রূপচর্চায় প্রাকৃতিক উপাদানের উপকারিতা সম্পর্কে নতুন করে বলার কিছু নেই। প্রাকৃতিক উপাদানের কোন ক্ষতিকর পার্শপ্রতিক্রিয়া না থাকায় পৃথিবী জুড়ে নারীদের কাছে তা অত্যন্ত জনপ্রিয়। আজকে আপনাদের এমন তিনটি উপাদানের রূপচর্চায় বিভিন্ন ব্যবহার সম্পর্কে জানাব যা আপনাদের রূপচর্চায় এক নতুন মাত্রা যোগ করবে।
কলা
কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং ন্যাচারাল অয়েল যা আমাদের ত্বক ও চুলের যত্নে অত্যন্ত উপকারি। এছাড়া কলায় রয়েছে এন্টিব্যাক্টেরিয়াল এজেন্ট যা ত্বককে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা প্রদান করে এবং ব্লেমিস দূর করতে সাহায্য করে। একটি কলা, এক টেবিল চামচ মধু এবং এক টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল ভালোভাবে ম্যাশ করে মুখে লাগিয়ে নিন। ১৫-২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন আর পান দীপ্তিময় ও আকর্ষনীয় ত্বক নিমিষেই।
চুলের ডীপ কন্ডিশনিং এ কলার অন্য কোন জুড়ি নেই। একটি কলা ও এক টেবিলচামচ মধু ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন।তারপর চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট অপেক্ষা করে শুধু পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। হাতে ম্যাশ করে নিতে পারেন তবে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিলে ধোয়ার সময় সুবিধা হয়। কলার কোষগুলো চুলে লেগে থাকে না। প্যাকটি ব্যবহার করার পর আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন চুল কতটা সিল্কি আর শাইনি হয়ে গেছে।
শুধুমাত্র ত্বক কিংবা চুল নয়, পায়ের গোড়ালি ফাটা রোধেও কলা কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। পা ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন। এবার দুইটি পাকা কলা ম্যাশ করে পায়ের গোড়ালিতে লাগিয়ে নিন। এসময় পা মোজা বা কোন পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঢেকে নিন। ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
গ্রীন টি ব্যাগ
গ্রীন টিতে রয়েছে ক্যাফেইন ও ট্যানিন এসিড যা ত্বকের ফোলাভাব দূর করে ত্বককে প্রাণবন্ত করে তুলতে সাহায্য করে। তাই চোখের নিচের ডার্ক সার্কেল ও ফোলাভাব দূর করতে এটি অনেক বেশি কাজ করে। দুইটি ব্যবহৃত গ্রীন টি ব্যাগ নিয়ে ফ্রীজে রেখে ঠান্ডা করে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে টি ব্যাগ দুইটি দুই চোখের উপর রেখে ১৫-২০ মিনিট শুয়ে থাকুন। আর পার্থক্য আপনি নিজেই দেখে নিন।
ত্বকের যত্নে গ্রীন টি ফেসিয়াল স্টীম অনেক বেশি উপকারী। এটি ত্বকের বন্ধ লোমকূপগুলো খুলে দিয়ে ত্বককে ব্রণ, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। একটি বোলে পাঁচ কাপ পানি গরম নিয়ে এতে দুইটি গ্রীন টি ব্যাগ দিয়ে ২ মিনিট অপেক্ষা করুন। এবার বোলের উপর কিছুটা ঝুকে মাথা টাওয়াল দিয়ে ঢেকে ৫ মিনিট স্টীম নিন। তবে স্টীম নেবার সময় ততটাই ঝুকবেন যতটা তাপ আপনার ত্বক সহ্য করতে পারে।
বাদামী চিনি
স্ক্রাব হিসেবে অনেক আগে থেকেই বাদামী চিনি ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। ত্বকের ডেডসেল দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল করে তুলতে বাদামী চিনির বিকল্প নেই। এটি সাদা চিনি থেকে বেশ স্মুথ হয় যা সবধরনের ত্বকের জন্য বেশ উপযোগী। ঠোটের উপর জমে থাকা মরা চামড়া দূর করতে সমপরিমাণ বাদামী চিনি, মধু ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে হালকাভাবে ২ মিনিট ম্যাসাজ করে নিন আর পান কোমল, প্রাণোচ্ছল ঠোট।
বডি স্ক্রাবিং এর ক্ষেত্রেও বাদামী চিনির জুড়ি নেই। ১ কাপ বাদামী চিনির সাথে ১/৩ কাপ অলিভ অয়েল এবং একটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিয়ে হাত, পা, পীঠ ও ঘাড়ে ভালো করে ম্যাসাজ করে নিন। ম্যাসাজ করার পর ৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ধোয়ার পর দেখবেন বডিতে একটা ন্যাচারাল গ্লো চলে এসেছে। তাই রূপচর্চায় আর বাজারে তৈরি সামগ্রী কেনই বা ব্যবহার করবেন?
ছবি – বিউটিটিপস.কম
লিখেছেন – মুশরাত জাহান দোলা