শুভ্রতার ছোঁয়া নিয়ে শরৎ এলো আবার। প্রকৃতির ছয়টি কালের একটি ঋতু এই শরৎ, যেই কালে সাদা মেঘের মতন কাশফুল ফোটে। এই কাশফুল প্রকৃতির এক দারুণ আকর্ষণ।পাথরের নগরীরও আছে কাশফুলের সৌন্দর্যময় আবেদনে সাড়া দেয়ার তাড়না। তাই নগরবাসী খুঁজতে শুরু করবে, কোথায় দেখা মিলবে বিস্তৃত কাশবনের, মাঠে ফুটে থাকা মেঘফুলের রাজ্যে মিশে যাওয়া যাবে কোথায়। খোঁজ শুরু হবার এখনই সময়। রাজধানীর ভেতর আর আশেপাশে ফুটে থাকা কাশফুলের খোঁজখবর নিয়েই এখানে কথা হবে। দু’চোখ ভরে শুভ্রতা দেখার বাসনা থেকে হোক বা নেহাৎ সাদা ক্যানভাসে রঙের ছোঁয়া লাগিয়ে নিজেকে ছবিবন্দী করার ইচ্ছে, কাশবনের কাছে একটিবার নিশ্চয় যেতে চাইবেন?
দিয়াবাড়ি
উত্তরার দিয়াবাড়ি জায়গাটা কাশবনের বাস হিসেবে ভালোই লোকচেনা হয়ে গেছে। কাছাকাছির মধ্যে থাকায় মানুষজন সেখানে ভীড় জমাবে এই সময়। কাশফুলের মাঝে ছবি তোলার হিড়িক পড়বে মেয়েদের। এসব বাড়াবাড়িতে বিরক্ত হয়ে হয়তো কোন বেরসিক মানুষ আর ওইমুখো হবে না দিনকয়েক। দূরে কোথাও যেতে মানা হলে আপনার কাশবন দর্শন দিয়াবাড়িতেই হতে পারে। দেখার জায়গা হিসেবে দিয়াবাড়ি খারাপ নয়, তবে যতো কাছ থেকেই যান না কেনো ফিরতে হবে সন্ধ্যা নামার আগে।
দক্ষিণখান
এই এলাকায় খানিক বড়সড় পরিসরে কাশের বন দেখার সুযোগ হতে পারে। খিলক্ষেত বাজার হয়ে উত্তরমুখী রাস্তায় দেখা পাবেন কাশফুলেদের। রাস্তার দুপাশ জুড়েই কাশের রাজ্য। চোখ জুড়িয়ে যাবে, মন তো জুড়োবেই। কোথাও হারিয়ে যাবার মানা না থাকলে বেরিয়ে পড়ুন একদিন এই পথে। কাশবনের আনন্দ ভরপুর নেয়া যাবে।
আশুলিয়া
কাশফুলের আরেক রাজ্য এই আশুলিয়া।মিরপুর বেড়িবাঁধ হয়ে আশুলিয়ার দিকে চলে যান, কাশবনের দেখা মিলবে। সড়কপথের ভ্রমণটাও মন্দ হবে না কোন এক শরৎশুভ্র দিনে। এলোমেলো বাতাসের সাথে খোলা রাস্তায় হেঁটে বেড়ানো, দুইধারে সাদা মেঘের মতন ফুলের মেলা, একটা দিন ভালো যেতে আর কী লাগে?
কেরানীগঞ্জ
ঢাকার কাছেই জায়গাটা, একদিন সময় করে ঘুরে আস্তে পারেন এখানে। শহর থেকে পালানো হবে, ঘুরে বেড়ানোর স্বাদ সেই সাথে কাশবনে হারিয়ে যাবার হাতছানি, মন্দ হবে না। একটা গোটা দিনের চড়ুইভাতিই হয়ে যাক না ঢাকার বাইরে এভাবে?
পদ্মার চর
প্রমত্তা পদ্মার বুকে বসত গড়া চরেও কাশফুলেরা আছে। মাওয়ার শিমুলিয়া ঘাট থেকে যাত্রা করতে পারেন কোন চরের উদ্দেশ্যে, নদীতেও ভ্রমণ হয়ে যাবে এক সুযোগে। চরে পৌঁছে কাশফুলের দেখা তো মিলবেই। তবে এমন নির্জন কোন জায়গায় যেতে হলে নিরাপত্তার বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে সবার আগে। শহরের ভেতরেও কাশবনগুলো অনেক নিরিবিলি হতে পারে। তাই সাবধান থাকতে হবে সেসব জায়গায়। নিজের সুরক্ষা তো নিজেরই হাতে, সেদিকে খেয়াল থাকা চাই।
ছবি – ওয়াশিংটনবাংলা.কম
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব>