বর্তমানে ট্রেন্ডি একটি টার্ম হলো এই স্কিন সাইক্লিং। স্কিনকেয়ারে এটি একটি নতুন ট্রেন্ড। আজকাল প্রায়শই এই টার্ম শুনতে পাওয়া যায়, কিন্তু আসলে এটি কী এবং কীভাবে কাজ করে তা অনেকেরই সঠিকভাবে জানা নেই। আসুন আজকের আলোচনার মাধ্যমে জেনে নেই এই রুটিনটি কী, কীভাবে করে এবং এর বেনিফিট গুলো সম্পর্কে।
স্কিন সাইক্লিং বলতে কী বোঝায়?
Skin cycling হচ্ছে একটি স্কিন কেয়ার রুটিন যেখানে হাইয়ার কনসেনট্রেশন এর বেশ পাওয়ারফুল অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টসকে ত্বকের সাথে সহজে মানানসই করিয়ে নেয়া হয়। এই স্কিন কেয়ার রুটিনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ত্বককে কম ড্যামেজ ও ইরিটেট করে তার সাথে অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট গুলোকে ধীরে ধীরে ত্বকের সাথে মানানসই করে ভালো ফলাফল পাওয়া। এর ফলে স্কিন সেলগুলো নতুনভাবে রিনিউ ও রিজেনারেট হয়, স্কিন ব্যারিয়ার শক্তিশালী হয়। অনেকসময় আমরা কম পার্সেন্টেজ ব্যবহারের পর বেশি পার্সেন্টেজ এর ইনগ্রেডিয়েন্টস স্কিন কেয়ারে যুক্ত করতে চাই বা বেশ পাওয়ারফুল অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস যুক্ত করতে চাই, তখন স্কিন সাইক্লিং বেশ ভালো একটি উপায়।
এই রুটিন যেভাবে কাজ করে
এটি একটি ‘ফোর নাইট’ রুটিন অর্থাৎ এই রুটিনটি প্রতি চার রাতের জন্য এবং চতুর্থ রাত শেষে পরেরদিন থেকে পুনরায় আগের চার রাতের রুটিন কন্টিনিউ করতে হবে। এভাবেই সাইকেলটি চলতে থাকবে। ‘ফোর নাইট’ এর মধ্যে রয়েছে এক্সফোলিয়েশন নাইট, অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস বেইজড প্রোডাক্ট অ্যাপ্লাই নাইট, রিকোভারি এন্ড রিপেয়ার নাইট।
স্কিন সাইক্লিং শুরু করতে যা যা দরকার
এবার আসুন জেনে নেই এই স্কিন সাইক্লিং শুরু করতে আপনার কি কি দরকার হবে
১. AHA, BHA, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড বা স্যালিসাইলিক অ্যাসিডযুক্ত একটি এক্সফোলিয়েটর।
২. অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস যেমন রেটিনল, বেশি পার্সেন্টেজ যুক্ত ভিটামিন সি ইত্যাদি যেকোনো একটি প্রোডাক্ট অথবা সিরাম।
৩. একটি ভালো সেরামাইড যুক্ত ময়েশ্চারাইজার।
যেভাবে শুরু করবেন এই রুটিন
ফার্স্ট নাইট: এক্সফোলিয়েটিং
এক্সফোলিয়েশন হচ্ছে স্কিন সাইক্লিং এর প্রথম ধাপ। স্কিন সাইক্লিং রুটিনের প্রথম ধাপে ত্বক ভালোভাবে ক্লেনজার দিয়ে পরিষ্কার করে ভালোমানের এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করুন। এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার শেষে ত্বকে লাগিয়ে নিন ময়েশ্চারাইজার। স্কিন এক্সফোলিয়েশন ত্বকের ডেড সেলস, সেবাম রিমুভ করবে এবং ত্বককে পরবর্তী রাতের রুটিনের জন্য তৈরি করবে। ডেড সেলস, সেবাম মুক্ত ত্বক অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস ব্যবহারের জন্য উপযোগী।
সেকেন্ড নাইট: অ্যাপ্লাই অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টস
এক্সফোলিয়েশনের পরের রাতে ত্বক আপনার নির্ধারিত অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট ব্যবহারের জন্য তৈরি। ত্বক ক্লেনজার দিয়ে পরিষ্কার করে ব্যবহার করুন আপনার বাছাইকৃত সেই অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট অথবা বেশি পার্সেন্টেজ এর প্রোডাক্টটি। ব্যবহার শেষে ত্বকে লাগিয়ে নিন ময়েশ্চারাইজার। এই রাতের রুটিন আপনার ত্বককে নতুন ইনগ্রেডিয়েন্ট বা বেশি পার্সেন্টেজযুক্ত ইনগ্রেডিয়েন্ট এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিবে এবং ধীরে ধীরে মানানসই করে নিতে সাহায্য করবে।
থার্ড এন্ড ফোর্থ নাইট: স্কিন রিপেয়ারিং এন্ড রিকোভারি
এই দুই রাত মূলত ত্বকের বিশ্রাম নেওয়ার রাত অর্থাৎ স্কিন রেস্টিং টাইম। এই রাত মূলত ত্বকের ময়েশ্চার লেভেল ঠিক রাখবে এবং ময়েশ্চার ব্যারিয়ার প্রোটেক্ট করবে। ত্বকে আগের রাতেই ব্যবহার করা হয়েছে একটি পাওয়ারফুল অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট তাই এই রাতে ত্বকে অতিরিক্ত প্রোডাক্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে। এই দুই রাতের স্কিন কেয়ার রুটিন হবে একদমই ছোট। জাস্ট ভালোভাবে ক্লেনজিং শেষে লাগিয়ে নিতে হবে সেরামাইড যুক্ত অথবা ভালোভাবে ময়েশ্চারাইজ করবে এমন ধরনের প্রোডাক্ট। চাইলে ৩য় রাতে ব্যবহার করা যাবে হাইড্রেটেড ফেস মাস্ক অথবা ময়েশ্চারাইজিং স্লিপিং মাস্ক যা ত্বককে প্রোপারভাবে ময়েশ্চারাইজড ও হাইড্রেট করবে। চতুর্থ রাতেও স্কিন ক্লেনজিং এর পর শুধু ময়েশ্চারাইজার বা ময়েশ্চারাইজিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে।
অবশেষে পঞ্চম রাতে আবার স্কিন সাইক্লিং এর প্রথম রাতের রুটিন মেনে চলতে হবে এবং এভাবেই আবার বাকি রাতগুলোতে একই রুটিন রিপিট হবে আর একেই বলা হয়ে থাকে স্কিন সাইক্লিং।
যে কনসার্ন গুলো মেনে চলতে হবে এই সময়
১. ডে টাইমে অবশ্যই যথেষ্ট পরিমানে এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে।
২.পানি সঠিকভাবে পান করতে হবে।
৩. এই সময় একসাথে অনেক বেশি অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট স্কিন কেয়ার রুটিনে রাখবেন না। হাই পার্সেন্টেজ বা পাওয়ারফুল অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্টযুক্ত একটি প্রোডাক্ট রুটিনে রাখুন এবং ত্বকের সাথে মানানসই করতে রুটিনটি সঠিকভাবে মেনে চলুন।
বিগেনার হিসেবে স্কিন কেয়ার রুটিনে শুরুতে ত্বকের সাথে পাওয়ারফুল ইনগ্রেডিয়েন্ট পরিচয় করিয়ে দেওয়ার অন্যতম একটি উপায় এই স্কিন সাইক্লিং। এই রুটিনের মাধ্যমে ত্বক ইরিটেট বা শুরুতেই পাওয়ারফুল ইনগ্রেডিয়েন্ট এর ব্যবহার ত্বকে বেশি ইরিটেট হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। এটি একটি সেইফ রুটিন। অনলাইনে অথেনটিক স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবিঃ সাজগোজ।
The post স্কিন সাইক্লিং | এই ট্রেন্ডি স্কিনকেয়ার রুটিন কীভাবে ফলো করবেন? appeared first on Shajgoj.