অনেকেই নিশ্চয়ই ওয়েলস এর ক্যাস্টর অয়েল, আমনড অয়েল ইউজ করে ফেলেছেন ইতিমধ্যেই… আমিও অনেকদিন আগে একবোতল ওয়েলস ক্যাস্টর অয়েল কিনেছিলাম। দীর্ঘ বাবহারের পর হঠাৎ কয়েকদিন আগে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় একটা ফিচার দেখে এটা নিয়ে রিভিউ লেখার ইচ্ছা হল।
আর আগেই বলে রাখি, এই রিভিউতে আমি রিফাইন্ড আর আন রিফাইন্ড অর্থাৎ অপরিশোধিত ক্যাস্টর অয়েলের পার্থক্যগুলো নিয়েও কিছু কথা বলব, so, keep on reading…
দাম
আজকাল দাম বিভিন্ন দোকান ভেদে ওয়েলস রিফাইন্ড ক্যাস্টর অয়েলের দাম ১২০-১৭০ এর ভেতরে ওঠানামা করে। আমি ১৫০ টাকায় কিনেছিলাম।
কোথায় পাবেন?
যেকোনো সুপারশপ / কসমেটিক শপে খোঁজ করলেই ওয়েলস ব্র্যান্ডের পণ্য পেয়ে যাবেন।
আমার অভিজ্ঞতা
আচ্ছা, আগে বলে নেই কোন ফিচার দেখে আজকের রিভিউটা লেখার ইচ্ছা হল… নিশ্চয়ই জানেন, বাংলাদেশে দুনিয়ার এমন কোন কসমেটিক নেই যার নকল তৈরি হয় না… আমরা সাজগোজে সবসময় চেষ্টা করি, সেই নকল পণ্য গুল নিয়ে পাঠকদের সাবধান করে দিতে। নকল জিনিস কিনে ভয়ঙ্কর রোগব্যাধির ঝুঁকি নেয়ার চেয়ে আমি বরং সেলফ কেয়ার ছেড়েই দেব… এই পার্টিকুলার ফিচারটিও ছিল তেমনই নকল প্রসাধনী তৈরির এক ফ্যাক্টরিকে নিয়ে। যেখানে যেসব প্রোডাক্টের নকল রেগুলার তৈরি করা হতো তার মধ্যে একটি ওয়েলস ক্যাস্টর আর আমনড অয়েল। ভেজাল প্রসাধনী প্রস্তুতকারীরা বলেছিল, তারা এসব তেলের ভেজাল তৈরি করতে নারকেল তেল, সয়াবিন তেল আর পাম অয়েল ইউজ করে… !!
এটা দেখে সাথে সাথেই আমার মনে হল, আমার কাছে যেটা আছে সেটা আসল তো?? কিন্তু আমি কোনভাবেই প্রোডাক্টের অরিজিনালিটি নিয়ে সিওর হতে পারলাম না। কারণ নেট ঘেঁটে কোন রিভিউ বা আসল প্রোডাক্টের কোন মার্কিং সম্পর্কে কিছু দেখলাম না!! (স্বাভাবিক, ভেজালকারীরা আসল বোতলে প্রোডাক্ট ভরেই যেখানে বিক্রি করছে)
ফলাফল, আমি আমার ক্যাস্টর অয়েলের বোতল ভেঙ্গে ডাস্টবিনে ফেলেছি। রিস্ক নেয়ার সাহস হয়ে ওঠেনি…
কোন পাঠক যদি জানেন, আসল ওয়েলস প্রোডাক্টের কোন স্পেশাল মার্কিং আছে কিনা অবশ্যই আমাদের এবং অন্যান্যদের জানাবেন। এবং যারাই রেগুলার ইম্পরটেড প্রোডাক্ট ইউজ করেন, তাদের প্রতি আহ্বান জানাবো, প্লিজ, ফেলে দেয়ার আগে আপনার কসমেটিক বোতল/ প্যাকেজিংটি অবশ্যই নষ্ট করে দেবেন। নয়ত কাল হয়ত সেই বোতলে আবার আপনিই নকল প্রোডাক্ট কিনে নিয়ে আসবেন।
আমি বলছিনা, সব ওয়েলস প্রোডাক্ট নকল!! নিশ্চয়ই অনেক সৎ ব্যবসায়ি এই বিখ্যাত ব্র্যান্ডের তেলগুলো আমদানি করেন… কিন্তু নকল প্রোডাক্টের কোন রিস্ক আমি নিতে পারছি না।
দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমি এই প্রোডাক্ট এর ভালো আর খারাপ দিক আজকে বিশ্লেষণ করতে পারছি না। কিন্তু আমি ডিসিশন নিয়েছি, এরপর থেকে রিফাইন্ড ক্যাস্টর অয়েল আর ইউজ করব না। যেমন করেই হোক, আনরিফাইন্ড তেলই কালেক্ট করব। এবং অলরেডি করেছিও। পাঠকদের সুবিধার্থে, আনরিফাইন্ড ক্যাস্টর ব্লাক অয়েলের ছবি দিয়ে দিলাম…
দেখছেন, আনরিফাইন্ড তেল কত গাঢ় রঙের? সাথে সাথে এটা ওয়েলস রিফাইন্ড তেল থেকে অনেক বেশি ঘন। এবং ওয়েলস থেকে আমি তেমন কোন ঘ্রান পেতাম না… কিন্তু এই তেলটায় বেশ বাজে ধরণের একটা গন্ধ আছে।
এখন চলুন দেখে নেই রিফাইন্ড আর আনরিফাইন্ড তেলের মধ্যে কিছু তফাৎ-
রিফাইন্ড (পরিশোধিত) ক্যাস্টর অয়েল-
- একদম স্বচ্ছ, পরিশোধনের ফলে রঙ অবশিষ্ট থাকে না বললেই চলে
- তেমন কোন ঘ্রান থাকে না।
- পরিশোধনের ফলে তেলের আইওডিন, পিগ্মেনট, কমে যায়। কিছু ক্ষেত্রে কেমিক্যাল অ্যাড করে রিফাইন করার ফলে তেলের লাইভ এনজাইম ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
- পরিশোধিত তেলের সেলফ লাইফ বেশি হয়।
আনরিফাইন্ড (অপরিশধিত) ক্যাস্টর অয়েল-
- দেখতে একটু গাঢ় হলুদ। যত বেশি পরিশোধন করা হয় রঙ তত হালকা হয়।
- তেলের লাইভ এনজাইম অক্ষত থাকে।
- সেলফ লাইফ রিফাইন্ড তেলের চেয়ে একটু কম হয়।
তো, সব মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, রিফাইন্ড ক্যাস্টর অয়েলে যেহেতু আসল নকল বোঝার কোন ওয়ে পাচ্ছি না। এখন থেকে আনরিফাইন্ড ক্যাস্টর অয়েলই ইউজ করব। অন্তত, আসলটা তো চিনে নিতে পারব!!!
আমার রেটিং –
আজ কোন রেটিং করব না… যেহেতু আমি সিওর না যে প্রোডাক্টটি অরিজিনাল ছিল কিনা। আবারো মনে করিয়ে দিচ্ছি আপনাদের, প্লিজ প্রসাধনীর প্যাকেজ অবশ্যই নষ্ট করে ফেলেবেন ফেলে দেবার আগে… আর নেক্সটে আপনাদের অবশ্যই জানাবো, আনরিফাইন্ড ক্যাস্টর অয়েল ইউজ করে আমার কেমন লাগলো… !!! মাত্র শুরু করলাম তো, এখনি কিছু বলতে পারছি না…
আর হ্যা, আপনারা যদি বাজারে নকল কসমেটিক প্রোডাক্ট পান তবে সম্ভব হলে অবশ্যই আমাদের সাথে ছবি কমেন্টে/ ইনবক্সে শেয়ার করবেন। অনেকের হয়ত হেল্প হবে… আর ভেজাল কস্মেটিক তৈরি আর বিক্রি তো তখনি কমবে যখন আমরা সবাই সচেতন হব!! তাই না??
লিখেছেন – তাবাসসুম মুস্তারি মিম