Quantcast
Channel: Shajgoj
Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

রেগুলার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরেও স্কিনের ড্রাইনেস কমছে না?

$
0
0

অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক, মেডিকেলের ভাষায় যাকে বলে জেরোসিস কাটিস (Xerosis Cutis), এর লক্ষণগুলো হলো রুক্ষ ত্বক, ত্বকে ছোপ ছোপ সাদা দাগ, রাফনেস, চুলকানি ইত্যাদি। যেহেতু এটা খুব কমন স্কিন প্রবলেম, তাই বেশিরভাগ মানুষই তাদের জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে শরীরের যেকোনো অংশের ত্বকে এই শুষ্কতাজনিত সমস্যাগুলো ফেইস করেছেন। রেগুলার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরেও স্কিনের এই ড্রাইনেস যেন কমেই না!

আপনার স্কিন যখনই শুষ্ক বা টানটান লাগে, আপনি তখনই চট করে আপনার পছন্দের ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেন। তাহলেই তো সমস্যার সমাধান হয়ে গেলো, তাই না? সেটাই হওয়ার কথা! কিন্তু অনেক সময় সেটা কাজ করে না বলেই ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যায়, চামড়া খসখসে হয়ে যায়, ইচিং হয় আর অনেক সময় সেটা সিরিয়াস পর্যায়েও চলে যায়! কেন আপনার ময়েশ্চারাইজারটি প্রোপারলি কাজ করছে না, সেটা জানতে চান? রোজ নিয়ম করে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার পরেও কেন এই সমস্যার সৃষ্টি হয়, আজ সেই প্রশ্নগুলোরই উত্তর খুঁজবো আমরা।

ত্বক কেন অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে? 

রেগুলার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরেও স্কিনের শুষ্কভাব কমছে না? এর পেছনে কোন কোন ফ্যাক্টরগুলো দায়ী, চলুন জেনে নেই এখনই।

কনফিউজড

১) অপর্যাপ্ত এক্সফোলিয়েশন

দীর্ঘদিন এক্সফোলিয়েশন না করলে বা পর্যাপ্ত এক্সফোলিয়েশন করা না হলে ত্বকের উপরের লেয়ারে ডেড সেলস জমে জমে স্কিন টেক্সচার ফ্লেকি হয়ে যায়, যা থেকে পরবর্তীতে অন্যান্য সমস্যা তৈরি হতে পারে। সঠিক নিয়মে এক্সফোলিয়েশন করলে স্কিনের এই ফ্লেকিনেস দূর হয়ে স্কিন টেক্সচার স্মুথ হয়। পাশাপাশি ময়েশ্চারাইজারও স্কিনের গভীর লেয়ার পর্যন্ত পেনিট্রেট করার সুযোগ পায়। এতে স্কিন সতেজ বা প্রাণবন্ত থাকে।

২) অতিরিক্ত ওয়াশ করা

আমাদের ত্বকে কিছু Molecule বা অণু থাকে যেগুলো ত্বকের ন্যাচারাল অয়েল সংরক্ষণ করে এবং স্কিনের ময়েশ্চার ব্যারিয়ার হিসেবে কাজ করে। হাত, মুখ, পা বা শরীরের অন্যান্য অংশ অতিরিক্ত ওয়াশ করা হলে সেই ন্যাচারাল অয়েলও রিমুভ হয়ে যায়, তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই স্কিনের সেই অংশগুলোতে ড্রাইনেস দেখা দেয়। এক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখবেন-

  • আর্টিফিশিয়াল কালার ও হার্শ কেমিক্যালমুক্ত সাবান বা বডি ওয়াশ বা শাওয়ার জেল ব্যবহারের চেষ্টা করুন
  • ফেইসের জন্য স্কিন টাইপ ও কনসার্ন অনুযায়ী মাইল্ড ক্লেনজার বেছে নিন
  • ওয়াশের পর নরম কাপড় বা তোয়ালে দিয়ে চেপে চেপে মুছে নিন

অতিরিক্ত ওয়াশ করা

৩) ডিহাইড্রেশন বা পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব

আমাদের স্কিনের আপার লেয়ারে ১৫-২০ শতাংশ থাকে পানি। যখন আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করি না বা ব্যালেন্সড ডায়েট মেনটেইন করি না, তখন এই লেয়ারে পানির পরিমাণ কমে যায়। ফলে ডিহাইড্রেটেড হয়ে ত্বক ইলাস্টিসিটি হারায় এবং আস্তে আস্তে ড্রাই বা রাফ হতে শুরু করে। এছাড়াও কিছু অ্যাসেনশিয়াল ভিটামিনের ঘাটতি থাকলেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, জিংক ও আয়রন এর ঘাটতি থাকলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

৪) রেগুলার ময়েশ্চারাইজার সিলেকশনে ভুল করা

যেসব স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টে প্যারাবেন, আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল, বেনজাইল অ্যালকোহল, সালফেট ও আর্টিফিশিয়াল ফ্রেগ্রেন্স এগুলো থাকে, সেগুলো সাধারণত ত্বককে অনেক বেশি রুক্ষ করে তোলে। তাই আপনার স্কিন টাইপ যদি ড্রাই হয়, এই উপাদানগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। অয়েলি স্কিনের জন্য স্যালিসাইলিক অ্যাসিড খুব ভালো কাজ করে আমরা জানি। কিন্তু ড্রাই স্কিনে এই উপাদানটি একদমই স্যুট করে না, বরং এতে স্কিন আরও বেশি ড্রাই হয়ে যায়। তাই প্রোডাক্ট সিলেকশনের সময় খেয়াল রাখুন।

 

৫) ওয়েদার অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার সিলেক্ট না করা

আমরা অনেক সময়ই শীতের সময় কেনা ময়েশ্চারাইজার উইন্টার সিজনে শেষ করতে পারি না, থেকে যায় অনেকটা। ডেট এক্সপায়ার্ড হয়নি বলে পরের বছরও সেটা ব্যবহার করি। মনে রাখবেন এতে কিন্তু প্রোডাক্টের কার্যকারিতা অনেক কমে যায়। আবার গরমকালে যে জেল বেইজড লাইট ময়েশ্চারাইজার ইউজ করা হয়, অনেকে শীতের সময়ও সেটা দিয়ে কাজ চালিয়ে নিতে চান। এতে ওয়েদার অনুযায়ী স্কিনে ময়েশ্চারাইজেশনের যে ডিমান্ড সেটা কিন্তু ফুলফিল হচ্ছে না। তাই আবহাওয়া ও প্রয়োজন বুঝে সঠিক প্রোডাক্ট বেছে নিন।

রেগুলার ময়েশ্চারাইজার

৬) স্কিন টাইপ অনুযায়ী প্রোডাক্ট সিলেক্ট না করা

ত্বকের ধরন বুঝে প্রোডাক্ট ব্যবহার করা উচিত। যে ময়েশ্চারাইজার তৈলাক্ত বা স্বাভাবিক ত্বকের জন্য উপযোগী, সেই প্রোডাক্ট দিয়ে রুক্ষ-শুষ্ক ত্বকের পরিপূর্ণ যত্ন করা সম্ভব না। কারণ যে প্রোডাক্টগুলো ড্রাই ও ডিহাইড্রেটেড স্কিনকে টার্গেট করে তৈরি হয়েছে, সেগুলোতে আছে নারিশিং ও ডিপ ময়েশ্চারাইজিং প্রোপারটিজ। অয়েলি স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড প্রোডাক্ট থেকে আপনি সেই বেনিফিট তো পাবেন না, এটাই স্বাভাবিক।

৭) চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায়

কিছু কিছু মেডিসিন ও চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে স্কিন রাফ ও ড্রাই হয়ে যেতে পারে। যেমন- রেটিনয়েডস, বেনজোল পারঅক্সাইড, ডাই-ইউরেটিক্স, হরমোনাল বার্থ কন্ট্রোল পিল, স্টেরয়েড, কোলেস্টেরল কমানোর মেডিসিন, ক্যান্সারের ট্রিটমেন্টে কেমো ও রেডিয়েশন থেরাপি।

৮) কিছু স্কিন রিলেটেড প্রবলেমের কারণে 

রেগুলার ময়েশ্চারাইজার ইউজের পরও অনেকের স্কিনের ড্রাইনেস একদমই কমে না। কিছু কিছু স্কিন কন্ডিশনের কারণে সব সিজনেই ড্রাই প্যাচ দেখা দেয়। যেমন- একজিমা, অ্যালার্জি, সোরিয়াসিস, স্ক্যাবিস, ফাঙ্গাল ইনফেকশন ইত্যাদি। এক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডার্মাটোলজিস্ট এর আন্ডারে চিকিৎসা নিতে হবে।

অ্যালার্জি

৯) লং টাইম এসিতে থাকলে

ঠান্ডা বাতাসে ময়েশ্চারের পরিমাণ কম থাকে এবং বেশিক্ষণ এমন আবহাওয়ায় থাকলে তা দ্রুত স্কিন থেকে আর্দ্রতা শুষে নিয়ে ত্বককে ড্রাই করে দেয়। যারা সব সময় এসিতে থাকেন বা রাতে এসি রুমে ঘুমান, তাদের অবশ্যই ক্রিম বেইজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।

১০) মেডিকেল কন্ডিশন বা শারীরিক জটিলতার কারণে

কিছু ফিজিক্যাল ইস্যু বা শারীরিক সমস্যা থাকলে আমাদের স্কিনে ড্রাইনেস দেখা দিতে পারে। যেমন- থাইরয়েড ডিজঅর্ডার, ডায়াবেটিস, রেনাল প্রবলেম ও এইচআইভি। এছাড়া হরমোনাল পরিবর্তন যেমন প্রেগনেন্সি বা মেনোপজ এর সময়ও এই ধরনের স্কিন প্রবলেম দেখা দিতে পারে।

১১) জেনেটিক্যাল কারণে

জেনেটিক্যালি কিছু কিছু মানুষের এই রকম স্কিন কন্ডিশন থাকতে পারে, যাদের স্কিন খুব দ্রুত শুষ্ক হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই কিছু মানুষের হাত ও পায়ের স্কিন এক্সট্রিমলি ড্রাই থাকে। দেখা যায় যে তাদের ফ্যামিলি হিস্ট্রিতেও এটি আছে।

হাত ও পায়ের স্কিন এক্সট্রিমলি ড্রাই

১২) বয়স বৃদ্ধি পেলে

বয়স বৃদ্ধি পেলে শরীরের ঘাম গ্রন্থি ও তেল গ্রন্থিগুলো কমতে থাকে বলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বক শুষ্ক হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। হুট করে স্কিন ড্রাই হয়ে যাওয়া মানে কিন্তু আপনার স্কিনে এজিং সাইন আসা শুরু করেছে! তাই আপনার ফোকাস করতে হবে অ্যান্টি এজিং স্কিনকেয়ার রুটিনে। ম্যাচিউর স্কিনের জন্য ফর্মুলেটেড ময়েশ্চারাইজার আপনাকে দিবে প্রোপার নারিশমেন্ট ও ময়েশ্চারাইজেশন। রাতের বেলা স্লিপিং মাস্ক বা নাইট ক্রিম ইউজ করতে পারেন। এতে স্কিন হবে সফট ও হাইড্রেটেড।

রেগুলার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরেও স্কিনের শুষ্কভাব কমছে না কেন, সেটা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আশা করছি কারণগুলো চিহ্নিত করতে পারলে সমাধান আপনি নিজেই করতে পারবেন। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।

ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।

 

ছবি- সাজগোজ

The post রেগুলার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরেও স্কিনের ড্রাইনেস কমছে না? appeared first on Shajgoj.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 3010

Trending Articles