পারফেক্ট মেকআপ লুক পাওয়ার জন্যে স্টেপ বাই স্টেপ ফলো করছেন সব নিয়ম কানুন, তারপরও যেন কোথায় কোন একটা কমতি থেকেই যাচ্ছে? যেকোনো প্রোগ্রাম বা কোথাও বের হওয়ার আগে আমরা সবাই চাই নিজেকে মনমতো সাজাতে। অনেকের জন্যে মেকআপ শুধু সাজগোজ বা দরকারই নয় বরং শখেরও একটি জায়গা। কিন্তু আমাদের মাঝে অনেকেই আছেন, যাদের এই মেকআপ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই! ভালো প্রোডাক্টস ইউজ করছেন, তবুও কেন লুকটি মন মতো হচ্ছে না?! প্রশ্ন যেন থেকেই যায়। এখন কথা হল, শুধু কি ভালো প্রোডাক্টস ব্যবহার করলেই হবে? তা কিন্তু না! ভালো প্রোডাক্টস ব্যবহার করার পাশাপাশি মেকআপ করার পূর্বে ত্বকেরও কিন্তু একটি প্রস্তুতির বিষয় থাকে যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও আমরা এড়িয়ে যাই। যেকোনো ত্বকে সুন্দর মেকআপ লুক ক্রিয়েট করার জন্যে ত্বককে তার জন্যে প্রস্তুত করে নিতে হবে সবার আগে। কিভাবে? মেকআপের আগে আপনার স্কিনকে তৈরি করবেন কিভাবে সেটা জেনে নেয়া যাক এখনি!
মেকআপের আগে আপনার স্কিনকে তৈরি করতে যা যা করনীয়
মুখ ভালো করে পরিষ্কার করে নিতে হবে
অপরিষ্কার ত্বকে কখনই মেকআপ ভালো করে বসবে না, তাই অবশ্যই মেকআপ করার আগে ফেইসটাকে ভালোভাবে ক্লিন করে নিতে হবে। যাদের স্কিনে ব্ল্যাক হ্যাডস বা হোয়াইট হ্যাডস এর প্রবলেম রয়েছে, তারা অবশ্যই চেষ্টা করবেন স্ক্রাব বা এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করে সার্কুলার মোশনে আস্তে আস্তে ঘষে স্কিনের ডেডসেলসগুলো পরিষ্কার করতে। যাদের তৈলাক্ত ত্বক, তাদের জন্যে এই ধাপটি আবশ্যক। যাদের নরমাল স্কিন, তারা ফেইসওয়াশ ব্যবহার করে স্কিন পরিষ্কার করে নিলেই হবে। যারা কমপ্লেইন করে থাকেন, আমাদের স্কিনে মেকআপ ঠিকমতো বসে না, তারা এই স্টেপটি মেনে চললে মুখে সহজেই মেকআপ সমানভাবে বসবে।
টোনার ব্যবহার করুন বা বরফ ম্যাসাজ দিয়ে নিন
আমাদের অনেকেরই ফেসিয়াল পোর দূর করা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করে স্কিন পরিষ্কার করার পর আমাদের মুখের পোরসগুলো প্রসারিত হয়ে পরে। আমাদের এই পোরসগুলোকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে মুলত কাজ করে থাকে টোনার। হাতের কাছে যদি টোনার না থাকে চিন্তার কোন কারণ নেই! বরফ দিয়েই আপনি টোনার এর কাজটি সেরে ফেলতে পারেন সহজেই। মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে, ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করার আগে, কিছুক্ষণ মুখে বরফ দিয়ে ম্যাসাজ করে নিন।
মুখে হাইড্রেটিং ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার ম্যাসাজ করে নিন
ফেইসওয়াশ বা এক্সফোলিয়েটর ব্যবহার করে মুখ পরিষ্কার করার পর আমাদের ত্বক অনেকটাই শুষ্ক হয়ে পরে। এই অবস্থায় সরাসরি কোন মেকআপ প্রোডাক্টস ব্যবহার করলে তা ঠিক মত বসবে না এবং উঠে উঠে আসবে। মেকআপের আগে অবশ্যই একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার বা হাইড্রেটিং ক্রিম দিয়ে মুখে কিছুক্ষণ ভালোভাবে ম্যাসেজ করে নিতে হবে। এতে করে যেমন লোমকূপের ভিতরে মেকআপ জমতে পারবে না, তেমনি আপনার স্কিনও থাকবে মসৃণ। বিশেষ করে যে সকল ময়েশ্চারাইজারে ভিটামিন সি রয়েছে, চেষ্টা করুন এমন ক্রিম বা ময়েশ্চারাইজার ইউজ করতে। যারা অভিযোগ করে থাকেন, আমার মেকআপ কেন লং লাস্টিং হচ্ছে না, তারা অবশ্যই এই স্টেপটি ফলো করতে ভুলবেন না।
ত্বকের সাথে মানানসই মেকআপ প্রোডাক্টস সিলেক্ট করুন
মার্কেটে অনেক ব্র্যান্ড এর অনেক ধরণের মেকআপ প্রোডাক্টস পাওয়া যায়। সব ধরণের প্রোডাক্টস যে সব ধরনের স্কিন টাইপের জন্যে মানানসই তা কিন্তু না! প্রোডাক্টস বাছাই করার সময় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে তা আপনার স্কিনের জন্যে ভালো হবে কি না। আপনার স্কিন টাইপ এবং স্কিনটোন সম্পর্কে আগে জেনে নিন। চেষ্টা করুন সে অনুযায়ী প্রোডাক্টস সিলেক্ট করতে। অনেকদিন হয়ে গেছে এমন প্রোডাক্টস ব্যবহার না করাই স্কিনের জন্যে ভালো। চেষ্টা করুন ভালো ব্র্যান্ড দেখে এবং একটু দাম দিয়ে মেকআপ প্রোডাক্টস কিনতে। এতে যেমন ত্বক নানাবিধ ক্ষতি থেকে রক্ষা পাবে, তেমনি আপনি খুব সহজেই পাবেন পারফেক্ট মেকআপ লুক।
নিখুঁত মেকআপের জন্য প্রাইমার মাস্ট
আমাদের সবারই কম বেশি জানা আছে যে, মেকআপ অনেকক্ষণ ধরে ঠিকঠাক রাখার জন্যে প্রাইমারের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু। বিশেষ করে যাদের তৈলাক্ত ত্বক তাদের জন্যে প্রাইমার ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই। মুখে সরাসরি ফাউন্ডেশন ব্যবহার করলে তা সহজেই কিছুক্ষণ পর তৈলাক্ত হয়ে যেতে পারে। প্রাইমার আপনার মুখ থেকে নির্গত এই বাড়তি তেলটুকু শুষে নেয় এবং মেকআপকে দীর্ঘস্থায়ী করতে সাহায্য করে।
কথায় আছে “আগে দর্শনধারী, তারপর গুন বিচারি”! মনের মত করে সাজতে আমরা সবাইই পছন্দ করি। নিজেকে পরিপাটি রাখলে, মনটাও যেন বেশ ভালো থাকে। কিন্তু কষ্ট করে, ধৈর্য ধরে সব কিছু মানার পরও যখন সাজটি মনমতো হয় না, তখন কিন্তু হিতে বিপরীত হয়। তাই মেকআপ করার আগে অবশ্যই এই সতর্কতাগুলো মেনে চলতে হবে। এতে আপনি খুব সহজেই পাবেন পারফেক্ট মেকআপ লুক, পাশাপাশি আপনার স্কিনও থাকবে সুন্দর।
ছবি- ইমেজেসবাজার
The post মেকআপের আগে আপনার স্কিনকে তৈরি করবেন কিভাবে? appeared first on Shajgoj.