ত্বকের যত্নে যে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো ব্যবহার করা হয় সেগুলোর মধ্যে অ্যাজেলিক অ্যাসিড অন্যতম। এটি এমন একটি কার্যকরী উপাদান যা ব্রণের সমস্যা দূর করে, ব্রণ ও মেছতার দাগ ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে। এতে আছে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি প্রোপার্টিস। আজকের এই ফিচারে আপনাদের জানাবো অ্যাজেলিক অ্যাসিড কী, এর কী কী বেনিফিট রয়েছে এবং এটি কীভাবে ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
অ্যাজেলিক অ্যাসিড সম্পর্কে কিছু তথ্য
অ্যাজেলিক অ্যাসিড একটি ডাইকার্বোক্সাইলিক অ্যাসিড, যা প্রাকৃতিকভাবে গম, বার্লি, রাই ইত্যাদি শস্যে পাওয়া যায়৷ এছাড়াও স্কিন কেয়ারে যুক্ত করতে এটি ল্যাবরেটরিতেও তৈরি করা হয়। এটি ব্রণের দাগ,মেছতার দাগ কমাতে ও ব্রণ সমস্যা কমাতে অত্যন্ত উপকারী । হাইপারপিগমেন্টেশন কমাতেও সাহায্য করে। অ্যাজেলিক অ্যাসিড স্কিন কেয়ারের জগতে জেল, ময়েশ্চারাইজার, সিরাম, ফোম ইত্যাদি বিভিন্ন ফর্মে পাওয়া যায়।
অ্যাজেলিক অ্যাসিডের উপকারিতা
চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক অ্যাজেলিক অ্যাসিডের কিছু উপকারিতা-
১. পোরসে থাকা ব্যাকটেরিয়া পরিষ্কার করতে সাহায্য করে, যার ফলে একনে ব্রেকআউট এর সম্ভাবনা অনেক কমে আসে।
২. ইনফ্ল্যামেশন কমায় যার ফলে একনে কম দৃশ্যমান হয় এবং জ্বালাপোড়াও কম হয়।
৩. কোষের টার্নওভার প্রোমোট করে, যার ফলে ত্বকে থাকা ব্রণ বা একনে স্পট দ্রুত রিকোভার করতে পারে।
৪. পোরস ক্লগড হয়ে যাওয়ার সমস্যা দূর করে, যার ফলে ত্বকে একনে অনেক কমে যায়।
৫. মেলানিন সিনথেসিস কমাতে অ্যাজেলিক অ্যাসিড সাহায্য করে, এর ফলে ত্বকের যেকোনো হাইপার পিগমেন্টেশন দ্রুত কমে যায়।
৬.অ্যাজেলিক অ্যাসিড আনইভেন স্কিন টোন ইভেন আউট করতে সাহায্য করে, ত্বকের ছোপ ছোপ দাগ কমিয়ে ত্বক ব্রাইট করতে সাহায্য করে।
কীভাবে ব্যবহার করবেন?
অ্যাজেলিক অ্যাসিড বিভিন্ন ফর্মে পাওয়া যায়, যেমন: জেল, ফোম, সিরাম, ক্রিম ইত্যাদি। তবে যে ফর্মেই থাকুক না কেন, ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই নিয়মগুলো অনুসরণ করুন।
১. ত্বক হালকা কুসুম গরম পানির সাহায্যে খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পরিষ্কারের ক্ষেত্রে ব্যবহার করুন একটি মাইল্ড সোপ অথবা ক্লেনজার।
২. অ্যাপ্লাই এর পূর্বে অবশ্যই হাত খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
৩. খুব অল্প পরিমাণে ব্যবহার করতে হব। এটি অ্যাপ্লাই করে হালকা হাতে ম্যাসাজ করার পর পুরোপুরিভাবে শুকানোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে।
৪. এটি অ্যাপ্লাই করার পর যখন শুকিয়ে যাবে, তখন স্কিন কেয়ার রুটিনে থাকা অন্যান্য প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার করতে পারবেন।
৫. বিগেইনারদের ক্ষেত্রে ১০% বা তার থেকেও কম পার্সেন্টেজে ব্যবহার করুন।
৬. অবশ্যই ডে টাইমে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। অ্যাপ্লিকেশন ও রিঅ্যাপ্লিকেশন এর দিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে।
অ্যাজেলিক অ্যাসিডের কি কোনো সাইড ইফেক্ট আছে?
অ্যাজেলিক অ্যাসিড ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত কার্যকরী ঠিকই, তবে এর কিছু সাইড ইফেক্টও রয়েছে। তাই স্কিন কেয়ার রুটিনে এটি যুক্ত করার পূর্বে সেগুলো জেনে নিন-
১. সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালাপোড়া অনুভূত হতে পারে। এজন্য ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নিন।
২. অ্যাপ্লিকেশনের স্থানে স্কিন পিলিং হতে পারে।
৩. ত্বকে শুষ্ক বা লালচে ভাব দেখা দিতে পারে।
৪। কিছু ক্ষেত্রে চুলকানি দেখা দিতে পারে।
এই অ্যাসিড ব্যবহারের পর যেকোনো সাইড ইফেক্ট দেখা দিলে সাথে সাথে অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করে দিতে হবে এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
কিছু সতর্কতা
১. অ্যাজেলিক অ্যাসিড কিন্তু সকলের ব্যবহারের জন্য নয়। কোন ত্বকের জন্য এটি প্রয়োজন তা নির্ভর করে ত্বকের ধরন ও ত্বকে কী ধরনের সমস্যা আছে তার উপর।
২. অ্যাজেলিক অ্যাসিড স্কিন কেয়ার জগতের অন্যান্য অনেক অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট এর চেয়েও তূলনামূলক বেশ মাইল্ড। তাই ব্যবহার শুরু করার আগে ধৈর্য রাখতে হবে, এর ফলাফল পেতে ২-৩ মাস লেগে যেতে পারে। তাই সময় নিয়ে রুটিন মেনে ব্যবহার করতে হবে।
৩. অ্যাজেলিক অ্যাসিড প্রেগনেন্সি সেফ, তাই প্রেগনেন্সিতে ও ব্রেস্ট ফ্রিডিং মায়েরাও চিন্তামুক্তভাবে এটি ব্যবহার করতে পারবেন।
৪. সানস্ক্রিন বেসিক স্কিন কেয়ারের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। অ্যাজেলিক অ্যাসিড ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সানস্ক্রিন সঠিকভাবে অ্যাপ্লাই ও রিঅ্যাপ্লাই করতে হবে। নয়তো ত্বকে সান ড্যামেজ, ত্বক পাতলা হয়ে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিবে।
পরিশেষে বলা যায়, অ্যাজেলিক অ্যাসিড একনে, একনে স্কার, মেছতার দাগ, হাইপারপিগমেন্টেশন ইত্যাদি সমস্যার একটি কার্যকরী সমাধান। নিয়ম অনুযায়ী অ্যাজেলিক অ্যাসিড ব্যবহার করলেই এর কার্যকারিতা ত্বকে প্রকাশ পাবে। আশা করছি আজকের ফিচারটি আপনাদের উপকারে আসবে। যেকোনো প্রোডাক্ট ইউজ করার ক্ষেত্রে চেষ্টা করুন অথেনটিক প্রোডাক্ট চুজ করার। অথেনটিক মেকআপ, স্কিনকেয়ার ও হেয়ারকেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য আমি সবসময়ই সাজগোজ এর উপর ভরসা রাখি। আপনারাও ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোরে। সাজগোজের বেশ কয়েকটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে। এ শপগুলো যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, ইস্টার্ন মল্লিকা, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, বসুন্ধরা সিটি, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), মিরপুরের কিংশুক টাওয়ারে ও চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টারে অবস্থিত। এই শপগুলোর পাশাপাশি চাইলে অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন আপনার দরকারি বা পছন্দের সব প্রোডাক্টস।
ছবিঃ সাজগোজ
The post অ্যাজেলিক অ্যাসিড স্কিন কেয়ার ট্রেন্ডে কেন এত হাইপড? appeared first on Shajgoj.