প্রত্যেকটা শিশুর সঠিক বৃদ্ধির জন্য দরকার পর্যাপ্ত পুষ্টি। জন্ম থেকে শুরু করে প্রতি পর্যায়ে বাচ্চাদের খাবারের চাহিদা পরিবর্তন হতে থাকে। জন্মের পর মুহূর্তে শিশুর জন্য সবচেয়ে বেশি দরকার মায়ের বুকের দুধ। যে দুধ থেকে এক টি বাচ্চা পেয়ে যায় তার চাহিদা মত সব ধরনের পুষ্টি। এই দুধই ১টি শিশুকে সব ধরনের ইনফেকশন এবং রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। আসুন ধাপে ধাপে জেনে নিই কোন বয়সে শিশুদের কোন খাবারটি দরকার।
জন্ম থেকে ৬ মাস
এই ৬ মাস শিশুর জন্য শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধই যথেষ্ট। এছাড়া কোন খাবার তাকে দেয়া যাবে না। যে বাচ্চারা পর্যাপ্ত পরিমান এ বুকের দুধ পায়, তারা সব ধরনের পুষ্টি বুকের দুধ থেকেই পেয়ে যায়। আর যদি কোন মা বাচ্চাকে দুধ দিতে না পারে তবে সে ক্ষেত্রে ফর্মুলা দুধ দিতে হবে।
এই সময় শুধু মাত্র ভিটামিন ডি এর জন্য বাচ্চাকে রোদ এ দিতে হবে। সকালের রোদটা বাচ্চাদের ভিটামিন ডি এর চাহিদা পুরণ করে থাকে।
৬-১২ মাস
এই সময়টা বাচ্চাদের বাড়ন্ত বয়স। এই বয়সেও বাচ্চাকে মায়ের দুধ দিতে হবে। ২ বছর পর্যন্ত বাচ্চাকে বুকের দুধ দেয়া যাবে। তবে এই সময়ে অন্যান্য খাবারে বাচ্চাকে অভ্যস্ত করাতে হবে। ৬ মাস এর শেষ থেকে বাচ্চাকে ফর্মুলা খাবার দেয়া যেতে পারে সেই সাথে বিভিন্ন শক্ত খাবারেও পরিচিত করতে হবে।
খাবার শুরু করুন আয়রন জাতীয় খাবার দিয়ে। এই আয়রন জাতীয় খাবার শিশুর বৃদ্ধি এবং মস্তিস্ক বিকাশ করতে সহায়তা করে। দিনে কয়েকবার এই খাবার দিতে পারেন। উদাহারণ হিসেবে বলা যায়- মুরগীর একটি কলিজা মেখে খাওয়াতে পারেন শিশুকে। অথবা মাছ খুব নরম করেও দিতে পারেন শিশুকে।
এই খাবার দেয়ার পরিমান আস্তে আস্তে বাড়াতে হবে। বাসায় তৈরি খাবারের মধ্যে একটু একটু করে খাবারগুলোর সাথে বাচ্চাকে পরিচিত করান। তাদেরকে বুঝতে দিন খাবারের বিভিন্ন স্বাদ।
বাচ্চাদের আস্তে আস্তে এমন খাবার দিন যা তারা হাতে ধরে খেতে পারবে। সেদ্ধ করা সবজি কিংবা নরম ফল হতে পারে বাচ্চাদের জন্য আদর্শ খাবার। ৯ মাস বয়সের পর বাচ্চাকে গরুর দুধ দিতে পারেন। এর আগে না দেয়াই ভালো। তাছাড়া ১ টি ডিম প্রতিদিন দিতে পারেন।
এসময় খিচুড়ি দিতে পারেন, সে ক্ষেত্রে ডাল ও চাল এর পরিমান সমান রাখা উচিত। এবং সাথে সবজি, মাছ, মাংস, ডিম মিশিয়ে নেয়া যেতে পারে।
১২-২৪ মাস
এই সময়ে আপনার বাচ্চার জন্য খাবারের বিভিন্ন গ্রুপ থেকে খাবার দেয়া প্রয়োজন।খাবারের সময়কে ঠিক করার এখনই সময়। ৫-৭ বার বাচ্চাকে একই সময়ে খাবার দিন। পরিবারে সবার সাথে তাকে খেতে দিন এবং সকলের জন্য রান্না করা খাবার থেকে বিভিন্ন খাবার দিতে থাকুন। এতে করে বাচ্চারা ভালো অভ্যাস করতে পারবে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, সবজি ও অন্যান্য খাবারগুলোতে বাচ্চাকে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করতে থাকুন।
ছোট থেকেই বাচ্চাদের খাবারের দিকে নজর রাখুন। মনে রাখবেন শিশুদের খাবার অবশ্যই মজাদার হতে হবে। কারণ তারাও খাবারের স্বাদ বোঝে।
ছবি –উইলিংলাইফ.কম
লিখেছেন – ফারিয়া ইসলাম