অফিসে কাজ করা মানে দিনের অনেকটা সময় বাড়ির বাইরে থাকা। তাই সকালে বাসা থেকে রেডি হয়ে একবারেই বের হতে হয়। দিনে স্কিন কেয়ারের সুযোগ হয় না, আবার বেলা গড়াতে গড়াতে মেকআপের অবস্থাও করুণ হয়ে যায়। আবার যদি হুটহাট কোনো মিটিং থাকে অথবা অফিস শেষে কোথাও যেতে হয়, তখন মনে হয়, ‘কেন যে মেকআপটা সারাদিন একইরকম থাকে না!’ কী ভুল বললাম? এই অবস্থা কমবেশি সব কর্মজীবী নারীকেই ফেইস করতে হয়। তাই অফিসে মেকআপ করার জন্য কিছু প্রোডাক্ট সব সময় ড্রয়ারে রেখে দিলে হুটহাট রেডি হতে ঝামেলা হবে না। কী সেই প্রোডাক্টগুলো? জানাবো আজকের আর্টিকেলেই।
প্রেসড পাউডার
আপনার স্কিন যদি অয়েলি হয়, তাহলে এই প্রোডাক্টটা আপনার জন্য এক রকম লাইভ সেভিয়ার বলা যায়! কারণ অয়েলি স্কিনে শাইনিভাব বেশি বোঝা যায়। আর এ নিয়ে অনেকেই বেশ আনইজি ফিল করেন। ড্রয়ারে একটি প্রেসড পাউডার থাকলে প্রয়োজনের সময় চাইলেই ইউজ করতে পারবেন। অফিস শেষে যদি কোনো পার্টিতে অ্যাটেন্ড করতে হয়, তাহলে অল্প সময়ে টাচ আপও করে নিতে পারবেন এটি দিয়ে। শুধু অয়েলি নয়, সব ধরনের স্কিনের জন্যই কম্প্যাক্ট বা প্রেসড পাউডার বেশ ইউজফুল। স্কিন টাইপ বুঝে শুধু নিজেরটি বেছে নিন!
আপনাদের সুবিধার জন্য আমি একটি প্রেসড পাউডার সাজেস্ট করছি। বাংলাদেশের মেয়েদের স্কিন টোনের সাথে ম্যাচ করে এই প্রথম নিরভানা কালার ব্র্যান্ড নিয়ে এসেছে MATTIFYING AND PORELESS PRESSED POWDER এর তিনটি শেইড- Light Natural (ফেয়ার স্কিনটোন), Light Beige (মিডিয়াম স্কিনটোন), Light Golden (ডাস্কি স্কিনটোন)। স্কিন টোন বুঝে প্রেসড পাউডার চুজ করা এখন অনেক ইজি!
লিপস্টিক
লিপস্টিক কিন্তু খুব সহজেই আপনার মুড বদলে দিতে পারে। তাই অফিসের ড্রয়ারে একটি লিপস্টিক মাস্ট রাখতে হবে। এক্ষেত্রে যে কালারগুলো প্রায়ই ইউজ করা হয় অথবা আপনার নিজের যদি পছন্দের কোনো কালার থাকে সেটিও রাখতে পারেন। হুট করে কোনো দাওয়াত বা আউটিং এর প্ল্যান হলে আউটফিটের সাথে মিলিয়ে লিপস্টিক দিয়ে নিলেই কিন্তু আপনি একদম রেডি!
নেইল পলিশ
অফিসের ড্রয়ারে রাখার জন্য নেইল পলিশ একদম যে অ্যাসেনশিয়াল একটি প্রোডাক্ট, এমন নয়। তবে হ্যাঁ, এটাও সত্যি যে আউটফিটের সাথে মিলিয়ে নেইল কালার করাটাও ইম্পরট্যান্ট। তাই কিছু কমন কালার ড্রয়ারে রেখে দিতে পারেন। যদি আগের নেইল পলিশ রিমুভ করে নতুন কালার অ্যাপ্লাই করতে হয়, তাহলে একটি রিমুভার রেখে দিতে ভুলবেন না কিন্তু!
এখানেও একটা ছোট্ট সাজেশন। নিরভানা কালার ব্র্যান্ডের রয়েছে ২৫টি নেইল কালার। প্রতিটি কালারই বেশ অ্যাট্রাক্টিভ, সাথে লং লাস্টিংও। কালার দেখে ইজিলি আপনারটি চুজ করে নিতে পারেন।
পারফিউম
অফিসের কোনো মিটিং, কলিগদের সাথে আড্ডা অথবা অফিস শেষে কোনো আউটিং- পারফিউম কিন্তু বেশ ইম্পরট্যান্ট একটা রোল প্লে করে। কেন বলুন তো? আপনি যখন কারও সাথে কথা বলবেন, নিশ্চয়ই চাইবেন না যে আপনার শরীর থেকে কোনো ব্যাড স্মেল আসুক, তাই না? আনকমফোর্টেবল কোনো সিচুয়েশনে পড়ার আগেই হ্যান্ডি একটি পারফিউম অথবা ডিওডরেন্ট রেখে দিন নিজের কাছে!
হেয়ার স্প্রে, ড্রাই শ্যাম্পু অথবা সিরাম
চুল নিয়ে কমপ্লেইন কমবেশি আমাদের সবারই থাকে। যেমন- চুল ড্রাই হয়ে যাচ্ছে অথবা চুল দেখতে মোটেও স্মুথ লাগছে না এমন অনেক সমস্যা। হেয়ার স্প্রে, ড্রাই শ্যাম্পু অথবা সিরাম কিন্তু এই প্রবলেমগুলো ফিক্সড করার জন্য কাইন্ড অফ রেসকিউয়ার হিসেবে কাজ করে। চুল সফট করতে, চুলের ভলিউম বাড়াতে অথবা দিনভর চুলের স্টাইল সেট করে রাখতে তিনটি প্রোডাক্টই কিন্তু বেশ হেল্পফুল। যখনই দরকার হবে জাস্ট ড্রয়ার থেকে বের করে ইউজ করলেই ব্যাড হেয়ার ডে একদম বদলে যাবে!
ময়েশ্চারাইজার ও বডি লোশন
মেকআপের আগে স্কিন প্রিপেয়ার করে নেওয়ার জন্য ময়েশ্চার অ্যাপ্লাই কিন্তু মাস্ট। আবার এসিতে থাকার কারণে ফেইস ড্রাই হয়ে যেতে পারে। ড্রাইনেস কমাতে তাই আপনার স্কিন টাইপ অনুযায়ী একটি ময়েশ্চারাইজার সব সময় অফিসের ড্রয়ারে রাখুন। অনেকের ফেইসের সাথে সাথে হাত-পায়ের স্কিন ড্রাই হয়ে যেতে পারে। তারা ড্রয়ারে একটি বডি লোশন রাখতে পারেন। এতে স্কিন অনেকটা সময় ময়েশ্চারাইজড থাকবে।
লিপ বাম
অফিসে এসি থাকে বলে সারাদিন ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যেই কাজ করা হয়। যার কারণে ঠোঁট শুষ্ক হয়ে চামড়া উঠতে থাকে। আর এই অবস্থায় যদি ম্যাট লিপস্টিক ইউজ করা হয় তাহলে ঠোঁটে সেটি ভালোভাবে বসে না। যার কারণে লিপস্টিক একদম ক্র্যাক হয়ে যায়। সল্যুশন? কঠিন কিছু নয়। পার্সোনাল ডেস্কে সব সময় একটি লিপ বাম রাখুন। দিনে ২/৩ বার অ্যাপ্লাই করুন ঠোঁটে। এটি আপনার ঠোঁটকে সফট ও ময়েশ্চারাইজড রাখবে। আর লিপস্টিক ইউজ করলে লিপসও ক্র্যাক করবে না।
হাইড্রেটিং ফেইস মিস্ট
সকালে রেডি হয়ে অফিসে এসেছেন ঠিকই, কিন্তু কিছু সময় পর ফেইস দেখতে একদম ডিহাইড্রেটেড লাগতে পারে। এমন হলে ফেইস মিস্ট কিন্তু আপনার জন্য অ্যাসেনশিয়াল একটি প্রোডাক্ট। হায়ালুরোনিক অ্যাসিডযুক্ত ফেইস মিস্ট স্কিনে ইনস্ট্যান্ট রিফ্রেশড ফিল এনে দিবে। অফিসের ড্রয়ারে ফেইস মিস্টের একটি মিনি বোতল রাখুন, সারাদিন রিফ্রেশড থাকুন! এছাড়াও স্কিন টাইপ অনুযায়ী বাজারে বেশ কিছু ফেইস মিস্ট আছে। এর বদলে রোজ ওয়াটারও ইউজ করতে পারেন।
হ্যান্ড ক্রিম
ফেসিয়াল স্কিনকে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়, হাতের স্কিনের প্রতিও কি সমান যত্ন নেওয়া হয়? বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই এই উত্তর নেগেটিভ হবে। কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে ইয়াংগার লুকিং হ্যান্ড পেতে হলে ময়েশ্চারাইজার ইউজ করতে হবে। তাই ড্রয়ারে একটি হ্যান্ড ক্রিমও রাখুন। আর কয়েক ঘন্টা পর পর একটু প্যাম্পার করুন নিজের হাতকে।
এখন বলুন তো, অফিসে কাজ করার সময় নিজেকে প্যাম্পারিং করাটা কি কঠিন মনে হচ্ছে? নিজের দিকে খেয়াল রাখা মানে কিন্তু কাজের প্রতিও মনোযোগ বৃদ্ধি পাওয়া। কি, বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে অফিসের ড্রয়ারে জিনিসগুলো রেখেই দেখুন! হেয়ার কেয়ার, স্কিন কেয়ার ও মেকআপ রিলেটেড যে কোনো অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন সাজগোজ থেকে। অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম অথবা সাজগোজের চারটি আউটলেট যমুনা ফিউচার পার্ক, সীমান্ত সম্ভার, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার এবং উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) থেকেও কিনতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টগুলো।
ছবিঃ সাজগোজ
The post অফিসে মেকআপ? হুটহাট রেডি হতে যে প্রোডাক্টগুলো হাতের কাছে রাখবেন! appeared first on Shajgoj.