দেখতে দেখতে শীত পড়ে গেল। ছেলেদের ত্বক স্বাভাবিকভাবেই একটু রুক্ষ হয় আর এই সময় ত্বকের রুক্ষতা আরও বেড়ে যায়। ছেলেরা সময়ের অভাবে বা অলসতার কারণে ঠিকভাবে ত্বকের যত্ন করে না। যার ফলে ত্বকে দেখা দেয় একনে, ড্রাইনেস সহ ঠোঁটের পাশ দিয়ে ফেটে যাওয়া কিংবা ফেইসে সাদাটে হয়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন সমস্যা। তাই শীতে ছেলেদের উচিৎ ত্বকের সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক, শীতে ছেলেদের বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন।
ফেইসওয়াশ
ফেইসওয়াশ কখন ব্যবহার করেন? বাহির থেকে আসার পর তাই না। ঘুম থেকে উঠার পর কি ফেইসওয়াশ দিয়ে কি মুখ ধোয়া হয়? শীতের দিনেও ঘুম থেকে উঠার পর ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়াটা মনে হয় সব থেকে কষ্টের কাজ। স্কিন ড্রাই হোক বা অয়েলি, ঘুম থেকে উঠে ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখটা পরিষ্কার করে নেয়াটা জরুরি। সকালে মুখের ত্বকে যে অতিরিক্ত তেল জমে থাকে তা ত্বকে ব্রণের সমস্যা তৈরি করতে পারে। শীত দেখে কিন্তু অনেকেই মুখ পরিষ্কার করতে গরম পানি ব্যবহার করে থাকি। আবার অনেকে একদম ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করে থাকি। গরম বা ঠাণ্ডা পানি কোনোটাই কিন্তু ত্বকের জন্য ভালো না। কারণ এতে ত্বকের ন্যাচারাল তেল নষ্ট হয়ে যায়। তাই মুখ পরিষ্কার করার সময় হালকা কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা ভালো।
এক্সফলিয়েটর
ত্বকের মৃতকোষকে পরিষ্কার করাকে এক্সফলিয়েটিং বলে। আমাদের ত্বকে যে ডেডসেল তৈরি হয়, এক্সফোলিয়েটিং এর মাধ্যমে পরিষ্কার হয়ে যায়। আর এর ফলে ত্বক হয় মসৃণ ও সুন্দর। শীতে ত্বক অনেক বেশি রুক্ষ হয়ে যায়, ত্বকের এই রুক্ষতা থেকে ফাইনলাইনস বা বলিরেখার তৈরি হয়। এক্সফলিয়েশনের কারণে ত্বকের আরও কিছু উপকার হয়, যেমন ব্রন বা পিগমেনটেশন সমস্যা রিপেয়ার করতে সাহায্য করে। ত্বক থাকে ব্রাইট এবং হেলদি।
ময়েশ্চারাইজার
শীতে ত্বক সবচেয়ে বেশি শুষ্ক বা ড্রাই হয়ে থাকে। এই শুষ্কতা দূর করতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি। এটি ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ত্বককে সব সময় ময়েশ্চারাইজড রাখা খুব জরুরি এই সময়। এটি ত্বকের সুরক্ষা করে। অনেকেই ভাবে অয়েলি স্কিনে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার দরকার নেই। কিন্তু এই ধারণাটি ভুল। সব ধরনের ত্বকের জন্যই কিন্তু ময়েশ্চারাইজার দরকার। শীতে ত্বক বেশি শুষ্ক হয়ে পড়লে মুখ সাদাটে হয়ে যায়। এই সাদাটে ভাব দূর করতে ময়েশ্চারাইজার সব থেকে ভালো কাজ করে।
এই সময় কিন্তু ত্বকের ভাজগুলো আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে এবং বলিরেখাও দেখা দিতে পারে। অ্যান্টি এজিং এর জন্যও ময়েশ্চারাইজার খুব ভালো কাজ করে। এছাড়া ত্বকের শুষ্কতার কারণে চুলকানি ভাব, লালচে ভাব থাকতে পারে। আর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকলে এই সমস্যাগুলো দূর হবে। দিনে ও রাতে সবসময় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি। এছাড়া বাহিরে যাওয়ার আগেও কিন্তু ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। রাতে অয়েল বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যায়। ত্বকের ধরন বুঝে অয়েল বেজড, ওয়াটার বেজড অথবা জেল বেজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে উপকৃত হবেন।
সানস্ক্রিন
বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিনের অন্যতম ধাপ হচ্ছে সানস্ক্রিন। বিশেষ করে ছেলেদের সানস্ক্রিন সব থেকে দরকার। ছেলেদের বেশির ভাগ সময় বাহিরে থাকা হয়। শীতকালে রোদে থাকতে কম বেশি সবারই ভালো লাগে। রোদের তাপটা এই সময় খুব ভালো লাগে। তাপ কম থাকে দেখে অনেকেই ভাবি এই সময় সানস্ক্রিন এপ্লাই না করলেও চলবে। কিন্তু এই ধারণাটা একদম ভুল। সূর্যের ক্ষতিকর ইউভি-রে ত্বককে ড্যামেজ করে এবং সানট্যানের সমস্যাও হতে পারে।
লিপবাম
শীতে ঠোঁট অনেক ড্রাই হয়ে যায়। ঠোঁটের আশেপাশে সাদাটে কিংবা উষ্কখুষ্ক হয়ে থাকে এবং ফেটে যায়। তাই এই সময় ঠোঁটেরও যত্ন দরকার। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ঠোঁটে লিপবাম এপ্লাই করা জরুরি। এতে করে ঠোঁট ফাটা দূর করবে এবং ঠোঁট থাকবে নরম। তাই রাতে ঘুমানোর আগে এবং বাহিরে বের হওয়ার আগে যখনই ঠোঁট শুষ্ক মনে হবে লিপবাম এপ্লাই করে নিতে হবে।
শীতকালে স্কিন কেয়ারের পাশাপাশি শীতের সবজি, ফলমূল খেতে ভুলবেন না। সঠিক খাদ্যাভ্যাস কিন্তু স্কিন কেয়ারে অনেক সাহায্য করে। ছেলেদের অনেকেই রেগুলার জিম বা ব্যায়াম করে থাকে, যার ফলে শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায়। আর এর প্রভাব পড়ে স্কিনের উপর গিয়ে। তাই বেশি করে পানি পান করতে হবে।
সময়ের সাথে বদলে গিয়েছে সৌন্দর্যের সংজ্ঞা। নারীপুরুষ নির্বিশেষে সবার উচিত নিজেদের ব্যাপারে সচেতন হওয়া। আশা করছি, আর্টিকেলটি আপনাদের জন্য হেল্পফুল ছিল।
অথেনটিক স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টস কিনতে চাইলে আপনারা সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল ভিজিট করতে পারেন। যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত, আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন।
The post শীতে ছেলেদের বেসিক স্কিন কেয়ার রুটিন কেমন হওয়া উচিত? appeared first on Shajgoj.