বেসিক স্কিন কেয়ারে ডেইলি ক্লেনজিং, টোনিং, ময়েশ্চারাইজিং, সান প্রোটেকশন সবই করা হচ্ছে। কিন্তু সপ্তাহে ১/২ দিন ত্বকে জমে থাকা ডেড সেলস আর ব্ল্যাকহেডস ক্লিন করা হয় তো? স্ক্রাবিং উইকলি স্কিনকেয়ারের একটি অপরিহার্য ধাপ। এক্সফোলিয়েটর দুই ধরনের, কেমিক্যাল এক্সফলিয়েটর আর ফিজিক্যাল এক্সফলিয়েটর। স্ক্রাবিং ফিজিক্যাল এক্সফলিয়েশনের সবচেয়ে পরিচিত একটা ফর্ম। বাজারে এত ধরনের স্ক্রাব! ত্বকের যত্নে সঠিক স্ক্রাব সিলেকশন নিয়ে অনেকেরই কনফিউশন আছে। আজ আমরা স্ক্রাবিং নিয়ে একটু ডিটেলসে জানবো, সেই সাথে ৫টি স্ক্রাবের রিভিউ শেয়ার করবো যাতে আপনারা নিজের ত্বকের জন্যে বেস্ট প্রোডাক্টটি বেছে নিতে পারেন।
ডেইলি ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুই, এরপরও কি স্ক্রাবের দরকার আছে?
অবশ্যই আছে! এক্সফোলিয়েশন আর ক্লেনজিং আলাদা দুটো টার্ম। ফেইস ওয়াশ আপনার মুখের উপরিভাগের ময়লা, তেল, মেকআপ এগুলো ক্লিন করে। আর স্ক্রাবের ছোট ছোট দানার মাধ্যমে ম্যাসাজ করে ত্বকের ডেড সেলের লেয়ার আর ব্ল্যাককহেডস রিমুভ করা হয়, অর্থাৎ ডিপ ক্লিনিং হয়। আপনি যদি ড্রাই টু নরমাল স্কিনের অধিকারী হন আর দ্রুত ডেড স্কিন সেলের স্তর জমতে থাকে, তাহলে স্ক্রাবিং তো মাস্ট। নরমাল ক্লেনজার দিয়ে ফেইসের পোরস থেকে ব্ল্যাকহেডস, ডার্ট এগুলো ভালোভাবে পরিষ্কার হয় না। তাহলে এবার ক্লিয়ার হলেন তো যে ডেইলি ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়ার পরও সপ্তাহে ১ বা ২ দিন স্ক্রাবিং করা জরুরী!
স্ক্রাবিং কাদের জন্য এবং কীভাবে করবো?
টিনেজ থেকে শুরু করে সব বয়সের ছেলে মেয়েরাই সাপ্তাহিক স্কিনকেয়ারে স্ক্রাবিং করতে পারেন। তবে টিনেজারদের খুবই মাইল্ড স্ক্রাব ইউজ করা উচিত, যাতে স্কিনে কোনোরকম হার্শ ফিল না হয়। বেশি পরিমাণে ডেড সেলস জমে স্কিন রাফ হয়ে গেলে স্ক্রাবিংয়ের আগে স্টিমিং বা গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। আলতোভাবে সার্কুলার মোশনে নিচে থেকে উপরে ম্যাসাজ করতে হবে, ২/৩ মিনিট ম্যাসাজ করাই এনাফ! এবার মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিয়ে ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। আইস কিউব অ্যাপ্লাই করে নিলে ওপেন পোরগুলো বন্ধ হয়ে যাবে।
তবে, ত্বকে অ্যাক্টিভ একনে বা ব্রণ থাকলে দানাদার স্ক্রাব দিয়ে ঘষাঘষি করা যাবে না। এতে ব্রণ আরও বাড়তে পারে। আর যখনই স্ক্রাবিং করবেন, জোরে জোরে ঘষাঘষি করবেন না, এতে স্কিন সেলস ড্যামেজ হতে পারে।
স্ক্রাবিং না করলে কী হবে?
ত্বকের কোষেরও নির্দিষ্ট বয়সসীমা আছে, স্বাভাবিকভাবেই কোষ পুনর্গঠিত ও রিপ্লেস হয়। নিউ সেল তৈরি হয় আর ডেড সেলসের পরত জমে স্ট্রাটাম কার্নেয়াম সারফেসে ( ত্বকের উপরিভাগের লেয়ার )। সময়মতো এগুলো রিমুভ না করলে ত্বকে নানাধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। মরা কোষের সাথে ত্বকের সেবাম আর ধূলোবালি মিশে রোমকূপ বন্ধ হলেই স্কিন প্রবলেম যেমন ক্লগড পোর, ডার্ক প্যাচ দেখা যায়। ত্বকে সময়ের আগেই এজিং সাইন চলে আসে, উজ্জ্বলতা হারিয়ে যাওয়া, স্কিনের ডালনেস ইত্যাদি সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাহলে বুঝতে পারলেন তো, স্কিনকেয়ারে স্ক্রাবিং ঠিক কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ।
৫ টি স্ক্রাবের রিভিউ দেখে নিন
অনেকেই স্কিন কেয়ারে স্ক্রাব ইউজ করতে চাচ্ছেন, বা যারা আগের থেকেই এক্সফলিয়েশন করেন কিন্তু নতুন কোনো প্রোডাক্ট ট্রাই করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্যে আজকের আর্টিকেলটি হেল্পফুল হবে আশা করি। চলুন কয়েকটি স্ক্রাবের শর্ট রিভিউ দেখে আসি, এতে আপনি এসব স্ক্রাবের খুঁটিনাটি জানতে পারবেন, সেই সাথে নিজের ত্বকের জন্য বেস্ট প্রোডাক্টটিও বেছে নিতে পারবেন।
St. Ives Blackhead Clearing Face Green Tea Scrub
এই ব্র্যান্ডের অনেক ধরনের স্ক্রাব আছে, তারমধ্যে গ্রিন টিযুক্ত এই এক্সফোলিয়েটরটি আমার খুবই পছন্দের। আমার অয়েলি এন্ড সেনসিটিভ ত্বকে এটি দারুন স্যুট করে। সব স্কিনটাইপে এই স্ক্রাবটি ইউজ করা যাবে।
১) গ্রিন টি, অলিভ লিফ এক্সট্র্যাক্টযুক্ত, ন্যাচারালি ত্বকের ব্ল্যাকহেডস রিমুভ করে।
২) প্যারাবেন ফ্রি, অয়েল ফ্রি, নন কমেডোজেনিক।
৩) স্যালিসাইলিক এসিডযুক্ত, অ্যাকনেপ্রন স্কিনে ইউজ করা যেতে পারে।
Neutrogena Visibly Clear Blackhead Eliminating Scrub
নিউট্রোজেনা ব্র্যান্ডটি নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। পপুলার একটি ব্র্যান্ড আর এদের স্কিন কেয়ার রেঞ্জের সব প্রোডাক্টের ফিডব্যাক বেশ ভালো। তবে ত্বকের ধরন আর চাহিদা বুঝে আপনাকে স্যুইটেবল প্রোডাক্টটি বেছে নিতে হবে আর কি!
১) এই স্কাবটি সব ধরনের ত্বকে মানিয়ে যায়, ক্লিনিক্যালি টেস্টেড, ব্রেকআউটের ভয় নেই।
২) ত্বকে একদমই হার্শ ফিল হয় না। স্কিন অনেক সফট ও ফ্রেশ লাগে প্রথমবার ইউজের পর থেকেই।
৩) ন্যাচারাল সেলুলোজ এক্সফোলিয়েটর ত্বকের পোরসের গভীর থেকে ময়লা পরিষ্কার করে।
LILAC Brightening Daily Scrub All Skin Types
ক্ষতিকর ক্যামিকেল ফ্রি, ভেগান ও মাইল্ড কোনো স্ক্রাব খুঁজছেন? লাইলাকের স্ক্রাবটি তাহলে বেস্ট চয়েজ। যেহেতু বেশ মাইল্ড আর পার্টিকেল খুবই ছোট তাই ১ দিন পর পরই ইউজ করা যায়। সব ধরনের ত্বকে মানিয়ে যায় সহজেই।
১) ক্ষতিকর প্যারাবেন ফ্রি, অ্যালকোহল ফ্রি, হালাল, হাইপোএলারজেনিক অর্থাৎ এটাতে এলার্জিক রিয়েকশন হওয়ার সম্ভাবনা নেই!
২) আর্টিফিশিয়াল পার্টিকেলের বদলে আছে এতে ওয়ালনাট শেলের দানা, যেটা খুব জেল্টালি ত্বককে পরিষ্কার করে।
৩) অ্যাভোক্যাডো অয়েল, আনারের এক্সট্রাক্টসহ ন্যাচারাল ইনগ্রেডিয়েন্ট ইউজ করা হয়েছে, যা ত্বককে ময়েশ্চারাইজড রাখে ক্লিন করার সাথে।
Boots Cucumber Facial Scrub Rub And Scrub All Skin Types
এই স্কাবটিও বেশ মাইল্ড, সব স্কিনটাইপে ভালোভাবে স্যুট করে। যারা রিজেনেবল প্রাইসে ভালোমানের প্রোডাক্ট খুঁজছেন, তারা এটি ট্রাই করতে পারেন। আর টিনেজাররাও নির্দ্বিধায় এটি ইউজ করতে পারবে।
১) এটা বেশ লাইট ও ক্রিমি ফর্মুলার, কোমলভাবে ত্বকের ডেড সেলস রিমুভ করে।
২) ত্বকে কুলিং ইফেক্ট দেয়, কেননা এতে শসার নির্যাস আছে।
৩) স্মেল খুবই রিফ্রেশিং, আর ত্বকে কোনোরকম ইচিনেস হয় না।
St. Ives Fresh Skin Apricot Scrub
এটিও বেশ পপুলার একটি স্ক্রাব, অনেকেই হয়তো ইউজ করেছেন। একসময় দানাদার স্ক্রাব বলতে এপ্রিকোটের এই স্ক্রাবটিকেই চিনতাম! দারুন কাজ করে, যারা ইউজ করেছেন তারা তো জানেনই।
১) এপ্রিকোটের ভিটামিন এ আর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ত্বকের নারিশমেন্ট করে।
২) কোনোরকম ড্রাই ফিল হয় না, ত্বক ধোয়ার পর অনেক ফ্রেশ দেখায়।
৩) যাদের ত্বকে ডেড সেলস পাইল আপ হয়ে গেছে, তাদের জন্য দারুন কার্যকরী। দানাদার বিডস থাকায় গভীর থেকে ত্বক পরিষ্কার হয়।
তো, আমরা জেনে নিলাম ত্বকের যত্নে স্ক্রাবিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ! আশা করছি আপনারা নিজেদের ত্বকের ধরন ও কনসার্ন অনুযায়ী ঠিকঠাক প্রোডাক্টটি বেছে নিতে পারবেন। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে আমার সবসময়ই ভরসা শপ.সাজগোজ.কম। তাছাড়া সাজগোজের দুইটা আউটলেট আছে, যেটা যমুনা ফিউচার পার্ক আর সীমান্ত সম্ভারে অবস্থিত। তাহলে আজ এই পর্যন্তই। নিজেকে সময় দিন, নিজের যত্ন নিন আর মন খুলে হাসতে ভুলবেন না! সুন্দর হোক আপনার প্রতিটা মুহূর্ত। ভালো থাকবেন।
ছবি- শপ.সাজগোজ.কম
The post স্কিন কেয়ারে স্ক্রাবিং | ত্বকের যত্নে সঠিক স্ক্রাবটি ব্যবহার করছেন তো? appeared first on Shajgoj.