বর্তমান স্কিন কেয়ারে পরিচিত একটি উপাদান হলো ল্যাকটিক অ্যাসিড। ত্বকের যত্নে ল্যাকটিক অ্যাসিডের রয়েছে বিভিন্ন বেনিফিট। এটি ত্বকের ডেড সেলস রিংকেল ও ফাইন লাইনস দূর করতে সাহায্য করে। ল্যাকটিক অ্যাসিড কী, এটি ত্বকে কীভাবে কাজ করে, এর বেনিফিট ও সাইড ইফেক্টগুলো নিয়েই আমাদের আজকের এই ফিচার। আশা করছি যারা স্কিন কেয়ার রুটিনে এই ইনগ্রেডিয়েন্টটি অ্যাড করতে চাইছেন, তাদের জন্য এই লেখাটি খুবই হেল্পফুল হবে।
ল্যাকটিক অ্যাসিড কী?
ল্যাকটিক অ্যাসিড মূলত জনপ্রিয় একটি আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের ডেরিভেটিভ। এই অ্যাসিড মূলত পাওয়া যায় দুধ, দই ও দুগ্ধজাতীয় ডেইরি প্রোডাক্ট এ। এই উপাদানটি কিন্তু অনেক আগে থেকেই স্কিন কেয়ার জগতে বহুল ব্যবহৃত। বিশেষ করে আগেকার সময় থেকেই দই ত্বকের যত্নে অন্যতম উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। বর্তমানে স্কিন কেয়ারে ব্যবহৃত এই অ্যাসিড ল্যাবে তৈরি করে বিভিন্ন ল্যাব টেস্ট এর মাধ্যমে ত্বকের উপযোগী করে বাজারজাত করা হয় এবং বিভিন্ন স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টে যুক্ত করা হয়।
ত্বকের যত্নে মার্কেটে এই ইনগ্রেডিয়েন্টটি বিভিন্ন ফর্মে পাওয়া যায়, যেমন: এক্সফোলিয়েটর, ক্লেনজার, ক্রিম, লোশন, সিরাম, পিলিং মাস্ক ইত্যাদি। স্কিন কনসার্ন অনুযায়ী ল্যাকটিক অ্যাসিডের ফর্ম বাছাই করে ব্যবহার করলে দ্রতই পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়া যায়।
ত্বকের যত্নে ল্যাকটিক অ্যাসিডের উপকারিতা
ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে ল্যাকটিক অ্যাসিড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ল্যাকটিক অ্যাসিড মূলত ত্বকের এক্সফোলিয়েটর হিসেবেই বেশি ব্যবহার হয়। আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড এর ডেরিভেটিভগুলোর মধ্যে ত্বকের জন্য এটি বেশ মাইল্ড ও জেন্টেল। এটি ত্বকের সেল টার্নওভারে সাহায্য করে, যার ফলে ত্বকের পুরানো কোষগুলো রিপ্লেসমেন্ট হয় নতুন কোষ দ্বারা। এতে করে ত্বক উজ্জ্বল ও কোমল হয়।
তাছাড়াও ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের টান টান ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে। এটি ত্বকে থাকা পোরস পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এর পাশাপাশি নিজস্ব ময়েশ্চার ফ্যাক্টর থাকায় এটি ত্বক কোমল ও ময়েশ্চারাইজড রাখতে সাহায্য করে। তাই যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয়ে থাকে, তাহলে ত্বকের যত্নে এই উপাদানটি অ্যাড করে দেখতে পারেন নিশ্চিন্তে।
ল্যাকটিক অ্যাসিডের কিছু সাইড ইফেক্ট
ত্বকের জন্য ল্যাকটিক অ্যাসিডের যে বিভিন্ন বেনিফিট রয়েছে তা ঠিক, তবে এর কিছু সম্ভাব্য সাইড ইফেক্টও রয়েছে। যেমন:
১. সান সেনসিটিভিটি
ল্যাকটিক অ্যাসিড যেহেতু একটি এক্সফোলিয়েটর এবং বেশ অ্যাকটিভ উপাদান তাই এটি ব্যবহার শুরুর পর ত্বক সান সেনসিটিভ হয়ে যায়। এজন্য অবশ্যই দিনের বেলায় সানস্ক্রিন ব্যবহারে সচেতন হতে হবে, অন্তত এসপিএফ ৩০ বা এর থেকে বেশি এসপিএফ যুক্র সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে পাশাপাশি রিঅ্যাপ্লিকেশনেও সচেতন হতে হবে। এর ফলে ত্বক সান ড্যামেজ হবে না এবং ত্বকে ল্যাকটিক অ্যাসিডের বেনিফিট দ্রুত দৃশ্যমান হবে।
২.স্কিন ইরিটেশন
ত্বকে কিছু ইরিটেশন দেখা দিতে পারে ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যবহারের পর। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নতুন কোনো অ্যাকটিভ উপাদান ব্যবহারের পর ত্বক কিছুটা ইরিটেড হয়, সেক্ষেত্রে কিছুদিন গ্যাপ দিয়ে পুনরায় ব্যবহার করলে ত্বকে সহজে মানিয়ে যায়। আর যদি ত্বকে কোনো কারনে স্যুট না করে সেক্ষেত্রে ইরিটেশন দেখা দেয়। ত্বক ইরিটেটেড হয়ে যাওয়ার ফলে ত্বকে লালচেভাব, জ্বলুনি, স্কিন পিলিং, শুষ্কতা, ইচিনেস ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। যদি এ লক্ষণগুলো প্রথবার ব্যবহারের পর কিছুটা দেখা দেয় এবং বেশ কয়েকঘন্টা বা একদিনের মধ্যে যদি ঠিক হয়ে যায়। তবে চিন্তার কিছু নেই, ত্বকে নতুন উপাদান ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকসময় শুরুতে এমন হতে পারে। এজন্য যেকোনো নতুন উপাদান ত্বকে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নিতে হবে।
৩. অন্য অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহার করতে না পারা
যদিও ল্যাকটিক অ্যাসিড আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের একটি জেন্টেল ভ্যারিয়েশন তবে ত্বক খুব বেশি সেনসেটিভ হলে এটির উচ্চমাত্রার কনসেনট্রেশন ব্যবহারে বিরত থাকতে হবে৷ এক্ষেত্রে শুরু করতে হবে ৫% থেকে, যদি এরপরেও ত্বক রিঅ্যাক্ট করে তবে ব্যবহার বন্ধ রাখতে হবে। যদি স্কিন কেয়ার রুটিনে টপিক্যাল রেটিনল( যেমন: ভিটামিন এ) যুক্ত থাকে তবে ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যবহার করা যাবে না। কারন ত্বক সেনসিটিভ হয়ে যেতে পারে যেহেতু রুটিনে অলরেডি রেটিনলের মতো এক্সফোলিয়েটিং উপাদান আছে।
৪. বেশি পারসেন্টেজ ব্যবহারে ত্বকে রিঅ্যাকশন
বিগেনার হিসেবে ল্যাকটিক অ্যাসিড ৫% থেকে ব্যবহার শুরু করা উচিত এবং ধীরে ধীরে এর পারসেন্টেজ বাড়ানো যেতে পারে তবে সেটা অবশ্যই ৩০% এর বেশি নয়। নাহলে ত্বকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। খুব দ্রুত পারসেন্টেজ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে হবে।
ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের যত্নে অন্যতম ও উপকারী একটি উপাদান। পরামর্শ থাকবে ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করে নিতে। যেকোনো প্রোডাক্ট ইউজ করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অথেনটিক প্রোডাক্ট চুজ করার। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।
ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক
The post পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না জেনেই ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যবহার করছেন? appeared first on Shajgoj.