সদ্য মা হয়েছেন নামিরা। নিয়মিত ব্রেস্ট ফিডিং করাতে হয় বলে আউটফিটের নিচে স্যুইটেবল কোনো ইনার ওয়্যার তিনি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। ব্রেস্ট স্যাগি হয়ে যাবে কিনা, অথবা ব্রেস্টের শেইপ ঠিক থাকবে কিনা এটা নিয়ে নামিরা বেশ চিন্তায় ছিলেন। এমন চিন্তা প্রেগনেন্ট নারী অথবা সদ্য মা হওয়া যে কোনো নারীরই থাকে। কারণ মাতৃত্বের এই সময়গুলোতে রেগুলার ব্রা ইউজ করা যায় না। আবার সঠিক মাপের ইনার ওয়্যার না হলে অস্বস্তি লাগে, পিঠ ও ঘাড়ে ব্যথা হয়। তাই কমফোর্ট ও হেলথ ইস্যু বুঝে ম্যাটারনিটি ব্রা চুজ করা খুব ইম্পরট্যান্ট। হবু মা এবং সদ্য মা হয়েছেন এমন নারীদের জন্য কী ধরনের ব্রা বেছে নেয়া উচিত সে ব্যাপারেই কিছু তথ্য জানাবো আজকে।
ম্যাটারনিটি ও নার্সিং ব্রা কেন জরুরি?
ম্যাটারনিটি ব্রা কেন জরুরিঃ প্রেগনেন্সিতে ব্রেস্টের বৃদ্ধি পাওয়া খুব স্বাভাবিক একটি বিষয়। কারণ এ সময়ে হবু মায়ের শরীরে হরমোনাল অনেক পরিবর্তন হয়। সেই সাথে ব্রেস্টের সাইজ বড় হতে থাকে। কারণ মায়ের শরীর ধীরে ধীরে ব্রেস্ট ফিডিং এর জন্য প্রস্তুত হয়। শারীরিক পরিবর্তনের এই সময় যদি ব্রা বেশি টাইট হয় তাহলে আনইজি লাগে, ব্যাকপেইন এমনকি নেক পেইনও হতে পারে। তাই এমন ব্রা পরতে হবে, যেটি একইসাথে কমফোর্টেবল, ব্রেস্ট ও ব্যাককে সাপোর্ট দিবে এবং ব্রেস্ট বড় হওয়ার সাথে সাথে স্ট্রেচও হবে।
নার্সিং ব্রা কেন জরুরিঃ ব্রেস্টফিড করানোর সময় ব্রেস্টে হেভি ফিল হয় বলে নতুন মায়েরা সাধারণত নার্সিং ব্রা পরতেই কমফোর্ট ফিল করেন। এ ধরনের ব্রা তে ড্রপ ডাউন কাপ থাকে যেগুলো স্ট্র্যাপসের সাথে ক্লিপ দিয়ে আটকানো থাকে। এতে ব্রেস্ট ফিডিং করানোর সময় ইজিলি খুলে নেয়া যায়।
ব্রা এর সাইজ কখন মেজার করতে হবে?
অন্যান্য সময়ের তুলনায় প্রেগনেন্সির সময়ের ব্রা সাইজ মেজারমেন্ট কিছুটা আলাদা। প্রেগনেন্সির সময় যেহেতু ব্রেস্টের গঠন বদলাতে থাকে, তাই প্রথম তিন মাসে অন্তত একবার ব্রেস্টের মেজারমেন্ট করে ব্রা বাছাই করা উচিত।
নার্সিং ব্রা বেছে নিতে হবে ডেলিভারির মাসখানেক আগে। প্রেগনেন্সির শেষ সময়ে ব্রেস্টের যে গঠন থাকে সাধারণত সেই মাপেই নার্সিং ব্রা চুজ করা উচিত। কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে সেটি যেন বেশি টাইট না হয় এবং ব্রেস্টের কোনো অংশ বাইরে না বের হয়ে থাকে। অনেকে দুটো ব্রা এর সুবিধা একটি ব্রা তে খোঁজেন। এটাও করতে পারেন। এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে-
১) আর্লি প্রেগনেন্সিতে এমন ব্রা সিলেক্ট করতে হবে যেটা সাইজে একটু বড় হয়। এতে ব্রেস্ট ধীরে ধীরে বড় হতে থাকলেও অস্বস্তি হবে না।
২) কেনার সময় খেয়াল রাখবেন ব্রা যেন সফট ও ওয়্যার ফ্রি হয়।
৩) এমন ব্রা চুজ করতে হবে যেটির কাপের হুক খোলা ও লাগানো যায়। এতে নিউবর্ন বেবিকে ব্রেস্ট ফিডিং করাতেও ঝামেলা হবে না।
ম্যাটারনিটি ব্রা চুজ করা কেন জরুরি?
১) কমফোর্ট দেয়
সঠিক ম্যাটারনিটি ব্রা চুজ করার সর্বপ্রথম কারণ হচ্ছে কমফোর্ট। যদি কমফোর্ট ব্যাপারটাই না থাকে, তাহলে ব্রেস্টের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হবে, সব সময় আনকমফোর্ট লাগবে। এমনকি Mastitis নামে একটি ইনফেকশন হতে পারে যেটি মিল্ক সাপ্লাই হতে বাধা দেয়। শুধু ব্রা সিলেকশনই নয়, মিল্ক সাপ্লাই বেড়ে গেলে, ফিডিং শিডিউল চেঞ্জ করলে, বেবির কাছ থেকে লম্বা সময় দূরে থাকলে, এমনকি বেবি বার্থ এর পর শুরুর মাসগুলোতে ব্রেস্ট পাম্প করলে এই ইনফেকশনটি হতে পারে।
২) ব্রেস্ট ফিডিং করানো ইজি হয়
নতুন মায়েরাও যদি রেগুলার ব্রা পরেন, তাহলে ব্রেস্ট ফিডিং করানোর জন্য ব্রা না খোলা ছাড়া উপায় নেই! ম্যাটারনিটি বা নার্সিং ব্রা এই সমস্যা থেকে ইজিলি হেল্প করবে। ব্রা’র কাপ যেটা ক্লিপ দিয়ে আটকানো থাকে সেটা খুলে, কাপ ফোল্ড করে ব্রেস্ট ফিড করানো যায়।
৩) ইচিং প্রবলেম হয় না
ম্যাটারনিটি ব্রা চুজ করার সময় ম্যাটারিয়ালের দিকে খেয়াল রাখা খুবই জরুরি। ইলাস্টিক ব্যান্ড অনেকের জন্যই অস্বস্তির হতে পারে, আবার লেইস অথবা নাইলন ফেব্রিক এর কারণে ইচিং হতে পারে। এই সমস্যাগুলো যেন না হয় সেজন্য কটন ফেব্রিক বেছে নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে ব্রা’র স্ট্র্যাপের দিকেও। স্ট্র্যাপ যদি মাপ মতো না হয়, তাহলে ঘাড় ও পিঠে ব্যথা হতে পারে।
৪) কনফিডেন্স বাড়ায়
ভালো একটি ম্যাটারনিটি বা নার্সিং ব্রা চুজ করা মানে মায়েদের কনফিডেন্স অনেকটাই বেড়ে যাওয়া। বাইরে যাওয়ার সময় ব্রেস্টের সাইজ নিয়ে টেনশন বা অস্বস্তি কম হয়, সেই সাথে সন্তানকে সঠিক সময়ে ব্রেস্ট ফিড করানো যায়।
৫) ব্রেস্ট সাইজ ঠিক রাখে
স্যাগি ব্রেস্ট হওয়া নিয়ে নতুন মায়েদের চিন্তা একটু বেশিই থাকে। আউটফিটে মানাবে না, দেখতে ভালো লাগবে না এসব চিন্তা করে অনেকে বাইরে যাওয়াও কমিয়ে দেন। সঠিক ম্যাটারনিটি ব্রা চুজ করলে ব্রেস্ট সাইজ ঠিক রাখতে অথবা স্যাগি ব্রেস্ট নিয়ে একদম ভাবতে হবে না।
ব্রা বাছাই এর ক্ষেত্রে যেসব বিষয় এড়িয়ে চলতে হবে
- যদি ব্যাক ব্যান্ড বেশি টাইট হয় অথবা বেশি লুজ হয়
- স্ট্র্যাপস যদি বেশি লুজ হয় (ঘাড় থেকে পড়ে যাচ্ছে এমন) এবং যদি বেশি টাইট হয় (কেটে যাচ্ছে এমন)
- কাপ যদি বেশি ছোট হয় (ব্রেস্ট টিস্যুতে বাধা দিচ্ছে এমন) অথবা বেশি বড় হয় (বেশি গ্যাপ রয়ে যাচ্ছে এমন)
সাইজ মেজার করবেন যেভাবে
১) ব্রা’র সঠিক মাপ নির্ধারণের জন্য আগে আয়নার সামনে সোজা হয়ে দাঁড়ান। এবার ইঞ্চি ফিতা নিয়ে ব্রেস্টের ঠিক নিচ বরাবর শরীরের চারপাশে ঘুরিয়ে ইঞ্চিতে মাপ নিন। একদম টাইট ফিটিং না করে ফিতা এমনভাবে ধরতে হবে যেন শুধুমাত্র একটি আঙুল ভেতরে ঢুকতে পারে।
২) যে সংখ্যাটা পাওয়া যাবে সেটি আপনার আন্ডারবাস্ট নাম্বার। আন্ডারবাস্ট যদি জোড় সংখ্যা হয়, তাহলে তার সাথে ৪ যোগ করুন। যদি বিজোড় সংখ্যা হয় তাহলে তার সাথে যোগ করুন ৫। যোগফল যেটা আসবে সেটাই আপনার ব্যান্ড সাইজ।
৩) এবার ব্রেস্টের স্ফীত বা ফুলার অংশে একইভাবে মেজারমেন্ট ফিতাটি ধরুন। এটা হবে আপার বাস্ট সাইজ। আপার বাস্ট সাইজ থেকে ব্যান্ড সাইজ বাদ দিলে যে সংখ্যাটি পাওয়া যাবে সেটাই হবে কাপ সাইজ।
৪) ধরা যাক, আপনার আন্ডারবাস্ট ২৯। এর সাথে ৫ যোগ করে ব্যান্ড সাইজ পাওয়া গেলো ৩৪। আর আপার বাস্ট সাইজ হলো ৩৭। তাহলে কাপ সাইজ (৩৭-৩৪=৩)। এই মাপটি রেফার করছে কাপ C। অর্থাৎ আপনার ব্রা এর মাপ হবে ৩৪ সি। (বিয়োগফল ১ অর্থে এ, ২ অর্থে বি, ৩ অর্থে সি, ৪ অর্থে ডি, ৫ অর্থে ই ইত্যাদি)। অর্থাৎ ডিফারেন্স ১ হলে কাপ সাইজ A, ২ হলে B এভাবে কাউন্ট করতে হবে।
আশা করছি, ব্রা এর সাইজ সিলেকশন নিয়ে আর ভাবতে হবে না। প্রয়োজন অনুযায়ী ব্রা এখন নিজেই সিলেক্ট করে নিতে পারবেন।
চলুন এবার দুটো ম্যাটারনিটি নার্সিং ব্রা এর ফিচার দেখে নেই।
Valene Pure Love Maternity Nursing Bra
- সুপার সফট ও কমফোর্টেবল ফেব্রিক
- ব্রা’র হুক খোলা যায় বলে ইজিলি ব্রেস্ট ফিডিং করানো যায়
- কোনো ওয়্যার না থাকার পরও বডিতে বেশ সুন্দর একটা শেইপ দেয়
- এই ব্রা’র চেস্ট প্যাডগুলো রিমুভ করে ওয়াশ করা যায়
- ব্রেস্ট স্যাগি হতে দেয় না
- কমফোর্টেবল ফেব্রিকের জন্য যে কোনো সিজনেই পরা যায়
- সুন্দর লেসওয়ার্কের কারণে দেখতে এলিগ্যান্ট মনে হয়
- অ্যাডজাস্টেবল স্ট্র্যাপস এবং ব্যাকসাইডে হুক দেয়া আছে
- শোল্ডার স্ট্র্যাপস ভেলভেট ম্যাটারিয়াল দিয়ে তৈরি বলে পরলে সফট ফিল হয়
Valene Sweet Mom Maternity Nursing Bra
- ফেব্রিক কটন হওয়ায় পরতে আরাম লাগে
- প্যাডেড কাপের কারণে ব্রেস্ট লুক এনহ্যান্স হয়
- এক্সট্রা হুক থাকে বলে সাইজ বড় করা যায়
- কাপের ফ্রন্টে বাটন থাকায় ইজিলি খুলে ব্রেস্ট ফিডিং করানো যায়
- পেছনে অনেকগুলো হুক আছে
- ৩/৪ কভারেজ পাওয়া যাবে
- ব্যাক ব্যান্ড বেশ ওয়াইড বলে ব্যাক সাইডে ফুল কভার দেয়
- সফট ও কমফোর্টেবল বলে যে কোনো সিজনেই পরা যায়
- কমফোর্টেবল ফিল দেয় বলে লং টাইম ওয়্যারের জন্য পারফেক্ট
সঠিক ম্যাটারনিটি ব্রা সিলেক্ট করা মানে শুধু মায়ের জন্যই কমফোর্ট নয়, বরং একটি শিশু সুস্থ হয়ে বেড়ে ওঠার জন্যও আপনি তাকে সাহায্য করছেন। কারণ শিশুর জন্মের পর বুকের দুধ আবশ্যক, আর কোনো ধরনের বাধা ছাড়া মিল্ক ফ্লো হওয়াটা এ সময় খুবই জরুরি! আর একটা বিষয় মনে রাখবেন, ব্রা ইউজ করা শেষে ভালোভাবে ক্লিন করাটাও জরুরি। কোনো ধরনের ড্রাই ক্লিন, ব্লিচ বা আয়রন করা যাবে না। শুধু রেগুলার ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুতে হবে। কমফোর্ট ও হেলথ ইস্যু বুঝে ম্যাটারনিটি ব্রা চুজ করতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে। অনলাইনে অর্ডার দিলে ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের লঞ্জেরি আইটেমটি! মেজারমেন্ট সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যা হলে সাজগোজের ফেইসবুক পেইজে ইনবক্সের মাধ্যমে ফিমেল কনসালটেন্টের সাথে কথা বলতে পারবেন।
ছবিঃ সাজগোজ, সাটারস্টক
The post ম্যাটারনিটি ব্রা চুজ করার ক্ষেত্রে কমফোর্ট ও হেলথ ইস্যু কেন জরুরি? appeared first on Shajgoj.