Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3048

রাত জেগে রিলস দেখার অভ্যাস কি উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে?

$
0
0

বর্তমানে স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও বা রিলস দেখার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। আমরা অনেকেই রাত জেগে রিলস দেখে সময় কাটাই। কিন্তু জানেন কি, এই অভ্যাস ধীরে ধীরে আমাদের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে? সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রাত জেগে অতিরিক্ত রিলস দেখার কারণে উচ্চ রক্তচাপ (হাইপারটেনশন) হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে।

রাত জেগে রিলস দেখা এবং উচ্চ রক্তচাপের সংযোগ

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় ৪,৩১৮ জন অংশগ্রহণকারীকে নিয়ে একটি সমীক্ষা চালানো হয়, যেখানে দেখা যায় যারা নিয়মিত ঘুমানোর আগে স্ক্রিনে স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও দেখে, তাদের রক্তচাপ বৃদ্ধির প্রবণতা অন্যদের তুলনায় বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতের বেলা স্ক্রিনের নীল আলো (Blue Light) আমাদের মস্তিষ্কে মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়। এই হরমোন আমাদের ঘুমের সময় নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফলে রাত জাগার কারণে ঘুমের ঘাটতি হয়, যা সরাসরি উচ্চ রক্তচাপের একটি বড় কারণ হতে পারে।

কেন রাত জেগে রিলস দেখা বেশি ক্ষতিকর?

আমরা প্রায়ই শুনি যে টিভি দেখা কিংবা কম্পিউটারে কাজ করাও দীর্ঘ সময় ধরে করা উচিত নয়। কিন্তু ছোট ভিডিও দেখার ক্ষেত্রে ক্ষতির মাত্রা আরও বেশি হতে পারে। এর কারণ হলো—

১) টানা স্ক্রলিং অভ্যাস: রিলস বা শর্ট ভিডিওগুলি খুব সংক্ষিপ্ত ও আকর্ষণীয় হয়, ফলে একবার দেখা শুরু করলে থামানো কঠিন হয়ে যায়। এতে ঘুমানোর সময় পিছিয়ে যায়।

২) মানসিক চাপ বৃদ্ধি: রিলসের বিষয়বস্তু বিভিন্ন রকমের হয়—বিনোদনমূলক, ভয়ঙ্কর, উত্তেজনাপূর্ণ বা দুঃখজনক। এগুলো আমাদের আবেগের ওপর প্রভাব ফেলে এবং মানসিক চাপ বাড়াতে পারে, যা রক্তচাপ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ।

৩) শরীরচর্চার অভাব: রাতে দেরি করে ঘুমানো মানে সকালে দেরি করে ওঠা, ফলে শারীরিক কার্যকলাপ কমে যায়। নিয়মিত ব্যায়ামের অভাবে শরীরে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

৪) অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: অনেকে রাত জাগার সময় অস্বাস্থ্যকর খাবার বা কফি পান করেন, যা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়?

যদি আপনি রিলস বা শর্ট ভিডিও দেখার অভ্যাস কমাতে চান এবং উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি এড়াতে চান, তাহলে নিচের উপায়গুলো অনুসরণ করতে পারেন—

১)  নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন: রাতে ঘুমানোর অন্তত ৩০ মিনিট আগে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।

২)  ব্লু লাইট ফিল্টার ব্যবহার করুন: ফোনের ‘নাইট মোড’ বা ‘ব্লু লাইট ফিল্টার’ অন করে রাখুন, যা চোখ ও মস্তিষ্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমাবে।

৩) গভীর শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করুন: ঘুমানোর আগে কিছুক্ষণের জন্য মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করলে মানসিক চাপ কমবে।

৪)  বই পড়ুন বা গান শুনুন: ঘুমানোর আগে স্ক্রিনের বদলে বই পড়া বা হালকা সুরের গান শোনা ঘুমের জন্য উপকারী হতে পারে।

৫)  শারীরিক সক্রিয়তা বাড়ান: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।

রাত জেগে রিলস দেখাটা বিনোদনের জন্য ভালো মনে হলেও, এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদে এটি উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই আমাদের উচিত ঘুমের রুটিন ঠিক রাখা এবং রাতের বেলা স্ক্রিন টাইম কমিয়ে স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা অনুসরণ করা। ভালো ঘুম মানেই সুস্থ শরীর, আর সুস্থ শরীর মানেই সুখী জীবন!

ছবি-সাটারস্টক

The post রাত জেগে রিলস দেখার অভ্যাস কি উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে? appeared first on Shajgoj.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3048

Trending Articles