁচ কমিয়ে অল্প করে আরো ১০ মিনিট জ্বাল দিতে হবে। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে সিরা যেন বেশি ঘন না হয় ।
( ৪ ) এরপর রসগোল্লা হয়ে গেছে কিনা তা চেক করার জন্য একটা বাটিতে নরমাল পানিতে একটা রসগোল্লা ছেড়ে দিতে হবে। যদি ডুবে যায় তবে বুঝবেন হয়ে গেছে। না ডুবলে আরো ৫ মিনিট অল্প আঁচে সিরায় জ্বালাতে হবে ।
স্পেশাল টিপস
এই মিষ্টি বানাতে ছানায় পানি থাকা যাবে না, পানি থাকলে মিষ্টি ফেটে যাবে, ভেঙ্গে যাবে । আবার ছানা বেশি শুকিয়ে ফেলা ও যাবে না, এতে ছানা শক্ত হয়ে যাবে মসৃন মিষ্টি বানানো যাবে না । আর সিরায় বেশি সময় জ্বালালে মিষ্টি শক্ত হয়ে যাবে । মনে রাখবেন, রসগোল্লা আর স্পঞ্জ রসগোল্লা এক নয় উপকরণ, প্রস্তুত প্রনালী এবং টেষ্ট সব কিছুতেই সামান্য পার্থক্য আছে ।
পরিবেশন
স্পঞ্জ রসগোল্লা হয়ে গেলে নামিয়ে ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন, এই স্পঞ্জ মিষ্টি হালকা গরম খেতেও অসাধারন লাগে। আমার রেসিপি ফলো করে ঠিকমত বানাতে পারলে আর দোকানের মিষ্টি ফ্রি পেলেও খেতে চাইবেন না, এটা আমার গ্যারান্টি । এই উপকরণে ৬-৭ জনকে পরিবেশন করা যাবে।
ছবি ও রেসিপি – আফরুজা শিল্পী