ভ্রমন পিয়াসু মানুষেরা সময় পেলেই ঘুরতে বের হয়ে যায়। হাতে ২ দিন সময় পেলেই চলে যায় দু’চোখ যেদিকে যায়। ভ্রমন পিয়াসু মানুষের কাছে বান্দরবান একটি অতি পরিচিত নাম। কারণ প্রকৃতি তার অপরুপ চেহারা নিয়ে বসে আছে এই বান্দরবানে। যদিও অল্প সময়ে খুব বেশি কিছু দেখা যায় না এই পাহাড়ি এলাকায়, তবুও হাতে ২ দিন সময় নিয়েও ঘুরে আস্তে পারেন এই চোখ জুড়ানো শহর থেকে। ঢাকা থেকে বান্দরবান অনেকগুলো বাস যায়। হানিফ, সেন্টমার্টিন, শ্যামলি। তাছাড়াও ট্রেন এ চট্টগ্রাম হয়ে বাস এ করে যাওয়া যায় বান্দরবান শহরে।
রাতে বাস এ করে বান্দরবান এর উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করলে পরদিন সকাল ৭টা নাগাদ পৌঁছে যায়।বাস এর টিকিট এসি ৯৫০ টাকা অথবা নন এসি ৬৫০ টাকা।রাতে না যেতে চাইলে দিনেও যাওয়া যায়।তবে রাতের জার্নিটাই আরামের।হোটেল আগেই বুক করা যায়।কারো ঠিক করা না থাকলেও সেখানে গেলেই পেয়ে যাবে সাধ্য অনুযায়ী হোটেল।সময় এর উপর ভিত্তি করে ভাড়া পরবে ৫০০ থেকে ৩০০০ পর্যন্ত।
যেদিন সকালে বান্দরবান যাবেন সেই দিনটাতেই অনেকগুলো জায়গা ঘুরে ফেলা যায়।হোটেল এ ফ্রেশ হয়ে নাস্তাটা সেরে নিন।তার পর বেড়িয়ে পড়ুন শহর দেখতে।
শহরের আশে পাশে কিছু সুন্দর জায়গা আছে।সেগুলো দেখার জন্য ১ দিনই যথেষ্ট।আর সে জন্য মহেন্দ্রা ভাড়া করতে পারেন। মহেন্দ্রা হল সি এন জি থেকে আর একটু বড়। ৫-৬ জন বসা যায়। তবে যে কেউ চাইলে সি এন জি নিতে পারে। ভাড়া একই পড়ে। যাওয়ার আগে দরদাম করে নিন, ভাড়া কিছুটা বেশিই চেয়ে থাকে, দরদাম করে কমিয়ে আনুন।
কয়েকটি স্পট ঘুরিয়ে দেখাবে
(১) রামজাদী মন্দির বা রাম মন্দির
কেউ হাফ প্যান্ট পরা থাকলে সেখানে ঢুকতে পারে না। লুঙ্গি বা ফুল প্যান্ট পরা থাকতে হবে। তবে কেউ চাইলে সেখান থেকে লুঙ্গি ভাড়া নিতে পারে। ভাড়া ২০ টাকা। আর মন্দিরে ঢুকার ভাড়া ১৫ টাকা। (স্বর্ণজাদী বা স্বর্ণ মন্দির আরো একটি সুন্দর স্থান। তবে সেখানে যাবার অনুমতি নেই এখন।)
(২) মেঘলা পার্ক
শহর থেকে ৪ কিলো দূরে একটি পার্ক। এর প্রধান আকর্ষণ ঝুলন্ত ব্রীজ এবং ক্যাবল কার। ভাড়া ঢুকতে ৪০ টাকা, আর ক্যাবলকার এর ৫০ টাকা। সেখানকার কিছু সুন্দর মুহূর্ত আপনার অ্যালবামের শোভা বাড়াতে পারে।
(৩) প্রান্তিক লেক
শহর থেকে একটু দূরে একটি শান্ত লেক। অপরূপ প্রকৃতির সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মিশে আছে নীল পানি। ঢুকতে খরচ হবে ৫০ টাকা। তবে যাবার সময় কাপড় নিয়ে যাওয়া উচিত। কারন ইচ্ছে করলেই গোসলটা সেড়ে নেয়া যায়।
(৪) ন্যাশনাল পার্ক
আহামরি কিছু নেই। জঙ্গল এ কিছু প্রানী আছে। খুব বেশি ইচ্ছে না করলে, না ঢুকলেও চলে।
(৫) নীল আঁচল
এই জায়গাটা অদ্ভুত সুন্দর। সূর্য ডোবার আগে সেখানের আকাশ ২ রঙ দেয়। উপরে সাদা, নিচে নীল। তাই এর নাম নীল আঁচল। এই জায়গায় বর্ষা বা শীতকালে বেশি ভালো লাগে। তবে সূর্য ডোবার সময়টাতে এর আসল রুপ বের হয়ে আসে। তাই সন্ধ্যাটা সেখানেই পার করার চেষ্টা করুন। ইচ্ছে করলেই রাতটাও থেকে যেতে পারেন। কটেজ ভাড়া পড়বে ৩০০০ টাকা। ঢুকতে ৫০ টাকা টিকিট।
এই ৫ জায়গায় ঘুরতে সব মিলিয়ে গুনতে হতে পারে ১২০০- ১৬০০ টাকা। তবে অফ সিজনে আরো কম নিবে। সেদিন রাতেই ইচ্ছে করলে ফিরে আসতে পারেন। অথবা পরদিন চলে যেতে পারেন অন্য কোন স্থান ভ্রমন করতে।
ছবি এবং লিখেছেন – ফারিয়া ইসলাম