একেকটা রোজা পার হচ্ছে আর ঈদ-উল-ফিতর একটু একটু করে এগিয়ে আসছে। কোথাও ঢিলেঢালাভাবে আবার কোথাও বা জোরেশোরে, চলছে ঈদের প্রস্তুতি। নিজেকে তৈরি করার প্রস্তুতিও চলুক পুরো সময় জুড়েই। ঈদের দিনটায় প্রাণোচ্ছল থাকতে হলে আগে থেকে নিজের খেয়াল তো রাখতেই হবে। কী করবেন, কেমন হবে নিজের যত্নআত্তি করার পর্ব, দেখে নিন এইখানে।
চুল কাটিয়ে নিন বেশ আগেভাগেই। জানেন নিশ্চয়, নতুন হেয়ারকাট চুলে মানিয়ে যেতে কিছুটা সময় নেয়। তাই বিউটি এক্সপার্টদের পরামর্শ মেনে অন্তত এক সপ্তাহ আগে চুল কাটানো উচিত। যদি দিন পনেরো আগেই বিউটি স্যালুন ঘুরে চুলের বন্দোবস্ত করতে পারেন সেটা আরো ভালো।
ঈদের দুই তিনদিন আগে চুল কাটানোর চিন্তা করাটা বোকামি। কেননা এই অল্প সময়ের মাঝে নতুন একটা হেয়ারকাট আপনার চুলে আর চেহারায় খাপ খেয়ে যাবে, সেটা নাও হতে পারে। তখন বড্ড বেমানান দেখাবে। কাজেই চুলের দিকে নজর দিন আরো আগে। সম্ভব হয় যদি, ঈদের কিছুদিন আগে একবার পার্লার থেকে কোন হেয়ার ট্রিটমেন্ট করিয়ে আসতে পারেন। স্পা করানো যায়, তাতে চুল অনেক প্রাণবন্ত লাগবে।
কমবেশি সকলেরই যেটা হয়, মুখের ত্বকচর্চায় মনোযোগ সবটা দিয়ে বাকি শরীরের খবর আর থাকে না। নিত্যদিন তো যেমন তেমন চলে যায়, কিন্তু বিশেষ দিনটায় গিয়ে হঠাৎ কপালে ভাঁজ পড়ে। হাতের নিষ্প্রাণ ভাব, পায়ের চামড়ার কালচে ছোপ, শুষ্কতা সবকিছু মিলিয়ে ত্বক কেমন মিইয়ে থাকে। কেবল মুখের ঝলমলেভাব তখন আপনাকে সন্তুষ্ট করবে না। এজন্য পুরো শরীরের যত্নে মনোযোগী হন আগেভাগেই। আর কিছু না হোক, অন্তত ত্বকে রোজকার আর্দ্রতার চাহিদাটুকুর যোগান দিন পছন্দের লোশন বা তেল দিয়ে। রুক্ষতা বেশি হলে বডি অয়েল ব্যবহার করাই ভালো। কম সময়ে রুক্ষতা দূর করে ত্বকে পুষ্টির জোগান দিতে তেলের জুড়ি নেই। খাঁটি নারকেল তেল ঘরে থাকলে সেটাও প্রতিদিন গোসলের আগে বা পরে লাগিয়ে নিতে পারেন সারা শরীরে। মুখের জন্য ব্যবহার করা ফেসপ্যাকটাই খানিক বাড়তি নিয়ে হাতে-পায়ে, গলায় আর ঘাড়ে অল্প করে লাগিয়ে ফেলুন মুখে লাগানোর পরে। গোসলের আগে এটা করা ভালো, কেননা গোসলে গিয়ে সব ধুয়ে ফেলা যাবে।
সময় নেই, ভীষণ ব্যস্ততা দিনজুড়ে, নিজের যত্ন করার সুযোগ বের করা মুশকিল, এমন কতো কথাই এখন মনে আসবে অনেকের। এটা সত্যি, সারাটা দিন ঘরে-বাইরে খাটুনি দিলে আর রূপচর্চা করার বিলাসিতা দেখানো হয় না। কিন্তু বাড়তি সময় না নিয়ে অন্য কাজের মাঝেই যদি নিজের জন্য ভাবা যায়, তবে? ইফতারের ভাজা খাবার তৈরিতে যদি বেসন গুলিয়ে থাকেন, তার খানিকটা তখনই মুখে লাগিয়ে নিন। হাতের কাজ সারতে সারতে ওটা মুখে শুকিয়ে যাবে, তারপর ধুয়ে নিলেই হলো। বা ফল কাটার সময় শুরুতেই ছোট এক টুকরো নিয়ে মুখে লাগিয়ে নিলেন, বাকি কাজ শেষ হবার পর মুখ ধুয়ে নেয়া হলো। কোনদিন যদি কয়েক মিনিট অবসর সময় বের করা যায়, সালাদের জন্য রাখা শসা সামান্য কুচিয়ে নিয়ে চোখের পাতায় দিয়ে বিশ্রামে যান। তাতেই যথেষ্ট পরিচর্যা করা হবে নিজের। ব্যস্ত রমণীর জীবনে এইটুকুই বা কম কী?
পার্লারে যাবার স্বভাব না থাকলে তো দরকার নেই, ঘরেই নিজের মতন নিজের যত্ন নেবেন। আর পার্লার যাওয়া হলে ঈদের অন্তত দুইদিন আগেই সেখানকার সব কাজ মিটিয়ে ফেলুন। উৎসবের আগের দিনটা ফেসিয়ালের জন্য রাখা যায় ঠিক কিন্তু পার্লারগুলোতে শেষ সময়ের ভীড় ঠেলে কতোটুকই বা শান্তিতে সেবা নিতে পারবেন! তাই ভেবেচিন্তে সব কাজ সেরে রাখুন দুটো দিন আগে। ঈদের আগের দিনে না হয় একটুখানি নির্ভার অবসর দিন নিজেকে।
ছবি – ফ্যাশনসেন্টার.পিকে
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব