ত্বকের যত্নে আমরা সবাই চাই এমন কিছু যা আমাদের ত্বককে ন্যাচারালি স্মুথ, গ্লোয়ি ও ফ্ললেস করে তুলবে। বর্তমানে স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডে স্নেইল মিউসিন বেশ জনপ্রিয়। তবে স্নেইল অর্থাৎ শামুকের ব্যবহার রূপচর্চায় কিন্তু সেই প্রাচীনকাল থেকেই। সাউথ কোরিয়াতে এর প্রচলন সেই প্রাচীনকাল থেকেই। ফেইসের উপর শামুক ছেড়ে দিয়ে ত্বক পরিচর্যা পদ্ধতি আমরা অনেকেই হয়তো দেখেছি বিভিন্ন স্পা সেন্টার অথবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে। দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্নেইল বেইজড প্রোডাক্ট। এক্ষেত্রে শামুকের ব্যবহার সরাসরি নয়, বরং স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টগুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছে স্নেইল মিউসিন! স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডে স্নেইল মিউসিন কেন এতো জনপ্রিয়, এর উপকারিতাই বা কী; চলুন জেনে নেই আজকের ফিচারে।
স্নেইল মিউসিন আসলে কী?
অনেক সময় স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টের ইনগ্রেডিয়েন্ট লিস্টে “snail secretion filtrate” (SSF) এই উপাদানটি দেখা যায়। এই মিউসিন ন্যাচারালি প্রোডিউস হয় যা snail secretion filtrate অথবা snail slime নামেও পরিচিত। স্নেইল মিউসিন হচ্ছে মূলত শামুক থেকে নির্গত একধরনের আঠালো জেল বা জেল জাতীয় এক্সট্র্যাক্ট। স্পেসিফিক কিছু শামুকের প্রজাতি থেকে এটি কালেক্ট করা হয়। এই মিউসিনে গ্লাইকোপ্রোটিন, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, পেপটাইড, মিনারেলস ইত্যাদি থাকে।
কী কী ফর্মে পাওয়া যায়?
সিরাম, টোনার, এসেন্স, অ্যাম্পুল, ময়েশ্চারাইজার, ক্লেনজার, শীট মাস্ক, সুদিং জেল – বিভিন্ন স্কিনকেয়ার রেঞ্জে এখন স্লেইল মিউসিন ব্যবহৃত হচ্ছে। পারসোনাল প্রেফারেন্স অনুযায়ী যেকোনো একটি ইউজ করতে পারেন। স্নেইল মিউসিন ন্যাচারালি একটু থিক অ্যান্ড স্টিকি হয়, কিন্তু স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টসে এমনভাবে ফর্মুলেট করা হয় যেন স্কিনে এটি প্রোপারলি অ্যাবজর্ব হতে পারে। স্কিনকেয়ার ব্র্যান্ড ও প্রোডাক্ট অনুযায়ী স্পেসিফিক ফর্মুলেশন ভ্যারি করে।
স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডে স্নেইল মিউসিন
চলুন এবার জেনে নেই এর স্কিনকেয়ার বেনিফিটস সম্পর্কে আর কেন এই উপাদানটি এতোটা হাইপড সেটাও জানা হয়ে যাবে!
১. ত্বকের হাইড্রেশন ধরে রাখে
স্নেইল স্লাইম একটি অ্যামেজিং হাইড্রেটিং ইনগ্রেডিয়েন্ট। এটি ময়েশ্চার রিটেইনে হেল্প করে, হাইড্রেশন প্রোভাইড করে। ড্রাই ও ডিহাইড্রেটেড স্কিনের জন্য এটি বেশ ভালো করে।
২. ড্যামেজড স্কিন ব্যারিয়ার রিপেয়ার করে
এটি ড্যামেজ স্কিন ব্যারিয়ারকে ন্যাচারালি রিপেয়ার করে, কারণ এতে আছে হিলিং প্রোপার্টিজ। এতে থাকা পেপটাইডস যেকোনো ধরনের ক্ষত সারাতে বেশ ইফেক্টিভ। এটি স্কারসের অ্যাপেয়ারেন্সও কমিয়ে আনে।
৩. এজিং সাইনস প্রিভেন্ট করে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের ত্বকের কোলাজেন লেভেল কমতে থাকে, তখনই এজিং সাইনস বেশি ভিজিবল হয়। আর এই প্রসেসকে যেন আরো দ্রুত করে আশেপাশের পল্যুশন, আনহেলদি লাইফস্টাইল। স্নেইল মিউসিনে রয়েছে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড যা কোলাজেন প্রোডাকশন স্টিমুলেট করে। যেহেতু স্নেইল মিউসিন কোলাজেন প্রোডাকশন বাড়িয়ে দেয়, তাই স্কিন দেখায় ইয়াংগার লুকিং। রিংকেলস, ফাইন লাইনস এর ভিজিবিলিটি কমে আসে অনেকটাই।
৪. স্কিনকে ইভেনটোনড করে
পিগমেন্টেশন, আনইভেন স্কিনটোন এর সল্যুশনে স্লেইল মিউসিন বেশ ইফেক্টিভ। এতে আছে স্কিন রিজেনারেটিভ প্রোপার্টিজ।
৫. একনে প্রিভেন্ট করে
এই মিউসিনে আরও আছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল প্রোপার্টিজ যা একনে ব্রেকআউট প্রিভেন্টে হেল্পফুল। এটি ইনফ্ল্যামেশন কমায় এবং স্কিনে সুদিং ইফেক্ট দেয়।
স্নেইল মিউসিন কি অন্য কোনো উপাদানের সাথে রিঅ্যাক্ট করে?
এই উপাদানটি সাধারণত অন্য কোনো অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টের সাথে রিঅ্যাক্ট করে না। স্নেইল মিউসিন সহজেই ভিটামিন সি, রেটিনল, AHA, BHA এর সাথে একই রুটিনে ব্যবহার করা যায়।
সব ধরনের স্কিনে স্যুইটেবল?
ড্রাই ও কম্বিনেশন স্কিনে এটি বেশ ভালো স্যুট করে। এটি প্রেগনেন্সি সেইফ। সেনসিটিভ, একনে প্রন, ডিহাইড্রেটেড যে কোনো ধরনের স্কিনেই ইউজ করতে পারেন। তবে অ্যাপ্লাইয়ের আগে কিন্তু প্যাচ টেস্ট করতে ভুলবেন না। এটি স্কিনে গ্লোয়ি, সুদিং ইফেক্ট দিলেও সিংগেল প্রোডাক্ট হিসেবে কোনো কোর প্রবলেমের কুইক ফিক্স সল্যুশন দেয় না। যদি আপনাকে স্যুট করে থাকে, তাহলে স্কিনে পজেটিভ চেঞ্জ অবশ্যই দেখতে পাবেন।
দিনে ইউজ করবো নাকি রাতে?
দিনে ও রাতে যেকোনো সময়ই ইউজ করা যায়! যেহেতু স্লেইল মিউসিন মেইনলি ড্যামেজ রিপেয়ার ও ময়েশ্চার রিস্টোরের কাজ করে থাকে, তাই রাতের স্কিনকেয়ারে ইউজ করলে বেটার।
স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডে স্নেইল মিউসিন এতো জনপ্রিয় কেন, সেটা এতক্ষণে জেনে নিয়েছি! আল্টিমেটলি স্লেইল মিউসিন আপনার জন্য বেনিফিশিয়াল হবে কিনা সেটি ডিপেন্ড করছে আপনার স্কিন কন্ডিশন কেমন এবং কীভাবে আপনি এটি ব্যবহার করছেন, সেটার উপর। তবে স্কিনে সুদিং ইফেক্ট পেতে, স্কিন ব্যারিয়ার রিপেয়ার আর অ্যান্টি এজিং পারপাসে স্লেইল মিউসিন যুক্ত প্রোডাক্ট ট্রাই করে দেখতে পারেন।
অনলাইনে অথেনটিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাটারস্টক, সাজগোজ
The post স্কিনকেয়ার ট্রেন্ডে স্নেইল মিউসিন কেন এতো জনপ্রিয়? appeared first on Shajgoj.