স্কিন হেলদি রাখতে কম বেশি স্কিনকেয়ার তো আমরা প্রত্যেকেই করি৷ স্কিনের যত্ন নেওয়ার জন্য এখন আমাদের হাতের কাছেই বিভিন্ন ধরনের স্কিনকেয়ার প্রোডাক্টস অ্যাভেইলেবল আছে। কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর এমন একটা স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট যেটা সঠিকভাবে ইউজ করতে পারলে স্কিন টেক্সচার ইম্প্রুভ হয় এবং স্কিনের ডেড সেলস রিমুভ হয়ে স্কিন হয়ে ওঠে ন্যাচারালি গ্লোয়ি! আজকে আপনাদের জানাবো কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর কী এবং কোন স্কিন টাইপের জন্য কেমন ধরনের কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর সবচেয়ে ভালো রেজাল্ট দিবে সে সম্পর্কে। যারা স্কিনকেয়ারে বিগেইনার, তাদের জন্য এই লেখাটা অনেক হেল্পফুল হবে আশা করি।
কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর কী?
একদম সহজ ভাষায় কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর হলো অ্যাসিড দিয়ে তৈরি একটা স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট। তবে অ্যাসিড শুনেই আবার ভয় পেয়ে যাবেন না কিন্তু! কারণ কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটরে যে অ্যাসিড থাকে সেটা স্কিনের জন্যে মোটেও হার্মফুল নয়। স্কিনকেয়ারে এর আছে অ্যামেজিং বেনিফিটস। এই এক্সফোলিয়েটরে থাকা অ্যাসিডের মূল কাজ হলো জেন্টলি আমাদের স্কিন থেকে ডেড সেলস রিমুভ করা এবং পোরস আনক্লগ করে স্কিনকে হেলদি ও রেডিয়েন্ট রাখা।
অ্যান্টি এজিং স্কিনকেয়ার রুটিনে এই প্রোডাক্টটি ইনক্লুড করতে বলা হয়। কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটরে যে অ্যাসিডগুলো থাকে সেগুলোকে কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েন্ট বলা হয়। সবচেয়ে জনপ্রিয় কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েন্টগুলো হচ্ছে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (AHA) ও বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (BHA)। চলুন এগুলো সম্পর্কে আরেকটু ডিটেইলসে জেনে আসি।
আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (AHA)
আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের বৈশিষ্ট্য হলো এটা ওয়াটার সল্যুবল এবং স্কিনের টপ লেয়ারে সবচেয়ে ভালোভাবে কাজ করে। এই অ্যাসিড হাইপার পিগমেন্টেশন বা সানবার্ন কমিয়ে স্কিন ইভেন টোনড করতে হেল্প করে। পাশাপাশি এনলার্জড পোরগুলো মিনিমাইজ করতে, ফাইন লাইনস বা রিংকেলস কমাতেও বেশ ভালো কাজ করে। আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের পপুলার কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট হচ্ছে গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, ল্যাকটিক অ্যাসিড, ম্যালিক অ্যাসিড, ম্যান্ডেলিক অ্যাসিড ইত্যাদি।
বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (BHA)
বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের মূল বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এটা ফ্যাট সল্যুবল। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে ফ্যাট সল্যুবল হওয়ায় এটা খুব ইজিলি আমাদের স্কিনের ডিপ লেয়ারে যেতে পারে। এই অ্যাসিড স্কিনের ক্লগড পোরস, একনে, ব্ল্যাকহেডস, হোয়াইটহেডস ইত্যাদি কমাতে সবচেয়ে ভালো কাজ করে। স্যালিসাইলিক অ্যাসিড হলো বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিডের সবচেয়ে পরিচিত উদাহরণ।
কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর কীভাবে কাজ করে?
আমাদের স্কিনের সেলগুলো প্রায় প্রতিমাসেই ন্যাচারালি রিজেনারেট হয়ে থাকে। তখন ডেডসেলগুলো ঝরে গিয়ে নতুন স্কিনসেলস দেখা যায়। কিন্তু অনেক সময় বিভিন্ন স্কিন ক্রাইসিস, আবহাওয়া, সান এক্সপোজার, এজিং অথবা স্কিন টাইপ না বুঝে প্রোডাক্ট ইউজ করার কারণে ডেড সেলগুলো পুরোপুরি রিমুভ হয় না! তখনই স্কিনে পোর ক্লগিং, ব্রেকআউট বা অতিরিক্ত ড্রাইনেসের মতো প্রবলেমগুলো দেখা দেয়। সেই সময় স্কিনে নতুন সেলস জেনারেট হতে পারে না এবং স্কিনের ন্যাচারাল গ্লো কমে যেতে শুরু করে।
এই প্রবলেমগুলোর ইজি ও সিম্পল সল্যুশন হিসাবে কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর সাজেস্ট করা হয়৷ অ্যাপ্লাই করার পর এই এক্সফোলিয়েটর আমাদের স্কিনে জমে থাকা ডেডসেলসের বন্ড ভেঙে ফেলে। এর ফলে ধীরে ধীরে স্কিনের ডেডসেলস রিমুভ হয়ে যেতে শুরু করে এবং ক্লগ হয়ে থাকা পোরগুলো ওপেন হয়ে যায়। তখনই স্কিন টেক্সচার বেটার হতে শুরু করে এবং স্কিনে হেলদি গ্লো দেখা দেয়। সুতরাং, বুঝতেই পারছেন কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর স্কিনের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ!
কোন স্কিন টাইপের জন্য কোনটি স্যুইটেবল?
নিজের স্কিন টাইপ ও কনসার্ন বুঝে সে অনুযায়ী স্কিনকেয়ার রুটিনে কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর অ্যাড করতে হবে, তাহলেই আপনি বেনিফিট পাবেন। ফেইসে অ্যাকটিভ পিম্পলস বা একনে থাকলে ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর বা স্ক্রাব ইউজ করতে মানা করা হয়, সেক্ষেত্রে এটি বেশ ভালো অপশন।
১) যদি আপনার ড্রাই স্কিন হয়ে থাকে এবং স্কিনে পিগমেন্টেশন বা ফাইন লাইনসের প্রবলেম থাকে, তাহলে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড রয়েছে এমন একটা কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর বেছে নিন।
২) যদি আপনার স্কিন অয়েলি ও একনে প্রন হয়, পাশাপাশি ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস ও ওপেন পোরস থাকে, তাহলে বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিডযুক্ত কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর স্কিনকেয়ার রুটিনে অ্যাড করুন।
৩) যদি আপনার নরমাল বা কম্বিনেশন স্কিন হয়ে থাকে, তাহলে স্কিন কনসার্ন বুঝে কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর বেছে নিন৷ যেমন- যদি স্কিনে ফাইন লাইনস বা রিংকেলস থাকে, তাহলে এক্সফোলিয়েটর হিসেবে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড বেছে নিন। আবার যদি ব্ল্যাকহেডস বা হোয়াইটহেডস থাকে, তাহলে বেটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড রয়েছে এমন এক্সফোলিয়েটর বেছে নিন।
বিগেইনার গাইডলাইন
স্কিনকেয়ার রুটিনে কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ইনক্লুড করার ক্ষেত্রে খুব সিম্পল কয়েকটা রুলস ফলো করতে হবে। সেগুলো হলো-
১. যারা কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েশনে একদমই বিগেইনার, তারা লো কনসেনট্রেশনের অ্যাসিড রয়েছে এমন এক্সফোলিয়েটর বেছে নিন। এতে স্কিনে ইরিটেশন হওয়ার চান্স কম থাকবে। একইসাথে কয়েকটি নতুন প্রোডাক্ট ট্রায়াল দিবেন না ভুলেও!
২. কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ইউজ করার আগে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করে নিন। আপনার বয়স যদি ২০+ হয়, তাহলেই অ্যাকটিভ ইনগ্রেডিয়েন্ট আপনার স্কিনকেয়ার রুটিনে রাখুন। টিনেজে জাস্ট বেসিক স্কিনকেয়ার রুটিন ফলো করবেন।
৩. এক্সফোলিয়েটর ইউজ করতে হলে শুরুতে নিজের পছন্দমতো ফেইসওয়াশ দিয়ে ফেইস ক্লিন করে নিন। তারপর কটন প্যাডে কিংবা হাতের আঙ্গুলে অল্প পরিমাণে এক্সফোলিয়েটর নিন এবং জেন্টলি স্কিনে অ্যাপ্লাই করুন৷ সবশেষে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করতে ভুলবেন না!
৪. সপ্তাহে দুইবারের বেশি কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ইউজ করার দরকার নেই। কারণ স্কিন যদি ওভার এক্সফোলিয়েটেড হয়ে যায়, তাহলে স্কিনে রেডনেস বা র্যাশ দেখা দিতে পারে।
৫. কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ইউজ করা শুরু করলে স্কিন কিছুটা সান সেনসিটিভ হয়ে যায়। এ কারণে দিনের বেলায় সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। ২/৩ ঘন্টা পর পর সানস্ক্রিন রিঅ্যাপ্লাই করুন।
কোথায় পাবেন অথেনটিক কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর?
কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর সহ অথেনটিক সেলফ কেয়ার প্রোডাক্টসের জন্য সাজগোজকে ট্রাস্ট করতে পারেন চোখ বন্ধ করে। বেস্ট ডিলে প্রোডাক্টস পারচেজ করতে ভিজিট করুন সাজগোজের ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ফিজিক্যাল স্টোর। অনলাইনে কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ৪টি শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে) ও সীমান্ত সম্ভার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
এই ছিল কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর নিয়ে আজকের আলোচনা। আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন, স্কিনের বিভিন্ন প্রবলেমস দূর করতে এই একটা প্রোডাক্টের ভূমিকা কতটা বেশি! যদি নিজের স্কিনের ধরন বুঝে সে অনুযায়ী কয়েকমাস কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ইউজ করতে পারেন, তাহলে নিজেই দেখতে পারবেন স্কিন কতটা ব্রাইট ও হেলদি হয়েছে! একবার ট্রাই করেই দেখুন। তাহলে আজ এই পর্যন্তই। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ছবি- সাজগোজ, ব্লগ.হারমো
The post কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর | হেলদি ও রেডিয়েন্ট স্কিনের আল্টিমেট সল্যুশন! appeared first on Shajgoj.