ভ্রমণে যাওয়া হবে, সঙ্গে যেই যাক আর না যাক নিজের পোঁটলাপুটলি তো যাবেই। বেড়াতে যাওয়া বা কাজের প্রয়োজনে বাইরে যাওয়া যেটাই হোক না কেনো ব্যাগপত্র ঠিকঠাক ভাবে গোছানো খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ। এটা হেলাফেলায় করা হলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে ভ্রমণের স্বস্তিও।
তাই সর্বোচ্চ খেয়াল রাখতে হবে ঠিক মতন ব্যাগপত্র গোছানোর দিকে। খুব দরকারের জিনিষটা যাতে বাদ না পড়ে যায়, একেবারেই কাজে আসবে না তেমন কোন জিনিষ অযথা বোঝা না হয়ে যায়, লক্ষ্য রাখতে হবে এমন সব খুঁটিনাটি বিষয়।
তালিকা ধরে কাজ হোক। বিশেষ করে ভুলোমনা লোকদের জন্য তো তালিকা বানিয়ে ব্যাগ গোছানো অবশ্য করণীয় কাজ!
খুব বুঝেসুঝে তালিকা করে নিন আপনার প্রয়োজন বা চাহিদায় মতো জিনিষগুলোর। কী কী নিতেই হবে আর কী না নিলেও চলে, জায়গা হলে তবেই নেবেন, তালিকায় আলাদা ভাবে টুকে নিন সব। বলাই বাহুল্য, প্রয়োজনের জিনিষগুলোই তালিকায় প্রাধান্য পাবে। এবারে লিস্টি মিলিয়ে ব্যাগে ভরা শুরু করুন জিনিষপাতি।
যেমন ভ্রমণ ঠিক তেমন ব্যাগপত্র হতে হবে। না বাড়তি জিনিষ আর না কিছু কম।
কেমন হচ্ছে আপনার ভ্রমণ, দরকারে যাওয়া হচ্ছে কোথাও না কেবলই প্রমোদভ্রমণ, নাকি কোন পাহাড়ি দেশে রোমাঞ্চকর যাত্রা করতে চলেছেন তার ওপর নির্ভর করে আপনার লাগেজ কেমন হওয়া উচিত। ছুটি কাটানোর জন্য গ্রামের বাড়ি বা কোন আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে যাওয়া, কোন অনুষ্ঠান উপলক্ষে কয়েকদিনের ভ্রমণে যাওয়া, আবার নিতান্তই প্রয়োজনের অফিশিয়াল ট্যুর, ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে ভ্রমণের কারন। সাথের জিনিষপত্রও সেই হিসেবেই নিতে হবে।
অনুষ্ঠান উপলক্ষ করে কোথাও যাচ্ছেন তো জামাকাপড়, অনুষঙ্গের বোঝা খানিকটা তো থাকবেই। তবে বোঝা মাত্রা ছাড়িয়ে না যায় সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে পরার কাপড়ের সংখ্যা বেশি হলে কমিয়ে নিন ঘরের কাপড়। অল্প কাপড়েই কয়টা দিন কাটিয়ে দেয়ার চিন্তা রাখুন।
অফিশিয়াল ট্যুর হলে দরকারের কাগজপত্র বা অন্যান্য কাজের জিনিষ সবার আগে খেয়াল করে ব্যাগে রাখুন। জামাকাপড় সীমিত থাকুক। বড় লাগেজের ঝামেলা যতোটা সম্ভব এড়িয়ে যান।
দেশ বা বিদেশ ঘুরতে বের হলেও ব্যাগ গোছানো হবে খুব মেপে। এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াবেন, তখন লাগেজ নিয়ে টানাটানি করাটা ভালো লাগবে? ব্যাকপ্যাক ট্যুর যারা করে তারাই কিন্তু আদর্শ ট্যুরিস্ট। দরকারের কয়টা জিনিষপত্র কাঁধে তুলে নিয়ে পুরো দুনিয়া ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ কিছু মানুষ এমন ভ্রমণে যেতেও বিশাল এক স্যুটকেস গুছিয়ে ফেলে, যা পরবর্তীতে বোঝা হয়ে ভ্রমণের আনন্দটাই ফিকে করে দিতে পারে।
আপনি যাবেন জায়গা দেখতে, জায়গা তো আর আপনাকে দেখবে না যে জামাকাপড়, গয়নাগাটির বাক্স তুলে নিয়ে যাবেন সাথে!
ভ্রমণের কাপড় গোছানোর সময় কৌশল খাটান। ছেলেদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা বেশ সহজ। তারা এক প্যান্টের সাথে চালিয়ে দিতে পারে কয়েকটা শার্ট বা টিশার্ট। তাই বলে মেয়েদের জন্যে সব কঠিন হবে, তাই বা কেমন কথা? দুটো প্যান্ট বা সালোয়ার নিন সুবিধা মতন, যেগুলোর সাথে বেশ কয়েকটি কামিজ আর কুর্তি মানিয়ে যাবে। তবেই তো লাগেজ কতো হালকা হয়ে যাবে। পোশাক নিন হালকা উপাদানে তৈরি, ভারী কাজের না হয় যাতে এবং ভাঁজ করা গেলে বেশ ছোট আকৃতির হয়ে যাবে তেমন। তাহলে ব্যাগে জায়গা কম লাগবে। হালকা হবে আপনার ব্যাগ।
প্রসাধনীর সামগ্রী কিছু তো নিতেই হয়, তাই বলে বড় বড় কৌটো সব ব্যাগে ভরে বোঝা বাড়ানো কাজের কথা হলো না মোটেও। ঘরে থাকা খালি ছোট কৌটো ধুয়ে পরিষ্কার করে তাতে প্রয়োজন মতো ভরে নিন প্রসাধন সামগ্রী। লোশন, শ্যাম্পু, ফেসওয়াশ এগুলো এই উপায়ে নেয়া যাবে সহজেই।
ওষুধ এবং শুকনো খাবার সামগ্রী নিতে হলে আলাদা আলাদা ছোট প্যাকেটে ভরে ব্যাগের কাছাকাছি জায়গায় রাখুন। দরকারের সময় চট করে পাওয়া যায় যেনো।
কেবলই জায়গা দেখতে যাওয়া যদি হয় ভ্রমণের উদ্দেশ্য তবে বড় ব্যাগের ভেতর অল্প কিছু জিনিষ নেয়া যাবে তেমন একটা ব্যাগ রাখা যায়। বেড়ানোর জায়গা থেকে কাছাকাছি ঘুরে আসার জন্য কাজে লাগতে পারে।
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব
ছবি – ওয়াশ্যাক.কম