মেকাপ সচেতন নারীরা কম-বেশি সবাই কনসিলার ও কালার কারেক্টার শব্দ দুটির সাথে পরিচিত। কালার কারেক্টারের সাথে না হলেও কনসিলার চেনে না এমন মেয়ে নেই বললেই চলে। অনেকে আছেন উভয় বস্তুকেই একই বা এক রকম কাজ করে বলে মনে করেন; যা ঠিক নয়। তাই আজ জানাবো এ দুটি প্রোডাক্টের মিল-অমিল ও ব্যবহার সম্পর্কে।
কনসিলার
কনসিলার-নাম শুনেই বুঝা যাচ্ছে যে কিছু কনসিল করবে বা ঢেকে দেবে। নিজের গায়ের রঙের সাথে মিলানো কনসিলার চেহারার খুঁতগুলোকে ঢেকে আকর্ষণীয় ফিচারগুলো আরো একটু ফুটিয়ে তুলতে অতুলনীয়। এরা সাধারনত রেগুলার ফাউন্ডেসনের চাইতে হালকা হয়ে থাকে। লিকুইড, ক্রীমী উভয় ধরণের কনসিলারই পাওয়া যায়।
কালার কারেক্টার
কালার কারেক্টার কনসিলারের ন্যায় স্কিনের রঙের হয় না বরং বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। এরা সাধারণত মুখের ভিন্ন ভিন্ন দাগ ঢাকতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এরা সাধারণত কনসিলারের চেয়ে ঘন ও ভারী আর ক্রীমি হয়। চলুন এবার জেনে নেই কোন রঙের কালার কারেক্টার কোন কাজে লাগে-
(১) বেগুনী
হালকা বেগুনী বা ল্যাভেন্ডার রঙের কালার কারেক্টার চেহারার হলদেটে ভাব দূর করে, ডালনেস কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায় আর ফ্যাকাসে ভাব নির্মূল করে।
(২) গোলাপী
গোলাপী রঙের কালার কারেক্টার চেহারার বাদামী ভাব দূর করে, কালো দাগ ও ডালনেস কমিয়ে উজ্জ্বলতা বাড়ায়, বয়সের ছাপ ও সান স্পট লুকাতে সাহায্য করে। কুল আন্ডারটোনের অনেক ফর্সাদের জন্য এ রঙের কারেক্টার বেশ উপযোগী।
(৩) হলুদ
হলুদ রঙের কালার কারেক্টার চেহারার বেগুনী ভাব দূর করে, লালচে দাগ কমায়, চোখের নিচে যে বেগুনী বা নীলচে ক্যাপিলারী দেখা যায় সেগুলো ঢাকার কাজ করে ও সম্পূর্ন মুখের রঙের সমতা আনতে সাহায্য করে।
(৪) সবুজ
হালকা সবুজ রঙের কালার কারেক্টার চেহারার লালচে ভাব দূর করে, রোদে পোড়া ত্বক, রোজাসিয়া, উইন্ড বার্ণ, তীব্র লাল দাগ ও কাঁচা ব্রণের লাল ভাব ঢাকতে ব্যবহৃত হয়।
(৫) লাল
লাল রঙের কালার কারেক্টার চেহারার সবুজাভ ভাব দূর করে। একটু গাঢ় রঙের ত্বকে চোখের আশ-পাশের কালো ভাব ঢাকতে খুব ভাল কাজ করে। যাদের ট্যাটু আছে এবং সাময়িক ভাবে ঢেকে রাখতে চান তাদের জন্য খুবই ভাল।
(৬)কমলা
কমলা রঙের কালার কারেক্টার চেহারার নীলাভ ভাব দূর করে। শ্যামলা ত্বকের ডার্ক সার্কেল ও ছোট খাট কালো দাগ ঢাকতে উপকারী।
(৭)পিচ
পিচ রঙা কালার কারেক্টার কমলা রঙের মতই কাজ করে তবে খুব বেশি ফর্সা ত্বকে বেশি উপযোগী।
ব্যবহার
-কনসিলারের ব্যবহার তো সবার ই জানা আছে। ত্বককে উজ্জ্বল করতে ফাউন্ডেশনের সাথে মিশিয়ে যেমন ব্যবহার করা যায় তেমনি ত্বকের চেয়ে হালকা রঙের কনসিলার দিয়ে সুন্দরভাবে হাইলাইটিং ও গাঢ় রঙের কনসিলার কন্টরিং করা যায়।
-আর প্রয়োজন ভেদে যার চেহারাতে যে ধরণের দাগ রয়েছে সে উপযোগী কালার কারেক্টার চেহারাকে করে তুলতে পারে নিখুঁত, দাগমুক্ত-ঠিক যেমনটি আপনি চান।
প্রোডাক্ট লিস্ট
সাধ ও সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতে সক্ষম এমন কিছু কনসিলার হল-
- মেবিলিন ফিট মি কনসিলার
- এল.এ গার্ল প্রো এইচডি কনসিলার
- মেবিলিন এইজ রিউইন্ড কনসিলার
- রেভলন ফটোরেডি স্টিক কনসিলার
- মুয়া মেকাপ একাডেমী কাভার গার্ল কনসিলার
আরো দামের মধ্যে কিনতে চাইলে-
- নিক্স এইচডি কনসিলার
- ম্যাক প্রো লং ওয়ার কনসিলার
- কোস্টাল সেন্টস (এক্লিপ্স প্যালেট, ক্যামোফালাজ প্যালেট )
- ববি ব্রাউন ক্রীম কনসিলার
- লরা মারসিয়ার সিক্রেট কনসিলার
- নারস রেডিয়েন্ট ক্রিমি কনসিলার
তাছাড়াও , বিএইচ কসমেটিক্স, মেকাপ রেভুলিউশন এর ক্যামোফালাজ প্যালেট রয়েছে; যেখানে আপনি পাবেন একই সাথে ৬-১০ রঙের কনসিলার। আর কালার কারেক্টার পাবেন নিক্স, ই.এল.এফ, বিএইচ কসমেটিক্স ইত্যাদি ব্র্যান্ডের। এরা সিঙ্গেল ও প্যালেট দুই ভাবেই পাওয়া যায়।
ব্যবহারোপযোগী টুলস
কনসিলার ব্রাশ, বিঊটি ব্লেন্ডার এমনকি আঙ্গুলের মাধ্যমেই ব্যবহার করতে পারেন। তবে সবচেয়ে ভাল হল মাইক্রো বা মিনি সাইজের বিউটি ব্লেন্ডার ব্যবহার করা।
কোথায় পাবেন?
আপনাদের অতি পরিচিত, ভরসা ও ভালোবাসার জায়গা ‘SAPPHIRE’-এ ।
ছবি – গ্ল্যামহ্যাক.কম,টাইনিটাচআপ.কম,মাইটপফেস.কম
লিখেছেন – রোজা স্বর্ণা