আমাদের দেশে সবার কাছে এক পরিচিত নাম হচ্ছে করলা। অতিমাত্রার তিক্ত স্বাদযুক্ত করলা অনেক ভাবেই খাওয়া হয়। এমনকি অনেকে জুস করেও খেয়ে থাকেন। অপ্রিয় স্বাদের এই করলার রয়েছে অসাধারণ পুষ্টি গুণ। এতে রয়েছে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেটস, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন- এ, সি ও বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন- বি। আসুন জেনে নিই, করলার কিছু স্বাস্থ্যগুণ-
(১) রক্ত পরিষ্কার করে
করলা প্রাকৃতিক রক্ত পরিষ্কারকের কাজ করে। রক্তের কারণে অনেক সময় অনবরত মাথা ব্যাথা, এলার্জি, ক্লান্তি বৃদ্ধি পায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার হ্রাস হয়। রক্তের ইম্পিওরিটিসকে করলা পরিষ্কার অথবা ডিটক্সিফাইং করতে সাহায্য করে। নিয়মিত করলা গ্রহণে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায় এবং ত্বক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পায়। এ জন্য করলার জুসের সাথে সামান্য লেবুর রস আর মধু মিশিয়ে প্রতিদিন কালি পেটে পান করুন। এভাবে ছয় মাস পান করুন।
(২) ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে
ব্লাডে গ্লুকোজ লোয়ারিং ইফেক্টের দ্বারা করলা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এন্টি ডায়াবেটিক গুনে সমৃদ্ধ তিন ধরনের একটিভ সাবসটেন্ট রয়েছে।
(৩) লিভারের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে
হেপাটিক গুণে সমৃদ্ধ করলা লিভারের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে উপকারী ভূমিকা পালন করে। লিভারের ছাঁকন ক্রিয়ায় সহায়তা করে এটি রক্তের অপদ্রব্য পরিষ্কার করে এবং লিভারের ক্ষতিকর টক্সিন দূরীকরণ করে। আর স্বাভাবিকভাবে ক্রিয়ারত লিভার মেদবৃদ্ধির ঝুঁকি কমায়, কার্ডিওভাস্কুলারের রোগবালাই কমায়, পরিপাক সমস্যা, মাথা ব্যাথা এবং অন্যান্য অনেক ধরণের রোগ থেকে রক্ষা পেতে সহায়তা করে। তাই লিভারকে ভালো রাখতে প্রতিদিন কমপক্ষে একবার এককাপ করলার জুস গ্রহণ করুন।
(৪) কোলেস্টেরল কমায়
এই অসাধারণ সবজিটি দেহের লো- ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা কমায়। ফলে হার্ট অ্যাটাক, হার্টের রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়। তাই ডাক্তারের পরামর্শে আপনার ডায়েটে করলা রাখুন কিংবা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন।
(৫) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
নিয়মিত করলা খেলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। তাই যেকোনো ধরনের রোগ বালাই থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এজন্য করলা চাও পান করতে পারেন।
(৬) ক্যান্সার প্রতিরোধে
করলা ক্যান্সার প্রতিরোধেও সক্ষম। যে ফ্রি র্যাডিকেল ড্যামেজের কারণে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হয়, তার বিরুদ্ধে এর মধ্যে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট কাজ করে।
(৭) ওজন কমাতে সাহায্য করে
করলা ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস ও এন্টি অক্সিডেন্টের বড় উৎস, যা দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে সক্ষম। এই সবজি কার্বোহাইড্রেটের মেটাবোলিজমকে আরো দ্রুততর করে, বিধায় দেহে কম ফ্যাট জমা হয়।
(৮) অভ্যন্তরীণ কৃমিনাশক
করলাতে থাকা এন্থেলমিন্টিক কম্পাউন্ডস দেহের অভ্যন্তরীণ কৃমি থেকে রক্ষা করে। এজন্য এক সপ্তাহব্যাপী খালি পেটে অর্ধেক কাপ করলার জুস পান করুন।
এমনই আরও অনেক স্বাস্থ্যগুণে পরিপূর্ণ এই করলা। তবে কখনই দুই থেকে তিনটির বেশি করলা এক দিনে খাবেন না। গর্ভবতী মায়েরা অনেক বেশি পরিমাণে করলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলুন।
ছবি – হেলদিফুডঅ্যাডভাইস.নেট
লিখেছেন – নীল