চুল যতই ঝলমলে সুন্দর হোক না কেন! বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় যত্নের অভাব চুলে দেখা দেয় একের পর এক নতুন নতুন সমস্যা। ছেলে হোক কিংবা মেয়ে এমন খুব কম মানুষই আছেন যে কিনা চুলের সমস্যায় ভুগছেন না। চুল রুক্ষ বা ড্রাই হয়ে যাওয়া, পাতলা হয়ে যাওয়া, খুশকির সমস্যা, চুল মলিন হয়ে যাওয়া, আগা ফেটে যাওয়া সহ এমন আরও কত কী! তবে সুন্দর চুলের স্বপ্ন কিন্তু আমরা সবাই দেখি। সমস্যা তো থাকবেই। তবে সমস্যা যেমন রয়েছে তেমনি এর সমাধানও রয়েছে। নানা কারণেই চুলে ড্যামেজ হতে পারে। চুলের ড্যামেজ রিপেয়ার করতে হেয়ার মাস্ক ম্যাজিকের মত কাজ করে। তবে ড্যামেজ ফ্রি হেয়ার পেতে কোন হেয়ার মাস্কটি বেছে নিব, তা আমরা অনেকেই জানিনা। বিশেষ করে যাদের চুল ড্রাই বা রুক্ষ হয়ে যাচ্ছে তাদের জন্যে হেয়ার মাস্ক হতে পারে খুবই ভাল একটি সল্যুশন। এছাড়াও যাদের খুব বেশি হেয়ার ফল হচ্ছে, তারাও কিন্তু ব্যবহার করতে পারেন হেয়ার মাস্ক।
চুলের ড্যামেজ কমাতে হেয়ার মাস্ক কীভাবে কাজ করে এবং এর উপকারিতা কী?
চুল নিয়ে কম বেশি আমদের সবারই দুশ্চিন্তার শেষ নেই। আমরা যারা আমাদের ত্বক এবং চুল নিয়ে সচেতন তারা কিন্তু নিয়মিত নানা উপায়ে আমাদের ত্বক এবং চুলের পরিচর্চা করতে ভালবাসি। অনেক সময় শখের চেয়ে বেশি এটি আমাদের প্রয়োজনই হয়ে পরে। চুলের যত্নে যেকোন প্রোডাক্ট বাছাই করার আগে আমাদের অনেকের কাছেই ফার্স্ট চয়েস থাকে প্রাকৃতিক উপাদানগুলো। কারণ প্রাকৃতিকভাবে চুলের যত্ন নিলে এর একদমই কোন সাইড ইফেক্ট থাকেনা বললেই চলে। হেয়ার মাস্ক আমাদের চুলের নানা রকম সমস্যা সমাধানে কাজ করে। যেমন-
পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রোটিন সরবরাহ করে।
আমাদের চুলকে কোমল করে এবং সাইনি লুক দেয়। যাদের চুলের টেক্সচারে সমস্যা থাকে, তা রিপেয়ারে সাহায্য করে।
প্রতিদিন নানা কারণে চুল ড্যামেজ হয়। যেমন, বাইরের ধুলাবালি ময়লা চুলকে নিষ্প্রাণ করে দেয়। হেয়ার মাস্ক ব্যবহারে এই সমস্যাগুলোর সমাধান হয়।
মাথার স্ক্যাল্প এর বিভিন্ন সমস্যা, যেমন- খুশকি এবং ইচিং জনিত সমস্যার সমাধান করে।
চুলকে স্মুথ এবং সফট করে তোলে।
হেয়ার মাস্ক তৈরিতে কোন কোন উপাদানগুলো বাছাই করবেন?
আমাদের একেক জনের চুলের ধরণ বুঝে চুলের সমস্যাগুলোও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে প্রাকৃতিকভাবে বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে যা, যেকোনো ধরণের হেয়ার ড্যামেজ এর সল্যুশন হিসেব দারুণ ভাবে কাজ করে। তাদের মধ্যে অন্যতম কিছু উপাদান হলো-
- আমলা গুঁড়া – আমলা আমাদের হেয়ার ফল কমাতে সাহায্য করে এবং চুলকে করে শক্ত।
- মেহেদী গুঁড়া – মাথার ত্বকের ভেতর থেকে পুষ্টি যোগায় এবং চুলকে নারিশ করে।
- নিমপাতা গুঁড়া- এটি চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি খুশকি দূর করতে সাহায্য করে।
- রিঠা গুঁড়া – চুলের কোয়ালিটি ইমপ্রুভ করতে রিঠা দারুণ ভাবে কাজ করে।
- ব্রাহ্মী এবং ভ্রিংরাজ গুড়া – এটি চুল পড়া কমিয়ে আনে এবং চুলে একটি শাইনি লুক দেয়।
এই উপাদানগুলো হতে পারে চুলের কমন কিছু সমস্যার সহজ সমাধান। তবে এই উপাদানগুলো খুঁজতে যেয়ে আমাদের নানা সময় নানা বিপাকে পড়তে হয়। এখন মনে প্রশ্ন জাগে, কোথায় পাবো? প্রাইজ কেমন হবে? ভাল হবে না খারাপ? কিনে আনার পড়ে আবার তাকে প্রসেসিং করার ঝামেলা আরও কত কী! কেমন হয় যদি সবগুলো উপাদান একসাথেই প্রসেসিং অবস্থায় পাওয়া যায়? তাহলে আর কোনো ঝক্কি ঝামেলাই পোহাতে হলো না। রাজকন্যা হেয়ার মাস্কে আমরা সহজেই এই সবগুলো উপাদান একসাথে প্রসেসিং অবস্থায় পেয়ে যাব। এতে থাকা উপাদানগুলো শুকনো অবস্থায় গুঁড়া করে প্যাকেজিং করা হয়, যা একদম পিউর এবং কেমিক্যাল মুক্ত। তাই এই উপাদানগুলোর গুনাগুণও থাকে অক্ষুণ্ণ।
চুলের ড্যামেজ কমাতে কার্যকরী ২টি প্যাক-
হেয়ার ড্যামেজ রিপ্যায়ারে হেয়ার মাস্কের কার্যকারিতা এবং উপকারিতাগুলো তো জানলাম! চলুন এখন জেনে নেয়া যাক, এই হেয়ার প্যাক কীভাবে বানিয়ে ব্যবহার করলে আমরা ভাল ফলাফল পাব। চুলের ধরণ যেমনই হোক না কেন, নিচে দেয়া হেয়ার প্যাকগুলো বানিয়ে চুলে অ্যাপ্লাই করলে যে কেউ ভাল ফলাফল পাবেন। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক প্যাকগুলোর রেসিপি-
(১) একটি বাটিতে রাজকন্যা হেয়ার রিপ্যায়ার মাস্কে থাকা পাউডার নিয়ে নিন। এতে টকদই এবং অ্যালোভেরা জেল অ্যাড করে নিন। একসাথে সবগুলো উপাদান ভাল করে মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। এবার চুলে এই প্যাকটি ২০ থেকে ২৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। শুকিয়ে এলে ভাল করে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১-২ বার প্যাকটি লাগালে চুলের গোঁড়া হবে মজবুত। চুল পরাও অনেকটা কমে আসবে।
(২) রাজকন্যা হেয়ার রিপ্যায়ার মাস্কে থাকা পাউডার এর সাথে ডিমের সাদা অংশ, খাঁটি নারকেল তেল ও কয়েক ফোঁটা ক্যাস্টর অয়েল দিয়ে হেয়ার প্যাক তৈরি করুন। প্রয়োজনে কিছুটা পানি এড করতে পারেন। এই প্যাকটি হেয়ার গ্রোথের জন্য দারুণ কার্যকরী। চুলের ড্যামেজ রিপ্যায়ারে এই প্যাকটি খুবই ভাল কাজ করবে। সমস্ত চুলে এই হেয়ার প্যাকটি লাগিয়ে ৩০-৪৫ মিনিট রেখে দিন। তারপর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ১-২ বার লাগালে উপকার পাবেন। বেশি না! জাস্ট এক থেকে দুই মাস এই প্যাকগুলো থেকে আপনার পছন্দ মত প্যাক ব্যবহার করলে নিজেই পার্থক্য বুঝতে পারবেন! চুলের ধরণ যেমনই হোক এই প্যাকগুলো কিন্তু ব্যবহার করতে পারবেন যে কেউ। শুধু মেয়েরাই নয়! ছেলেরাও এভাবে প্যাক বানিয়ে চুলে লাগিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। সুন্দর চুল কিন্তু হুট করেই পাওয়া যায়না। এর জন্যে প্রয়োজন নিয়মিত প্রপার যত্নের।
রাজকন্যা একটি বাংলাদেশী অর্গানিক ব্র্যান্ড। রাজকন্যা হেয়ার রিপ্যায়ার মাস্ক ছাড়াও রয়েছে রাজকন্যার আমলা পাউডার, হেনা, হিবিসকাস পাউডার। এই প্রোডাক্টগুলোও আমার খুবই ভাল লাগে। আপনারা চাইলে সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ, যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত, সেখান থেকে কিনতে পারেন আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আজকে তাহলে এ পর্যন্তই।
ছবি- সাজগোজ
The post ড্যামেজ ফ্রি হেয়ার পেতে কোন হেয়ার মাস্কটি বেছে নিব? appeared first on Shajgoj.